আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 21:24

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা (India's role in World politics) :

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীতে শক্তির ভারসাম্য ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি থেকে সরে গিয়ে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার অনুকূলে চলে যায় । দুটি বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের আবির্ভাবে দুটি নতুন শক্তিজোট তৈরি হয়, যার এক দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দিকে সোভিয়েত রাশিয়া অবস্থান করে । ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলির কিছু কিছু দেশ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও কিছু কিছু দেশ সোভিয়েত রাশিয়ার পক্ষ অবলম্বন করলে পৃথিবী দুটি শিবিরে ভাগ হয়ে যায় । একটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী দেশ, অন্যটি সোভিয়েত রাশিয়া ও তার মিত্র দেশ । এর মধ্যে এশিয়া, আফ্রিকার কিছু দেশ নিরপেক্ষ অবস্থান নেয় এবং জোট নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করে ।

১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ার ভাঙ্গনের পর পৃথিবীতে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হয় । বিশ্বের একমাত্র শক্তিধর রাষ্ট্র হল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র । তাতে নির্জোট আন্দোলনের কোনো ক্ষতি হয় নি । বরং এই আন্দোলন উত্তরোত্তর শক্তি সংগ্রহ করেছে এবং ভারত এ ক্ষেত্রে সদর্থক ভূমিকা পালন করেছে । ভারত তিনবার প্রতিবেশি দেশগুলির সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে । একটি ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে চিন -এর সঙ্গে, ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তানের সঙ্গে এবং ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় পাকিস্তানের সঙ্গে । এই সব ঘটনার পরও নির্জোট আন্দোলন সংগঠনে ভারতের ভূমিকা হ্রাস পায় নি । যুদ্ধ সত্ত্বেও ভারতের শান্তি প্রক্রিয়া বিশ্ব রাষ্ট্রগোষ্ঠী কর্তৃক সমর্থিত ও প্রশংসিত হয়েছে । বিগত কারগিল যুদ্ধেও ভারতের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে । বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি নিয়ে গঠিত সার্ক সম্মেলনও ভারতের নির্জোট আন্দোলনের একটি ফলশ্রুতি । অতি সম্প্রতি সংঘটিত আফগান যুদ্ধ কিংবা উপসাগরীয় যুদ্ধেও ভারতের নেতৃত্বে বিশ্বের দেশগুলি একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে । ভারত সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নতিশীল দেশগুলি নিয়েই তৃতীয় বিশ্ব গঠিত । আফগান যুদ্ধে ভারত পরোক্ষ সমর্থন জানালেও ইরাক যুদ্ধে আমেরিকার চাপ সত্ত্বেও ভারত সমর্থন জানায় নি । ইরাকের ক্ষেত্রে ভারতের নিজস্ব বিদেশ নীতি আমেরিকা তথা বিশ্বের অপরাপর শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির সমীহ আদায় করেছে । এক্ষেত্রে একদিকে যেমন ভারতীয় বিদেশ নীতির সার্থকতা প্রমাণিত হয়েছে, তেমনি ঘোষিত হয়েছে জোট নিরপেক্ষ নীতির জয় । নির্জোট আন্দোলন আজ নিছক তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির এক আন্দোলন নয়, এটি একটি সংগঠিত শক্তি, যার নেতৃত্বে আছে ভারত এবং সহযোগিতায় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি ।

*****

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।