সংবহন সম্পর্কিত কয়েকটি পার্থক্য

Submitted by arpita pramanik on Thu, 05/02/2013 - 12:31

সংবহন সম্পর্কিত কয়েকটি পার্থক্য

১৷ অলিন্দ ও নিলয় ( Atrium and Ventricle )

বৈশিষ্ট্য

অলিন্দ

নিলয়

১৷ অবস্থান

হৃৎপিণ্ডের উপরের প্রকোষ্ঠ।

হৃৎপিণ্ডের নীচের প্রকোষ্ঠ।

 

 

 

২৷ গঠন

(a) অলিন্দের প্রবেশ পথে কোনো কপাটিকা থাকে না।

(b) অলিন্দের সাথে মহাশিরা ও ফুসফুসীয় শিরা যুক্ত থাকে।

(c) অলিন্দের প্রাচীর পাতলা।

(a) নিলয়ের প্রবেশ পথে কপাটিকা থাকে।

(b) নিলয়ের সাথে মহা ধমনী ও ফুসফুসীয় ধমনী যুক্ত থাকে।

(c) নিলয়ের প্রাচীর পুরু।

৩৷ কাজ

সারা দেহ থেকে আগত রক্তকে গ্রহণ করে।

সারা দেহে রক্ত প্রেরন করে।

 

 

২৷ মুক্ত সংবহন ও বদ্ধ সংবহন ( Open Circulation and Close Circulation )

মুক্ত সংবহন

বদ্ধ সংবহন

১৷ এই রকম সংবহনে রক্ত দেহ গহ্বরে উন্মুক্ত হয়।

১৷ এই রকম সংবহনে রক্ত কখন দেহ গহ্বরে উন্মুক্ত হয় না, সব সময় রক্তবাহে আবদ্ধ থাকে।

২৷ এই রকম সংবহন কেবল অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের দেখা যায়।

২৷ এই রকম সংবহন কয়েক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণীদেহে দেখা যায়।

৩৷ এই রকম সংবহনে রক্ত কলা কোষের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসে।

৩৷ এই রকম সংবহনে রক্ত প্রত্যক্ষ কলা কোষের সংস্পর্শে আসে না।

৪৷ এই রকম সংবহন তন্ত্রে জালক থাকে না। কিন্তু হিমসিল বা সাইনাস থাকে।

৪৷ এই রকম সংবহন তন্ত্রে জালক থাকে। কিন্তু হিমসিল বা সাইনাস থাকে না।

৫৷ হৃৎপিণ্ড অনুন্নত ও সরল প্রকৃতির ।

৫৷ হৃৎপিণ্ড উন্নত ও জটিল প্রকৃতির।

 

 

 

৩৷ হিমোগ্লোবিন ও হিমোসায়ানিন (Himoglobin and Himosayanin)

বৈশিষ্ট্য

হিমোগ্লোবিন

হিমোসায়ানিন

১৷ প্রকৃতি

১৷ এটি লোহিত রঞ্জক পদার্থ।

১৷ এটি তাম্র ঘটিত রঞ্জক পদার্থ।

২৷ অবস্থান

২৷ এটি অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তরসে ও মেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্ত কণিকায় অবস্থিত।

২৷ এটি কবচী শ্রেণীর অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তরসে থাকে।

৩৷ বর্ণ

৩৷ হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতিতে রক্ত লাল রঙ ধারন করে।

৩৷ হিমোসায়ানিনের প্রভাবে রক্ত নীলাভ বর্ণ ধারন করে।

 

৪৷ কেঁচোর রক্ত ও মানুষের রক্ত (Blood of Earthwarm and Blood of Human)

বৈশিষ্ট্য

কেঁচোর রক্ত

মানুষের রক্ত

১৷ প্রকৃতি

১৷ কেঁচোর রক্ত শীতল।

১৷ মানুষের রক্ত উষ্ণ।

২৷ হিমোগ্লোবিনের অবস্থান

২৷ কেঁচোর রক্তে হিমোগ্লোবিন, রক্তরসে থাকে।

২৷ মানুষের রক্তে হিমোগ্লোবিন, লোহিত কণিকায় থাকে।

৩৷ লোহিত কণিকা

৩৷ কেঁচোর রক্তে লোহিত কণিকা থাকে না।

৩৷ মানুষের রক্তে লোহিত কণিকা থাকে।

 

৫৷ লোহিত রক্ত কণিকা ও শ্বেত রক্ত কণিকা (Red Blood cell and White Blood cell)

বৈশিষ্ট্য

লোহিত রক্ত কণিকা

শ্বেত রক্ত কণিকা

১৷ আকার

১৷ এদের নির্দিষ্ট আকার আছে।

১৷ এরা অনিয়তকার।

২৷ নিউক্লিয়াস

২৷ পরিণত লোহিত কণিকা নিউক্লিয়াস বিহীন।

২৷ এরা নিউক্লিয়াস যুক্ত।

৩৷ হিমোগ্লোবিন

৩৷ এদের মধ্যে হিমোগ্লোবিন থাকে।

৩৷ এদের মধ্যে হিমোগ্লোবিন থাকে না।

৪৷ কাজ

৪৷ এদের প্রধান কাজ শ্বাস বায়ু পরিবহণ করা।

৪৷ এদের প্রধান কাজ জীবাণু ধ্বংস করা।

৫৷ আয়ু

৫৷ এদের আয়ু বেশি।

৫৷ এদের আয়ু কম।

৬৷ প্রকার

৬৷ লোহিত কণিকা এক রকমের।

৬৷ শ্বেত কণিকা বিভিন্ন রকমের।

 

৬৷ প্লাজমা ও সিরাম (Plasma and Serum)

প্লাজমা

সিরাম

১৷ রক্তের স্বচ্ছ, তরল ও হরিদ্রাভ ধাত্র।

১৷ তঞ্চিত রক্ত নিসৃত স্বচ্ছ তরল পদার্থ।

২৷ প্লাজমায় রক্ত কণিকা থাকে।

২৷ সিরামে রক্ত কণিকা থাকে না।

৩৷ প্লাজমায় ফাইবিনোজেন থাকে।

৩৷ সিরামে ফাইবিনোজেন থাকে না।

 

৭৷ সার্বিক দাতা ও সার্বিক গ্রহীতা

সার্বিক দাতা

সার্বিক গ্রহীতা

১৷ সব বিভাগেই রক্ত দান করতে পারে।

১৷ সব বিভাগের কাছ থেকে রক্ত গ্রহণ করতে পারে।

২৷ ‘O’ বিভাগের রক্ত হল সার্বিক দাতা।

২৷ ‘AB’ বিভাগের রক্ত হল সার্বিক গ্রহীতা।

৩৷ এর মধ্যে অ্যাগ্লুটিনোজেন থাকে না।

৩৷ এর মধ্যে ‘A’ এবং ‘B’ উভয় ধরনের অ্যাগ্লুটিনোজেন থাকে।

৪৷ সার্বিক দাতার মধ্যে  ও  এই দুরকম অ্যাগ্লুটিনিন থাকে।

৪৷ সার্বিক গ্রহীতার মধ্যে কোনো রকম অ্যাগ্লুটিনিন থাকে না।

 

৮৷ ধমনী ও শিরা

ধমনী

শিরা

১৷ ধমনীর উৎসস্থল হৃৎপিণ্ড এবং মিলনস্থল জালক।

১৷ শিরার উৎসস্থল জালক এবং মিলনস্থল হৃৎপিণ্ড।

২৷ ধমনীর প্রাচীর পুরু ও গহ্বর ছোট।

২৷ শিরার প্রাচীর পাতলা ও গহ্বর বড়।

৩৷ ধমনীর মধ্যে কপাটিকা থাকে না।

৩৷ শিরার মধ্যে কপাটিকা থাকে।

৪৷ ধমনীর মাধ্যমে রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে দেহের বিভিন্ন অংশে পরিবাহিত হয়।

৪৷ শিরার মাধ্যমে রক্ত দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে হৃৎপিণ্ডে পরিবাহিত হয়।

৫৷ ধমনীর মাধ্যমে বিশুদ্ধ রক্ত বা অক্সিজিনেটেড ব্লাড পরিবাহিত হয় ( ব্যতিক্রম – ফুসফুসীয় ধমনী, যেখানে  যুক্ত রক্ত পরিবাহিত হয় ) ।

৫৷ শিরার মাধ্যমে দূষিত রক্ত বা ডি অক্সিজিনেটেড ব্লাড পরিবাহিত হয়, ( ব্যতিক্রম ফুসফুসীয় শিরা, যেখানে  যুক্ত রক্ত পরিবাহিত হয় ) ।

৬৷ ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্ত বেগে প্রবাহিত হয়।

৬৷ শিরার মধ্যে দিয়ে রক্ত ধীরে প্রবাহিত হয়।

৭৷ ধমনীর স্পন্দন আছে।

৭৷ শিরার স্পন্দন নেই।

৮৷ ধমনী কেটে গেলে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোয়।

৮৷ শিরা কেটে গেলে গল গল করে রক্ত বেরোয়।

 

৯৷ ফুসফুসীয় ধমনী ও ফুসফুসীয় শিরা

ফুসফুসীয় ধমনী

ফুসফুসীয় শিরা

১৷ হৃৎপিণ্ড থেকে উৎপন্ন হয়ে ফুসফুসে বিস্তৃত।

১৷ ফুসফুস থেকে উৎপন্ন হয়ে হৃৎপিণ্ডে বিস্তৃত।

২৷ এর মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড থেকে রক্ত ফুসফুসে যায়।

২৷ এর মাধ্যমে ফুসফুস থেকে রক্ত হৃৎপিণ্ডে যায়।

৩৷ এর মাধ্যমে  যুক্ত রক্ত প্রবাহিত হয়।

৩৷ এর মাধ্যমে  যুক্ত রক্ত প্রবাহিত হয়।

৪৷ এর প্রাচীর পুরু ও গহ্বর ছোট।

৪৷ এর প্রাচীর পাতলা ও গহ্বর বড়।

 

১০৷ রক্ত ও লসিকা (Blood and Lympha)

রক্ত

লসিকা

১৷ রক্ত লাল রঙের হয়।

১৷ লসিকা বর্ণহীন বা হালকা হলুদ।

২৷ রক্ত রক্তবাহের মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়।

২৷ লসিকা লসিকাবাহের মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়।

৩৷ রক্তের মধ্যে লোহিত কণিকা ও অণুচক্রিকা থাকে।

৩৷ লসিকার মধ্যে লোহিত কণিকা ও অণুচক্রিকা থাকে না।

৪৷ রক্তে শ্বেত কণিকা থাকে পাঁচ রকমের।

৪৷ লসিকায় শ্বেত কণিকা এক রকমের।

৫৷ রক্তে ফ্রাইবিনোজেনের পরিমাণ লসিকার তুলনায় অনেক বেশি।

৫৷ লসিকায় ফ্রাইবিনোজেনের পরিমাণ রক্তের তুলনায় অনেক কম।

৬৷ রক্তের সঙ্গে কলা কোষের সরাসরি যোগাযোগ থাকে না।

৬৷ লসিকার সঙ্গে কলা কোষের সরাসরি যোগাযোগ থাকে।

৭৷ রক্ত প্রোটিনের পরিমাণ লসিকার তুলনায় অনেক বেশি।

৭৷ লসিকার প্রোটিনের পরিমাণ রক্তের তুলনায় অনেক কম।

*****

Related Items

আরশোলার গমন

চলা ফেরা বা হাঁটার জন্য আরশোলার তিন জোরা সন্ধিল পদ বর্তমান। আরশোলার পৃষ্ঠ দেশে দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ডকে মোট দু জোরা ডানা আছে। আরশোলার দু জোরা ডানার মধ্যে প্রথম ডানা জোরা শক্ত ও পুরু। তারা উড্ডয়নে সাহায্য করে না। দ্বিতীয় ডানা জোরা স্বচ্ছ ও পাতলা ...

কেঁচোর গমন

প্রাণীর নাম – কেঁচো, গমন অঙ্গের নাম, গমনে সাহায্যকারী পেশীর নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - কেঁচোর দেহ খণ্ডতলের অঙ্গীয় তলে অবস্থিত আণুবীক্ষণিক এক আয়তন কণ্টক সদৃশ্য অঙ্গ হল সিটি । সিটির এক প্রান্ত দেহ অভ্যন্তরস্ত থলির মধ্যে থাকে। ...

অ্যামিবার গমন

প্রাণীর নাম - অ্যামিবা, গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - ক্ষনপদ হল অ্যামিবার কোষ পর্দা সমূহ দেহ প্রোটোপ্লাজমের অংশ বিশেষ যা নলাকারে প্রসারিত হয়। গমনের সময় ক্ষনপদ সামনের দিকে প্রসারিত হয় এবং কোনো কঠিন বস্তুর সঙ্গে ক্ষনপদটিকে দৃঢ় ভাবে আবদ্ধ করে।

উদ্ভিদ দেহে ন্যাস্টিক চলন

উদ্ভিদের স্থায়ী অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের তীব্রতা বা ব্যাপ্তি অনুসারে হয় , তখন তাকে ন্যাস্টিক চলন বা ব্যাপ্তি চলন বলে। ন্যাস্টিক চলনের প্রকারভেদ , ফটোন্যাস্টি, থার্মোন্যাস্টি, নিকটিন্যাস্টি, কেমোন্যাস্টি, সিসমোন্যাস্টি। ...

উদ্ভিদ দেহে ট্রপিক চলন

উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের গতিপথ অনুসরন করে হয় তখন তাকে ট্রপিক চলন বা দিকনির্ণীত চলন বা ট্রপিজম বলে। ট্রপিক চলনের প্রকারভেদ, ফটোট্রপিক চলন, ফটোট্রপিক চলনের পরীক্ষা, জিওট্রপিক চলন, জিওট্রপিক চলনের পরীক্ষা, হাইড্রোট্রপিক চলন ...