শিলায় মরিচা পড়ে কেন ও শিলার জারণ কীভাবে ঘটে এবং শিলার আবহবিকার কীভাবে ঘটে ?

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 12/27/2021 - 15:17

প্রশ্ন:- শিলায় মরিচা পড়ে কেনশিলার জারণ কীভাবে ঘটে এবং শিলার আবহবিকার কীভাবে ঘটে ?

শিলায় মরিচা পড়ে কেন ? শিলায় মরিচা পড়া হল রাসায়নিক আবহবিকারের অন্যতম উদাহরণ । শিলা গঠনকারী লৌহযুক্ত খনিজের সঙ্গে বায়ুমন্ডলের অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়া হল শিলায় মরিচা পড়ার প্রধান কারণ । এই প্রক্রিয়ায় শিলার মূল লৌহ খনিজ 'ফেরাস অক্সাইড’ জারিত হয়ে ‘ফেরিক অক্সাইডে পরিণত হয়, ফলে শিলার ওপর বাদামি রঙের মরিচার আস্তরণ পড়ে ।

শিলার জারণ কীভাবে ঘটে ? লৌহমিশ্রিত খনিজের সঙ্গে অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে শিলার জারণ ঘটে । জারণের ফলে লৌহমিশ্রিত শিলার মূল খনিজ ফেরাস অক্সাইড ফেরিক অক্সাইডে [tex](2Fe_2O_33H_2O)[/tex]পরিণত হয়ে লিমোনাইটের সৃষ্টি হয় ।

যথা— [tex]4FeO + 3H_2O + O_2 = 2Fe_2O_33H_2O[/tex] 

অর্থাৎ  লৌহ মিশ্রিত শিলার মূল খনিজ ফেরাস অক্সাইড + জল + অক্সিজেন = ফেরিক অক্সাইড বা লিমোনাইট

শিলার আবহবিকার কীভাবে ঘটে ?

(১) আবহবিকার:- প্রচন্ড শৈত্য, গ্রীষ্মের দাবদাহ কিংবা দিন ও রাতের উষ্ণতার পার্থক্যের ফলে ভূপৃষ্ঠের শিলার ক্রমাগত সংকোচন ও প্রসারণ হয় এবং এর ফলে শিলাত্বকে ফাটল ধরে এবং শিলার ওপরের অংশ ক্রমশ চূর্ণবিচূর্ণ হতে থাকে । কালক্রমে বিভিন্ন ধরনের জৈবিক, রাসায়নিক এবং জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চূর্ণবিচূর্ণ উপাদানগুলি বিশ্লিষ্ট ও স্তরীভূত হয়ে মাটির সৃষ্টি করে ।

(২) ক্ষয়ীভবন:-  বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ ইত্যাদি নানান প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে কিংবা আবহবিকারের জন্য ভূত্বকের উপরিভাগ ক্রমশ ক্ষয় পেয়ে মাটির সৃষ্টি করে । এই প্রক্রিয়াকে ক্ষয়ীভবন বলে ।

(৩) নগ্নীভবন:- বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা ভূত্বকের উপরিভাগ চূর্ণবিচূর্ণ ও ক্ষয়প্রাপ্ত হলে শিলার ওপরের অংশ আলগা হয়ে যাওয়ায় ঠিক তার নীচের স্তরটি ক্রমশ নগ্ন হয়ে পড়ে, এই প্রক্রিয়াকে নগ্নীভবন বলে । ক্ষয়প্রাপ্ত অংশ পরে মাটির রূপ নেয় ।

*****

 

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।