অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ (Ox-bow lake) : নদীর মধ্যগতির শেষের দিকে এবং নিম্নগতিতে নদীর ক্ষয়কাজ ও সঞ্চয়কাজের ফলে যে সমস্ত রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ হল তাদের মধ্যে অন্যতম । সমভূমি প্রবাহে নদী এঁকে-বেঁকে প্রবাহিত হলে নদীর জলস্রোত বাঁকের মুখে ক্ষয় ও তার বিপরীত দিকে নদী বাহিত বালি, পলি, কাদা, কাঁকর, শিলাচূর্ণ, নুড়ি প্রভৃতি পদার্থসমূহ জমে চড়ার সৃষ্টি হয় । এই প্রক্রিয়া ক্রমাগত চলার ফলে নদীর বাঁক বাড়তে থাকে ও দুই বাঁকের মধ্যবর্তী স্থান ক্রমাগত ক্ষয় পেতে থাকে ও সংকীর্ণ হতে থাকে । শেষ পর্যন্ত নদীবাঁকের দুটি মুখ পরস্পরের কাছে চলে আসে ও মধ্যবর্তী স্থানে নদী বাহিত বালি, পলি, কাদা, কাঁকর, শিলাচূর্ণ, নুড়ি প্রভৃতি পদার্থসমূহ সঞ্চিত হয়ে নদীর দুই বাঁক পরস্পরের সঙ্গে মিশে যায় । তখন নদী আবার সোজাপথে প্রবাহিত হয় ও পরিত্যক্ত নদী বাঁকটি হ্রদের মতো অবস্থান করে । এই প্রকারের হ্রদকে দেখতে অনেকটা ঘোড়ার ক্ষুরের মত হয় বলে একে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলে । এভাবে নদীর ক্ষয়, বহন ও অবক্ষেপণের মিলিত কাজের ফলে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ গঠিত হয় । মুর্শিদাবাদ জেলায় ভাগীরথী নদীর দুই তীরে এ জাতীয় হ্রদ দেখা যায় ।
******