ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 02/04/2021 - 17:31

ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি (Workers and Peasants Party) :-

কুতুবুদ্দিন আহমদ, কাজী নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক হেমন্ত সরকার, সামসুদ্দিন হোসেন প্রমুখ ব্যক্তির উদ্যোগে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর বাংলায় 'লেবার স্বরাজ পার্টি অব দা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস' নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে এই সংগঠনের নতুন নামকরণ হয় 'ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি '(Workers and Peasants Party বা WPP) । ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস শ্রমিক ও কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিলে ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে । মুজাফফর আহমদ, নলিনী গুপ্ত প্রমূখ কানপুর ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তির পর এই সংগঠনে যোগ দেন । পরবর্তীকালে গোপেন চক্রবর্তী, ধরণী গোস্বামীসহ অনুশীলন সমিতির কয়েকজন সদস্য এই সংগঠনে যোগদান করেন । প্রথমে এই সংগঠনের মুখপত্র ছিল 'সাপ্তাহিক লাঙ্গল' পত্রিকা, পরে এই মুখপত্রের নাম বদলে হয় 'গণবাণী' । বাংলার অনুকরণে একে একে বোম্বাই, পাঞ্জাব, যুক্তপ্রদেশ (বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ) প্রভৃতি বিভিন্ন প্রদেশে এই সংগঠন গড়ে ওঠে । ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবে 'কীর্তি' পত্রিকাকে কেন্দ্র করে এই দল গড়ে ওঠে । 'কীর্তি' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন 'গদর' দলের নেতা সন্তোখ সিং । ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে সোহন সিং জোশি -র নেতৃত্বে এই সংগঠন 'কীর্তি কিষাণ পার্টি' -তে পরিণত হয় । ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ই ফেব্রুযরি মারাঠি পত্রিকা 'ক্রান্তি' -এর উদ্যোগে এবং এস এস মিরাজকর, যোগলেকর, ঘাটে প্রমুখের প্রচেষ্টায় বোম্বাইতে, ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের মিরাটে পি সি জোশি -র নেতৃত্বে এই দল গঠিত হয় । সর্বভারতীয় দল গঠন করার উদ্দেশ্যে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে কলকাতায় বিভিন্ন প্রদেশের 'ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি'গুলির এক সর্বভারতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । সম্মেলনে ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি শ্রমিক, কৃষকদের স্বার্থরক্ষা, জমিদারি প্রথার অবসান এবং পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানায় । শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা হ্রাস, শ্রমিকশ্রেণিকে সু-সংগঠিত করা, জমিদারি প্রথার বিলোপসাধন, শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণির সর্বনিম্ন মজুরি হার নির্ধারণ প্রভৃতি 'ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি'র কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল । নদীয়াতে অনুষ্ঠিত সারা বাংলা কৃষক সম্মেলনে এই পার্টি কৃষকদের হয়ে প্রজাস্বত্বের স্থায়িত্ব, জমি হস্তান্তরকরণের অধিকার, মহাজন আরোপিত সুদের হার হ্রাস, পাট চাষিদের সন্তোষজনক মূল্যদান প্রভৃতি দাবি ঘোষণা করে । কৃষক ও শ্রমিক স্বার্থে কাজ করাই ছিল ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির মূল লক্ষ্য ।

*****

Comments

Related Items

শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

প্রশ্ন : শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

উঃ- ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৩৮ বছর বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় শ্রীরামপুর মিশনের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

প্রশ্ন : বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

প্রশ্ন : ১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

উঃ- ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় থেকেই এই বিদ্রোহের চরিত্র বা প্রকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ধারার ইতিহাসচর্চার নানা ধরনের গবেষণালব্দ মতামত পাওয়া যায় ।

কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

প্রশ্ন : কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?

প্রশ্ন : এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?