মেন্ডেলের এক সংকর পরীক্ষা

Submitted by arpita pramanik on Mon, 12/17/2012 - 22:04

মেন্ডেলের এক সংকর পরীক্ষা (Mendel's experiment of Monohybrid cross)

একসংকর জননের সংজ্ঞা:- একই প্রজাতিভুক্ত বিপরীতধর্মী এক-চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দুটি জীবের মধ্যে যে যৌন জনন সম্পন্ন হয়,  তাকে একসংকর জনন বা মনোহাইব্রিড ক্রস বলে ।

দুটি পৃথক পরীক্ষার সাহায্যে একসংকর পরনিষেক ব্যাখ্যা করা হল

[১] উদ্ভিদের একসংকর পরনিষেক:-  

মেন্ডেল বিশুদ্ধ প্রলক্ষণযুক্ত একটি লম্বা মটর গাছের [TT] সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ প্রলক্ষণযুক্ত বেঁটে মটর গাছের [tt] ইতর পরাগযোগ ঘটান । এক্ষেত্রে প্রথম অপত্য জনুতে [F1] সব লম্বা [সংকর লম্বা —Tt] মটর গাছ সৃষ্টি হল । (মটর গাছের ক্ষেত্রে লম্বা বৈশিষ্ট্যটি বেঁটের ওপর প্রকট) প্রথম অপত্য জনুতে উত্পন্ন মটর গাছের স্ব-পরাগযোগ ঘটাতে দ্বিতীয় অপত্য জনুতে [F2] তিন ভাগ লম্বা এবং এক ভাগ বেঁটে মটর গাছ সৃষ্টি হল । লম্বা গাছগুলির মধ্যে এক ভাগ বিশুদ্ধ লম্বা [TT], দু'ভাগ সংকর লম্বা [Tt] এবং এক ভাগ বিশুদ্ধ বেঁটে [tt] মটর গাছ সৃষ্টি হয়েছিল ।

মেন্ডেলের সিদ্ধান্ত (Mendel 's inference)

একসংকর পরীক্ষা থেকে মেন্ডেল নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন ।

পৃথকীভবনের সূত্র:- প্রথম অপত্য জনুতে [F1] উদ্ভুত সংকর জীবের মধ্যে সঞ্চারিত জনিতৃ জনুর [p] বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যগুলির মিশ্রণ ঘটে না; উপরন্তু সংকর জীবগুলির মধ্যে গ্যামেট গঠনকালে প্রতিটি বৈশিষ্ট্য নির্ধারক অ্যালিল দুটি পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায় । এই সূত্রটি 'পৃথকীভবনের সূত্র' বা 'পৃথকীকরণের সূত্র' নামে পরিচিত । এটি মেন্ডেলের প্রথম সূত্র ।

প্রকটতার সূত্র:- বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দুটি জীবের মধ্যে পরনিষেক ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে কেবলমাত্র প্রকট বৈশিষ্ট্যরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে, প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যর বহিঃপ্রকাশ ঘটে না । এই রকম ঘটনাকে প্রকটতার সূত্র বলা হয় । এটি কোনো পৃথক সুত্র নয়, একটি উপসূত্র মাত্র ।

*****

Related Items

টীকাকরণ এবং অনাক্রম্যতাকরণ

দেহে জীবাণু বা জীবাণুসৃষ্ট পদার্থ কৃত্রিমভাবে প্রবেশ করিয়ে ওই রোগের সাপেক্ষে দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়াকে টীকাকরণ বলে, এবং যে পদার্থকে দেহে প্রবেশ করানো হয়, তাকে টীকা বলে। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে অথবা খাওয়ানোর দ্বারা প্রতিষেধক টীকা দেহে প্রবেশ ...

সাধারণ জীবাণু নাশকের ব্যবহার

বিভিন্ন রোগ-জীবাণু প্রতিরোধের জন্য নানা ধরনের জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয় । সাধারণত জীবাণুনাশকগুলি প্রধানত তিন ধরনের হতে পারে, যেমন : প্রাকৃতিক, ভৌত এবং রাসায়নিক। সূর্যালোক এবং বাতাস স্বাভাবিক জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে । সূর্যালোকের অতিবেগুনি রশ্মির ...

রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে সংক্রামিত রোগ সমূহ

কোনো রোগের কারণে অথবা ক্ষতের মাধ্যমে দেহ থেকে অতিরিক্ত রক্ত নির্গত হয়ে গেলে, রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে তা প্রতিস্থাপিত করা যেতে পারে । বর্তমানে বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক, নার্সিং হোম অথবা বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনের জন্য রক্ত পাওয়া যায় ...

পতঙ্গ বাহকের মাধ্যমে সংক্রামিত রোগসমূহ

রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুদের সংক্রমণের ধরন বিভিন্ন রকম হতে পারে । মানবদেহে খাদ্যের সাথে, জলের সাথে, বাতাসের মাধ্যমে, বিভিন্ন পতঙ্গ অথবা অপর জীবের দেহের সাথে সংলগ্ন হয়ে অথবা তাদের দংশনের মাধ্যমে জীবাণু সংক্রমণ হয় । এছাড়াও রোগাক্রান্ত অথবা প্রাণীর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ...

প্রোটোজোয়া (Protozoa)

এককোশী আণুবীক্ষণিক প্রাণীদের প্রোটোজোয়া বা আদ্যপ্রাণী বলা হয় । আদ্যপ্রাণীদের মধ্যে কিছু প্রাণী মানবদেহে পরজীবীরূপে বসবাস করে এবং নানারকম রোগ সৃষ্টি করে । এখানে পাঠক্রমভুক্ত কয়েকটি আদ্যপ্রাণীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় উল্লেখ করা হল - প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স