উচ্চতার তারতম্যে পৃথিবীর উষ্ণতার তারতম্যের কারণ ব্যাখ্যা কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 07/22/2012 - 18:54

প্রশ্ন : উচ্চতার তারতম্যে পৃথিবীর উষ্ণতার তারতম্যের কারণ ব্যাখ্যা কর

ভূপৃষ্ঠের সব স্থানে এবং সব সময়ে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা একই রকম থাকে না । উচ্চতা ভেদে পৃথিবীপৃষ্ঠে উষ্ণতার তারতম্য ঘটে । বায়ুমণ্ডল সূর্যকিরণের দ্বারা সরাসরিভাবে উত্তপ্ত হয় না । সূর্য থেকে বিকিরণ পদ্ধতিতে আগত তাপশক্তি বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে এলেও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত না করে প্রথমে কঠিন ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে । পরে ওই উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তর উত্তপ্ত হয় এবং ওই তাপ ধীরে ধীরে ওপরের বায়ুস্তরে সঞ্চারিত হয় । তাই নীচের বায়ুস্তরের উষ্ণতা বেশি হয় এবং যত ওপরে ওঠা যায় বায়ুর উষ্ণতা ততই কমতে থাকে । সাধারণত প্রতি ১ কিমি উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ৬.৪ সেলসিয়াস হারে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা কমতে থাকে । একে ‘উষ্ণতা হ্রাসের গড়’ বলে ।

উচ্চতার হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাস-বৃদ্ধি নিম্নলিখিত কয়েকটি কারণের জন্য ঘটে থাকে, যেমন:—

(ক) সূর্যকিরণ বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে আসে, কিন্তু সূর্যকিরণের উত্তাপ সরাসরি গ্রহণ করার ক্ষমতা বায়ুর নেই । সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে পড়ে ভূপৃষ্ঠকে প্রথমে উত্তপ্ত করে, পরে সেই উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করলে বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নীচের স্তর সেই বিকীর্ণ তাপ সবচেয়ে বেশি পরিমাণ লাভ করে । এই জন্য ভুপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরের তুলনায় উপরের স্তরের বায়ুর উষ্ণতা কম হয় । শীতল বায়ূর সংস্পর্শে বেশি উচ্চতাযুক্ত স্থান শীতল হয় ।

(খ) বেশি উচ্চতাযুক্ত স্থানের বায়ু অপেক্ষাকৃত হালকা হওয়ায় তা তাড়াতাড়ি তাপ বিকিরণ করে শীতল হয় । শীতল বায়ুর সংস্পর্শে উচ্চস্থানের উষ্ণতা কম হয় ।

(গ) বেশি উচ্চতা যুক্ত স্থানের বায়ুতে ধুলিকণা কম থাকায় সেখানকার বায়ুস্থরের তাপগ্রহণ করার শক্তি কম হয়, ফলে উচ্চস্থানের তাপমাত্রাও কম হয় ।

*****

Related Items

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents) : সমুদ্রস্রোত বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে । এই কারণগুলি হল— (১) পৃথিবীর আবর্তন, (২) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, (৩) সমুদ্রজলের উষ্ণতা, (৪) সমুদ্রজলের ও লবণত্ব ও ঘনত্বের তারতম্য, (৫) বরফের গলন , (৬) উপকূলের আ

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।