সাইটোকাইনিন (Cytokinin)
কাইনিন পিউরিন জাতীয় নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষারীয় জৈব পদার্থ । বিভিন্ন বিজ্ঞানী প্রদত্ত এই রকম হরমোনের নামগুলো হল সাইটোকাইনিন, কাইনেটিন [kinetin], ফাইটোকাইনিন [Phytokinin], প্রভৃতি । কাইনিন প্রধানত কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন নিয়ে গঠিত ।
সংজ্ঞা:- উদ্ভিদের ফল এবং শস্যে উত্পন্ন পিউরিন জাতীয় নাইট্রোজেনযুক্ত যে ক্ষারীয় জৈব পদার্থসমূহ কোষ বিভাজনকে উদ্দীপিত করে, তাদের কাইনিন বা সাইটোকাইনিন বলে ।
উৎসস্থল :- উদ্ভিদের শস্য ও ফলে বেশি পরিমাণে কাইনিন থাকে । টম্যাটো, পীচ, ন্যাসপাতি, কুল প্রভৃতি ফল ও ফুলের নির্যাসে কাইনিন দেখা যায় । ভুট্টার শস্যে ও নারকেলের দুধে বেশি পরিমাণে কাইনিন থাকে । ডাবের জলে কাইনিন পাওয়া যায় ।
সাইটোকাইনিনের কাজ :-
(১) কাইনিন উদ্ভিদের কোষ বিভাজনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করে ।
(২) কাইনিন কোষের বৃদ্ধি ঘটায় ।
(৩) কাইনিন উদ্ভিদের জরা অর্থাৎ বার্ধক্য অবস্থাকে বিলম্বিত করতে সাহায্য করে ।
(৪) মুকুল উত্পাদনে এবং কলমের ক্ষেত্রে মূলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে ।
(৫) অগ্রমুকুলের অবাধ বৃদ্ধি রোধ করে এবং কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ও পরিস্ফুটনে সাহায্য করে ।
(৬) এই হরমোন বিচ্ছিন্ন পাতায় ক্লোরোফিল বিনষ্টিকরণকে বিলম্বিত করে ।
অক্সিন, জিব্বেরেলিন ও সাইটোকাইনিন -এর পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য | অক্সিন | জিব্বেরেলিন | সাইটোকাইনিন |
১. প্রকৃতি | এটি নাইট্রোজেনঘটিত জৈব যৌগ । | এটি নাইট্রোজেনবিহীন জৈব যৌগ । | এটি নাইট্রোজেনঘটিত জৈব যৌগ । |
২. উৎপত্তিস্থল | এটি প্রধানত কান্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলায় উৎপন্ন হয় । | এটি প্রধানত পরিণত বীজ, অঙ্কুরিত চারা গাছ এবং বীজপত্রে উৎপন্ন হয় । | এটি প্রধানত শস্য কলায় এবং ফুল ও ফলের নির্যাসে পাওয়া যায় । |
৩. কাজ | এটি প্রধানত উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে । | এটি প্রধানত উদ্ভিদের ফুল সৃষ্টিতে এবং বীজের সুপ্ত অবস্থা ভঙ্গ করে অঙ্কুরোদগমে সাহায্য করে । | এটি প্রধানত উদ্ভিদের কোষ বিভাজন ঘটায় । |
৪. বিশেষ ভূমিকা |
ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে এই হরমোনের বিশেষ ভূমিকা আছে |
ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে এই হরমোনের কোনো ভূমিকা নেই । |
ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে এর কোনো ভূমিকা নেই । |
*****
- 17370 views