ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 09/27/2020 - 09:53

ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা :

ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা :- ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে । যেমন —

(i) তথ্যের সহজলভ্যতা :ইন্টারনেটের সাহায্যে কম পরিশ্রমে সহজে ইতিহাস-সহ দুনিয়ার যাবতীয় তথ্য জেনে নেওয়া যায় । অন্য কোনো মাধ্যম থেকে এরূপ সহজে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব নয় ।

(ii) সুলভ : বিভিন্ন বইপত্র কিনে গ্রন্থাগার বা গবেষণাগারে নিয়মিত যাতায়াত করে ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহ করা বিপুল অর্থব্যয় ও সময় সাপেক্ষ । ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে তা অপেক্ষাকৃত কম । খুব সামান্য অর্থ ও সময় ব্যয় করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব । এমনকি ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত কোনো সুবিশাল বইয়ের কোথায় প্রয়োজনীয় তথ্য বা শব্দগুলি আছে তাও সার্চ করে নিমেষেই বের করা যায় ।

(iii) দুর্লভ তথ্যপ্রাপ্তি : ইন্টারনেটের মাধ্যমে নানা ধরনের অনলাইন লাইব্রেরী থেকে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ কোনো বইয়ের কপি, অনলাইন আর্কাইভ থেকে আসল রিপোর্টের কপি প্রভৃতি পাওয়া সম্ভব ।

(iv) প্রশ্নোত্তর :তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মনে কোন প্রশ্ন জাগলে অনেক সময় ইন্টারনেটে সেই প্রশ্ন লিখেও সরাসরি উত্তর পাওয়া যায় ।

ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা:-

ইন্টারনেটের প্রবর্তন বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার । এটি ব্যবহার করে খুব সহজে এবং নিমেষে বিভিন্ন বিষয়ের মতো ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্যাদিও সংগ্রহ করা যায় । কিন্তু ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারের কিছু অসুবিধা রয়েছে । যেমন—

(i) নির্ভরযোগ্যতা : ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলির যথার্থতা বা নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা খুবই কঠিন । একই বিষয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পৃথক পৃথক তথ্য থাকায় পাঠক বা গবেষকদের বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ।

(ii) মনগড়া তথ্য : মুদ্রিত বইপত্রে যথার্থ লেখকদের সংখ্যাই বেশি । কিন্তু ইন্টারনেটে আজকাল যে কেউ নিজের মনগড়া ভুল তথ্য আপলোড করে থাকে ।

(iv) গবেষণার মান হ্রাস : ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন অসত্য বা অর্ধসত্য তথ্য ব্যবহার করতে গিয়ে পাঠক ও গবেষকগণ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ফলে গবেষণার গুণগত মান কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ।

(v) তথ্যের অসম্পূর্ণতা :- বহু ক্ষেত্রে ইন্টারনেটে বই বা গবেষণার অংশবিশেষ পাওয়া যায় । এর পূর্ণাঙ্গ কাজটি পাওয়া না যাওয়ায় পাঠক ও গবেষকগণ নানা সমস্যার সম্মুখীন হন ।

অধ্যাপিকা রোমিলা থাপার ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ে যথার্থই বলেছেন যে, সেখানে যেমন যথেষ্ট চিন্তাশীল যুক্তিপূর্ণ লেখা থাকে, আবার এমন অসংখ্য লেখা থাকে যাকে মুর্খামি ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না ।

****

Comments

Related Items

শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

প্রশ্ন : শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

উঃ- ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৩৮ বছর বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় শ্রীরামপুর মিশনের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

প্রশ্ন : বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

প্রশ্ন : ১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

উঃ- ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় থেকেই এই বিদ্রোহের চরিত্র বা প্রকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ধারার ইতিহাসচর্চার নানা ধরনের গবেষণালব্দ মতামত পাওয়া যায় ।

কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

প্রশ্ন : কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?

প্রশ্ন : এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?