ভরা জোয়ার ও মরা জোয়ার (Spring Tides and Neap Tides)

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 10/23/2021 - 20:17

ভরা কোটাল বা ভরা জোয়ার (Spring Tides) : পৃথিবীর সব জায়গায় সব দিন জোয়ারের পরিমাণ একই থাকে না । তিথি অনুসারে জোয়ারভাটা বাড়ে ও কমে । পৃথিবীর ওপর সূর্যের আকর্ষণ শক্তি চাঁদের আকর্ষণ শক্তির প্রায় অর্ধেক হলেও ভূপৃষ্ঠে জোয়ার ভাটা সৃষ্টিতে সূর্যের প্রভাবও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করলে চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে সমুদ্রে যে প্রবল জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকে ভরা কোটাল বা ভরা জোয়ার বলে ।

পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবী, সূর্য ও চন্দ্রের মাঝখানে একই সরলরেখায় অবস্থান করে । এই দিনে চাঁদের আকর্ষণে ভূপৃষ্ঠের যে স্থানে মুখ্য জোয়ার হয়, একই স্থানে তখন সূর্যের আকর্ষণে গৌণ জোয়ারের সৃষ্টি হয় । এর প্রতিপাদস্থানে সেই সময় মুখ্য সৌর জোয়ার ও গৌণ চান্দ্র জোয়ার হয় । চাঁদ ও সূর্যের এরূপ অবস্থানের ফলে পূর্ণিমার দিন উক্ত দুই স্থানেই জোয়ারের বেগ প্রবল হয় । একে পূর্ণিমা তিথির ভরা কোটাল বলে । আবার অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই দিকে সূর্য ও চন্দ্র পৃথিবীর সঙ্গে একই সরলরেখায় অবস্থান করে । ফলে চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণ শক্তি একই দিকে ও একই সঙ্গে কার্যকর হয় । এই দিনে উভয়ের মিলিত আকর্ষণে পৃথিবীপৃষ্ঠে জোয়ারের বেগ অত্যন্ত প্রবল হয় । একে অমাবস্যা তিথির ভরা কোটাল বলে । তবে অমাবস্যা তিথিতে ভরা কোটালের বেগ সর্বাধিক হয় । প্রতি মাসে দুবার করে ভরা জোয়ার সংঘটিত হয় ।

মরা জোয়ার (Neap Tide) : সূর্যের আকর্ষণ শক্তি চন্দ্রের আকর্ষণ শক্তির প্রায় অর্ধেক । কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে, সূর্য ও চন্দ্র পৃথিবীর সঙ্গে একই সরলরেখায় না থেকে সমকোণে অবস্থান করে । পৃথিবীর যে স্থানটি চন্দ্রের সবচেয়ে কাছে থাকে, সেই স্থানকে চন্দ্র যখন আকর্ষণ করে, তখন ভূপৃষ্ঠের যে স্থানটি সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকে, সূর্যও সেই স্থনটিকে আকর্ষণ করে । কাজেই ওই অবস্থায় চন্দ্রের প্রভাবে যেখানে জোয়ার হয়, তার প্রায় সমকোণী স্থানে সূর্যের প্রভাবেও জোয়ার হয় । এর ফলে চন্দ্রের আকর্ষণে যে দুই স্থানের জল ফুলে উঠতে চেষ্টা করে, সূর্যের আকর্ষণ সেই দুই স্থানের জলের উচ্চতা কমাতে চেষ্টা করে । এর ফলে জোয়ারের তীব্রতা কমে যায় এবং ভাটার ফলে জলের অবনমনও কিছুটা কমে যায়, ফলে জোয়ার এবং ভাটার জলতলের পার্থক্য অস্বাভাবিক হ্রাস পায় । এই রকম জোয়ারকে মরা জোয়ার বা মরা কোটাল বলে । সাধারণত প্রতিমাসে দু-বার মরা জোয়ার দেখা যায় ।

*****

Comments

Related Items

ওজোন স্তর (Ozone Layer)

ওজোন স্তর (Ozone Layer) : বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তরে অর্থাৎ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের মধ্যে ২০ - ৩৫ কিমি.

ম্যাগনেটোস্ফিয়ার (Magnetosphere)

ম্যাগনেটোস্ফিয়ার (Magnetosphere) : এক্সোস্ফিয়ার স্তরের ওপরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বেষ্টনকারী চৌম্বকক্ষেত্রটি হল ম্যাগনেটোস্ফিয়ার স্তর । এটি বায়ুমণ্ডলের সর্বশেষ স্তর । এক্সোস্ফিয়ার স্তরের ওপর ১,৫০০ কিমি.

এক্সোস্ফিয়ার (Exosphere)

এক্সোস্ফিয়ার (Exosphere) : এক্সোস্ফিয়ার হল বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে দূরবর্তী স্তর । এই স্তরটি আয়নোস্ফিয়ারের ওপরে প্রায় ৭০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ।

আয়োনোস্ফিয়ার বা থার্মোস্ফিয়ার (Ionosphere or Thermosphere)

আয়োনোস্ফিয়ার (Ionosphere) : মেসোস্ফিয়ার স্তরের শেষ সীমা হল মেসোপজ । আর এই মেসোপজের ওপরে প্রায় ৫০০ কিমি.

মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere)

মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere) : স্ট্র্যাটোপজের ওপর থেকে বায়ুমণ্ডলের যতদূর উচ্চতা পর্যন্ত উষ্ণতা কমতে থাকে, সেই অংশটিকে মেসোস্ফিয়ার বলে । মেসোস্ফিয়ার স্তরটি স্ট্র্যাটোপজের ওপরে স্ট্র্যাটেস্ফিয়ার ও আয়নোস্ফিয়ারের মধ্যে ৮০ কিমি.