জোয়ার ভাটার ফলাফল (Effect of Tides)

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 10/23/2021 - 20:53

জোয়ার ভাটার ফলাফল (Effect of Tides) : বিভিন্ন ক্ষেত্রে জোয়ার ভাটার যথেষ্ট প্রভাব লক্ষ্য করা যায় । সমুদ্র উপকূলে ও উপকুলের কাছে নদনদীতে জোয়ার ভাটার প্রভাব বেশি । জোয়ার ভাটার নিম্নলিখিত ফলাফল গুলি হল —

জোয়ারভাটার সুফল (Advantage) :

(i) জোয়ার ভাটার মাধ্যমে স্থলভাগের আবর্জনা নদীর মধ্যে দিয়ে সমুদ্রে পড়ে । ফলে ভাটার টানে নদী আবর্জনা ও পলিমুক্ত হয়  ।

(ii) জোয়ারের ফলে নদী মোহানায় পলি সঞ্চিত হতে পারে না ।

(iii) জোয়ারের ফলে নদীর জল নির্মল থাকে । জোয়ার ভাটার ফলে আবর্জনা নিষ্কাশিত হয়ে নদীর জল পরিষ্কার হয় ।

(iv) বর্তমানে জোয়ারের স্রোতকে কাজে লাগিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ।

(v) জোয়ারের জল নদী-খাতে ঢুকে এর বিস্তার ও গভীরতা বৃদ্ধি করে, ফলে বড় বড় সমুদ্রগামী জাহাজ দেশের অভ্যন্তরে নদী-বন্দরে ঢুকতে পারে ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয় । যেমন জোয়ারের সময় হুগলী নদীর মধ্য দিয়ে বড় বড় জাহাজ কলকাতা বন্দরে আসে ।

(vi) জোয়ারের জলের টানে নদী-মোহনায় সঞ্চিত পলিমাটি সমুদ্রের দিকে চলে যায় ও নদী মোহনা পলিমুক্ত হয় এবং বদ্বীপ গঠনে বাধা পড়ে ।

কুফল (Disadvantage) :

(i) জোয়ারের জল অনেক সময় নদী মোহনার পলি তুলে নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নদীগর্ভে জমা করে নদীর গভীরতা কমিয়ে ফেলে  ।

(ii) জোয়ারের ফলে নদীর মিষ্টি জল লবণাক্ত হয়ে যাওয়ায় জলসেচ ও পানের অযোগ্য হয়ে ওঠে ।

(iii) প্রবল জোয়ারের ফলে নদীতে যে জলস্ফীতি ঘটে তার ফলে অনেক সময় নদী তীরের চাষ-আবাদ ও বাড়ি-ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয় ।

(iv) প্রবল জোয়ারের ফলে নদীতে বান আসলে তার ফলে নৌকাডুবি এবং জীবন হানির সম্ভাবনা থাকে ।

*****

Comments

Related Items

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব (Effects of Global Warming)

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব (Effects of Global Warming) : মানুষের বিভিন্ন প্রকার অবিবেচনাপ্রসূত ক্রিয়াকলাপ, যেমন— অত্যধিক পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদন ও অরণ্যবিনাশ, কৃষিকাজে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণে নাইট্রোজেন

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা

বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসের ভূমিকা (Role of Green House Gas) : কার্বন ডাই-অক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরো কার্বন, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন, কার্বন মনোক্সাইড, ওজোন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির দ্বারা বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধিই হল বিশ্ব উষ্ণায়নের

বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming)

বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming) : পৃথিবীর স্বাভাবিক উষ্ণতা অপেক্ষা উষ্ণতার ক্রমবর্ধমান ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বিজ্ঞানীরা বিশ্ব উষ্ণায়ন নামে অভিহিত করেন । সূর্যরশ্মি ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে বায়ুমণ্ডল ভেদ করে এসে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠ ও বায়ুমন্ডলকে উত্

পৃথিবীর উষ্ণতার অনুভূমিক বন্টন

পৃথিবীর উষ্ণতার অনুভূমিক বন্টন : নিরক্ষরেখার (0° অক্ষাংশ ) নিকটবর্তী অঞ্চলে সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বা ইনসোলেশনের পরিমাণ সর্বাপেক্ষা বেশি হওয়ার জন্য এই অঞ্চলে গড় উষ্ণতা হয় ২৫° সে.

সমোষ্ণরেখা (Isotherm line)

সমোষ্ণরেখা (Isotherm line) : ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র তাপমাত্রা সমান নয় । ভূপৃষ্ঠের যে সকল স্থানের গড় উষ্ণতা সমান বা একই রকম থাকে, মানচিত্রে সেই সকল স্থানগুলিকে পরস্পর যোগ করে যে কাল্পনিক রেখা টানা হয়, তাকে সমোষ্ণরেখা বলে । অর্থাৎ, যে কাল্পনিক রেখা দিয়ে বছরে