ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি কাকে বলে ও এর বৈশিষ্ট্যগুলি বর্ণনা কর এবং কীভাবে সৃষ্টি হয় ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 12/26/2021 - 10:17

প্রশ্ন:- ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি কাকে বলে ও এর বৈশিষ্ট্যগুলি বর্ণনা কর এবং কীভাবে সৃষ্টি হয় ?

উত্তর : নদীপ্রবাহ, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ, বৃষ্টির জল প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা কোনো প্রাচীন ও বিস্তীর্ণ মালভূমি ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে এক বা একাধিক নদী ও তাদের শাখাপ্রশাখা ধীরে ধীরে মালভূমিকে ছোটো ছোটো অংশে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে । এই ভাবে কোনো বিস্তীর্ণ মালভূমি অঞ্চল সংকীর্ণ নদী উপত্যকার মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হলে তাকে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলা হয় ।

বৈশিষ্ট্য:-

১) ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি অঞ্চলগুলি কঠিন ও কোমল- এই দুই ধরনের শিলাতেই গঠিত হয়ে থাকে;

২) হিমবাহ, নদী, ঝড়বৃষ্টি, বাতাস প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয় পেয়ে কোমল শিলা অপসারিত হলে কঠিন শিলা গঠিত স্থানগুলি নাতিউচ্চ পাহাড় বা টিলার মতো দাঁড়িয়ে থাকে;

৩) ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি সাধারণত বিভিন্ন নদীউপত্যকা দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়;

৪) ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি থেকে সৃষ্টি হওয়া বেশিরভাগ পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় একই রকমের হয়;

৫) এই ধরনের মালভূমি বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অবশেষে তা বহু পাহাড় ও উপত্যকার সমষ্টিতে পরিণত হয়;

৬) ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি মোটামুটি সমতল কিন্তু মৃদু ঢাল যুক্ত হয় ।

উদাহরণ:  ভারতের পূর্বঘাট ও পশ্চিম ঘাট পার্বত্য অঞ্চলে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি দেখা যায় । যেমন — (১) পূর্বভারতের ছোটোনাগপুর মালভূমি,

(২) মধ্যভারতের অন্তর্গত বুন্দেলখন্ড ও বাঘেলখন্ড মালভূমি এবং (৩) দক্ষিন ভারতের কর্ণাটক মালভূমির মালনাদ অঞ্চল ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির নিদর্শন ।

নদীপ্রবাহ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টির জল প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা কোনো প্রাচীন ও বিস্তীর্ণ মালভূমি অঞ্চল ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে এক বা একাধিক নদী ও তাদের শাখাপ্রশাখা ধীরে ধীরে ওই ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমি অঞ্চলকে ছোটো ছোটো অংশে বিচ্ছিন্ন করে ফেললে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির সৃষ্টি হয় । এই ভাবে কোনো বিস্তীর্ণ মালভূমি অঞ্চল সংকীর্ণ নদী উপত্যকার দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির সৃষ্টি করে ।

উদাহরণ :

১) কর্ণাটক মালভূমির মালনাদ অঞ্চলটি কাবেরী ও তার বিভিন্ন উপনদী যেমন —সিমসা, হিমবতী, ভবানী প্রভৃতির দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির সৃষ্টি করেছে ।

২) ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চলটি দামোদর, সুবর্ণরেখা, বরাকর, কোয়েল প্রভৃতি নদীর সংকীর্ণ উপত্যকার দ্বারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির সৃষ্টি করেছে ।

*****

Comments

Related Items

ভারতের জলসম্পদ (Water resources of India)

ভারতের জলসম্পদের পরিচয় (Water resources of India) : পৃথিবীর মোট উপলব্ধ জলের পরিমাণ ১৬০ কোটি ঘন কিলোমিটার । এই জলের ৯৭% সঞ্চিত রয়েছে সাগরে লবণাক্ত জলরূপে এবং ৩% স্বাদুজল, নদীনালা, ভৌমজল ও বরফরূপে অবস্থান করছে । পৃথিবীর মোট জলভাগ ক্ষেত্রের আয়তনের মাত্র

তেজী বা ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় কেন ?

প্রশ্ন : তেজী বা ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় কেন ?

ভরা কোটাল ও মরা কোটালের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর ।

প্রশ্ন:- ভরা কোটাল ও মরা কোটালের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর

সিজিগি কাকে বলে ? এবং অ্যাপোজি ও পেরিজি কাকে বলে ?

প্রশ্ন:-  সিজিগি কাকে বলে ? এবং অ্যাপোজি ও পেরিজি কাকে বলে ?

নিউফাউন্ডল্যান্ড ও জাপানের কাছে বছরের প্রায় সবসময় কুয়াশা জমে থাকে কেন ?

প্রশ্ন : নিউফাউন্ডল্যান্ড ও জাপানের কাছে বছরের প্রায় সবসময় কুয়াশা জমে থাকে কেন ?