বায়ুর উষ্ণতা (Air Temperature)

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 08/05/2021 - 09:24

বায়ুর উষ্ণতা (Air Temperature) : বায়ুর উষ্ণতা বলতে বায়ুর তাপমাত্রাকে বোঝায় । বায়ুর উষ্ণ এবং শীতল অবস্থার তুলনামূলক পরিমাপকেই বায়ুর উষ্ণতা বলা হয় । সূর্যকিরণ হল বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার প্রধান উৎস । সূর্যের তাপ গ্রহণ বা তার প্রতিফলন ঘটিয়ে বায়ু উষ্ণ বা শীতল হয়ে ওঠে ।

সূর্য রশ্মির তাপীয় ফল বা ইনসোলেশন (Insolation) : সূর্যের বহিঃপৃষ্ঠের উষ্ণতা প্রায় ৬০০০° সে. । সূর্যপৃষ্ঠ থেকে যে তাপশক্তি বিকিরিত হয় তার প্রায় ২০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ মাত্র ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে আলোক তরঙ্গের গতিবেগে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায় । আলোক তরঙ্গের গতিবেগ হল প্রতি সেকেণ্ডে ২,৯৭,০০০ কিমি. । সূর্য থেকে পৃথিবীতে আগত এই তাপশক্তিকে সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বা ইনসোলেশন বলে । আর এই তাপশক্তিই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে ।

ইনসোলেশন বন্টন : সূর্য থেকে পৃথিবীতে যে তাপশক্তির এসে পৌঁছয় তার শতকরা ১৯ ভাগ বায়ুমণ্ডল প্রত্যক্ষভাবে শোষণ করে নেয় এবং শতকরা ৪৭ ভাগ ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছায় । অর্থাৎ সূর্য থেকে পৃথিবীতে আগত তাপশক্তির শতকরা ৬৬ ভাগ তাপশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে তোলে । একে কার্যকরী সৌর বিকিরণ (Effective Solar Radiation) বলে । ইনসোলেশনের অবশিষ্টাংশ অর্থাৎ শতকরা ৩৪ ভাগ তাপশক্তির ২৫ ভাগ মেঘপুঞ্জ থেকে, ৭ ভাগ বায়ুমণ্ডল থেকে এবং ২ ভাগ ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায় । এই ৩৪ ভাগ সূর্যশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না । একে পৃথিবীর অ্যালবেডো (Albedo) বলে ।

পৃথিবীর উত্তাপের সমতা : ইনসোলেশনের দ্বারা পৃথিবীতে যে সৌরশক্তি এসে পৌঁছয় এবং পৃথিবী থেকে বিকিরিত সৌরশক্তির মধ্যে যে প্রকৃত ভারসাম্য রক্ষিত হয়, তাকে পৃথিবীর উত্তাপের সমতা বলে । সূর্য থেকে আগত সৌর বিকিরণের শতকরা ৩৪ ভাগ তাপশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত না করেই মহাশূন্যে ফিরে যায় । বাকি শতকরা ৬৬ ভাগ সৌরশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে থাকে । ঠিক সমপরিমাণ তাপশক্তি আবার পৃথিবী থেকে বৃহৎ তরঙ্গরূপে বিকিরিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায় । ফলে পৃথিবীর গড় বার্ষিক উত্তাপের তেমন হ্রাস-বৃদ্ধি হয় না ও পৃথিবীর উত্তাপের সমতা বজায় থাকে ।

*****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত