বায়ুর উষ্ণতার পরিমাপ (Measurement of Heat)

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 08/05/2021 - 22:41

বায়ুর উষ্ণতার পরিমাপ (Measurement of Heat) : কোনো স্থানের বায়ু কতটা উষ্ণ বা শীতল তা থার্মোমিটারের সাহায্যে পরিমাপ করা হয় । সাধারণ থার্মোমিটারে দিনের সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন উষ্ণতা পরিমাপের ক্ষেত্রে নানা রকম অসুবিধা রয়েছে । সেজন্য বিশেষ ধরনের থার্মোমিটারের প্রয়োজন হয় ।

সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার (Six's Maximum and Minimum Thermometer) : বিজ্ঞানী জেমস সিক্স ১৭৮২ সালে এই তাপমান যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেন । এই যন্ত্রের বা থার্মোমিটারের সাহায্যে ২৪ ঘন্টা বা ১ দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতা সহজেই পরিমাপ করে নথিভুক্ত করা যায় । আবার এই নথিভুক্ত উষ্ণতার সাহায্যে দৈনিক গড় উষ্ণতা, মাসিক গড় উষ্ণতা এবং বার্ষিক গড় উষ্ণতা  নিরূপণ করাও সম্ভব হয় ।

সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটারে উষ্ণতার পরিমাপ : এই থার্মোমিটারটি দেখতে অনেকটা ইংরেজি অক্ষর U -এর মতো এবং এটি একটি ফ্রেমের মধ্যে খাড়া ভাবে আটকে রাখা হয় । এই থার্মোমিটারের ডানদিকে গরিষ্ঠ বাহুর সূচকের নিম্নপ্রান্তের অবস্থান দেখে দিনের সর্বোচ্চ উষ্ণতা এবং বামদিকে লঘিষ্ঠ বাহুর সূচকের নিম্নপ্রান্তের অবস্থান দেখে দিনের সর্বনিম্ন উষ্ণতা পরিমাপ করা হয় ।

সর্বোচ্চ উষ্ণতা ও সর্বনিম্ন উষ্ণতা : সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটারের সাহায্যে কোন স্থানের একদিনের অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতা পরিমাপ করা যায় । আবার এই থার্মোমিটারের সাহায্যে একদিনের প্রতি ঘন্টার সর্বোচ্চ উষ্ণতা এবং সর্বনিম্ন উষ্ণতাও পরিমাপ করা যায় । প্রতি ঘন্টার সর্বোচ্চ উষ্ণতার যোগফলকে ২৪ দিয়ে ভাগ করে দৈনিক সর্বোচ্চ উষ্ণতা এবং সর্বনিম্ন উষ্ণতার যোগফলকে ২৪ দিয়ে ভাগ করে দৈনিক সর্বনিম্ন উষ্ণতা নির্ণয় করা হয় । প্রতিদিনের সর্বোচ্চ উষ্ণতার ৩০ দিনের গড় করে মাসিক সর্বোচ্চ উষ্ণতা এবং সর্বনিম্ন উষ্ণতার গড় করে মাসিক সর্বনিম্ন উষ্ণতার পরিমাপ করা যায় । আবার প্রতি মাসের সর্বোচ্চ উষ্ণতার ১২ মাসের গড় করে বার্ষিক সর্বোচ্চ উষ্ণতা এবং মাসিক সর্বনিম্ন উষ্ণতার গড় করে বার্ষিক সর্বনিম্ন উষ্ণতার পরিমাপ করা হয়ে থাকে ।

গড় উষ্ণতা : কোনো স্থানের একদিনের দৈনিক সর্বোচ্চ উষ্ণতা এবং দৈনিক সর্বনিম্ন উষ্ণতার যোগফলকে ২ দিয়ে ভাগ করে দৈনিক গড় উষ্ণতা পরিমাপ করা হয় । আবার প্রতিদিনের দৈনিক গড় উষ্ণতার ৩০ দিন বা একমাসের যোগফলকে ৩০ দিয়ে ভাগ করে মাসিক গড় উষ্ণতা নির্ণয় করা হয় । এভাবে প্রতি মাসের মাসিক গড় উষ্ণতার ১২ মাস বা এক বছরের যোগফলকে ১২ দিয়ে ভাগ করে বার্ষিক গড় উষ্ণতা পরিমাপ করা হয় ।

উষ্ণতার প্রসর : দৈনিক সর্বোচ্চ উষ্ণতা ও দৈনিক সর্বনিম্ন উষ্ণতার বিয়োগফলকে দৈনিক উষ্ণতার প্রসর বলে । একইভাবে মাসিক সর্বোচ্চ উষ্ণতা এবং মাসিক সর্বনিম্ন উষ্ণতার বিয়োগফলকে মাসিক উষ্ণতার প্রসর এবং বার্ষিক সর্বোচ্চ উষ্ণতা ও বার্ষিক সর্বনিম্ন উষ্ণতার বিয়োগফলের সাহায্যে বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর পরিমাপ করা হয় ।

****

 

Comments

Related Items

ওয়াদি (Wadi)

ওয়াদি (Wadi) : বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে মরুভূমি অঞ্চলে নানা রকম ভূমিরূপ গঠিত হয়, ওয়াদি হল এরূপ একটি ভূমিরূপ । মরুভূমি অঞ্চলে মাঝে মাঝে হঠাৎ করে অল্প সময়ের মধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে । এরকম বৃষ্টিপাতে এখানে বন্যার সৃষ্টি হয় । বন্যা

বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ

বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ (Landform formed by combined action of wind and running water) : মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে নানা ধরনের ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় । যেমন—

লোয়েস সমভূমি (Loess Plain)

লোয়েস সমভূমি (Loess Plain) : বায়ুপ্রবাহের বহন ও সঞ্চয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, লোয়েস সমভূমি হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । জার্মান শব্দ লোয়েস কথার অর্থ 'সূক্ষ্ম পলি' । মরু অঞ্চলে বায়ুতাড়িত হালকা হলুদ রঙের অতি সূক্ষ্ম

বালিয়াড়ি (Sand Dunes)

বালিয়াড়ি (Sand Dunes) : বায়ুপ্রবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে নানা রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, বালিয়াড়ি হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । মরু অঞ্চলে বালির পাহাড়গুলিকে বালিয়াড়ি বলে । বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যে

বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ

বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ (Landforms Produced by Wind Deposition) : বায়ুপ্রবাহ (i) থিতানো প্রক্রিয়া, (ii) উপলেপন প্রক্রিয়া ও (iii) অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ (Deposition) কার্য করে থাকে । বায়ুবাহিত বালিকণা কোনো স্থানে থিতিয়ে