উদ্ভিদ হরমোন বা ফাইটোহরমোন

Submitted by arpita pramanik on Wed, 12/05/2012 - 12:18

উদ্ভিদ হরমোন বা ফাইটোহরমোন (Plant Hormone or Phytohormone)

উদ্ভিদ হরমোনের উৎপত্তিস্থল [Site of formation of Plant Hormone]:- উদ্ভিদের কান্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলা উদ্ভিদ-হরমোনের প্রধান উত্সস্থল । এছাড়া বীজপত্র, মুকুলিত পত্র, ভ্রূণ মুকুল, ভ্রূণমুকুলাবরণী অর্থাৎ কোলিওপটাইল, শস্য, ফল ইত্যাদিতে উদ্ভিদ হরমোন থাকে ।

উদ্ভিদ হরমোনের শ্রেণিবিভাগ [Classification of Plant Hormones]:- উদ্ভিদ হরমোনগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে যথা: (ক) প্রাকৃতিক হরমোন ও (খ) কৃত্রিম হরমোন

প্রাকৃতিক হরমোন [Natural Hormone]:- যে সমস্ত হরমোন উদ্ভিদদেহে প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্টি হয় তাদেরকে প্রাকৃতিক হরমোন বলে ।

উদাহরণ :- অক্সিন, জিব্বেরেলিন, কাইনিন ইত্যাদি । 

কৃত্রিম হরমোন [Synthetic Hormone]:- গবেষণাগারে প্রস্তুত যে সমস্ত রাসায়নিক পদার্থ প্রাকৃতিক হরমোনের মতো উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও পরিস্ফুটনে সাহায্য করে তাদের কৃত্রিম হরমোন বলে । কৃত্রিম হরমোন কখনও উদ্ভিদ কোশে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয় না এবং উদ্ভিদদেহে সংশ্লেষিত হয় না ।

উদাহরণ:- ইন্ডোল প্রোপায়নিক অ্যাসিড [IPA],   2,4-ন্যাপথালিন অ্যাসিটিক অ্যাসিড [NAA], ডাইক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড [2,4-D],   ইন্ডোল বিউটাইরিক অ্যাসিড [IBA],  -2, 4-5 ট্রাইক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড [2, 4-5 T],   মিথাইল ক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড [MCPA], ইন্ডোল অ্যাসিটালডিহাইড [IALD] ইত্যাদি ।

 

উদ্ভিদ ও প্রাণী হরমোনের পার্থক্য

বৈশিষ্ট্য উদ্ভিদ হরমোন প্রাণী হরমোন
১. উৎপত্তি উদ্ভিদ হরমোন সাধারণত উদ্ভিদের কাণ্ডের অগ্রভাগ ও মূলের অগ্রভাগের ভাজক কলার তরুণ কোষ থেকে নিঃসৃত হয় । প্রাণী হরমোন সাধারণত প্রাণীদেহের নির্দিষ্ট অনাল গ্রন্থি অথবা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় ।
২. পরিবহন উদ্ভিদ হরমোন সাধারণত ব্যাপন প্রক্রিয়ায় অথবা ফ্লোয়েম সংবহন কলার মাধ্যমে পরিবাহিত হয় । প্রাণী হরমোন প্রধানত রক্ত ও লসিকার মাধ্যমে পরিবাহিত হয় ।
৩. প্রকৃতি উদ্ভিদ হরমোন প্রধানত প্রোটিনধর্মী (ব্যতিক্রম : জিব্বেরেলিন) । প্রাণী হরমোন প্রোটিন বা স্টেরয়েড বা অ্যামাইনো ধর্মী হয় ।
৪. ব্যবহারিক প্রয়োগ উদ্ভিদ হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ ব্যাপক । প্রাণী হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ তুলনামূলকভাবে কম হয় ।

*****

Related Items

অভিব্যক্তির সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা

যে মন্থর গতিশীল প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিক পরিবর্তন ও ক্রমিক রুপান্তরের মাধ্যমে পূর্বপুরুষ অর্থাৎ সরল উদবংশীয় জীব থেকে নতুন ও অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব এবং ক্রমবিকাশ ঘটে, তাকে জৈব অভিব্যক্তি বা জৈব বিবর্তন বলে । চার্লস ডারউইন অভিব্যক্তিকে ...

মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ

দেহ গঠন ও লিঙ্গ নির্ধারণের বৈশিষ্ট্য অনুসারে ক্রোমোজোম দু-ধরণের হয়, - অটোজোম, সেক্স-ক্রোমোজোম । জীবের দেহজ বৈশিষ্ট্য নির্ধারক ক্রোমোজোমদের অটোজোম বলা হয় । মানুষের 46টি ক্রোমোজোমের মধ্যে 44টি অটোজোম থাকে । এই ক্রোমোজোমগুলি মানবদেহের ...

মেন্ডেলের বংশগতি সূত্র

মেন্ডেল বংশগতির দুটি সূত্র প্রবর্তন করেন । প্রথম সূত্রটি একসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত এবং দ্বিতীয় সূত্রটি দ্বিসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত । মেন্ডেলের প্রথম সূত্রটি 'পৃথকীভবনের সূত্র নামে পরিচিত । এই সূত্রানুযায়ী "কোনও জীবের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য একটি জনু থেকে আর ...

ড্রসোফিলার দ্বি-সংকর জননের পরীক্ষা

একটা হোমোজাইগাস ধূসর রং -এর লম্বা ডানাযুক্ত ড্রসোফিলার সাথে অপর একটি হোমোজাইগাস কালো রং -এর লুপ্তপ্রায় ডানাযুক্ত ড্রসোফিলার সংকরায়ণ ঘটালে F1 জনুতে প্রাপ্ত সব মাছিই ধূসর রং -এর এবং লম্বা ডানাযুক্ত হয়; অর্থাৎ ধূসর রং এবং লম্বা ডানার বৈশিষ্ট্যগুলি প্রকট । ...

ড্রসোফিলার একসংকর জননের পরীক্ষা

একটি ধূসর বর্ণের পুরুষ ড্রসোফিলার সাথে একটি কালো রং -এর স্ত্রীর সংকরায়ণের ফলে F1 -এ সব অপত্যই ধূসর রং -এর হয় এবং তাদের সংকরায়ণের ফলে F2 জনুতে ধূসর এবং কালো রঙের ড্রসোফিলা 3 : 1 অনুপাতে পাওয়া যায় । অর্থাৎ অপরপক্ষে, কালো রং - এর পুরুষের সাথে ধূসর ...