ভারতের পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 12/16/2014 - 11:23

পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প : যে শিল্প অশোধিত খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়ামের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য থেকে প্লাস্টিক, পলিথিন, কৃত্রিম সুতো, কৃত্রিম রবার, রং প্রভৃতি নানা ধরনের জিনিস উৎপাদন করা হয় তাকে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প বলে ।

পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের গুরুত্ব : খনি থেকে যে অপরিশুদ্ধ তেল তোলা হয় তাকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় শোধন করতে হয় । খনিজ তেল পরিশোধনের বিভিন্ন পর্যায়ে ডিজেল, ভারি ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাসোলিন, কেরোসিন, ন্যাপথা, মবিল, গ্রিস এবং বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায় । পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে খনিজ তেলের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্যকে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়, যেমন— খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্য মোম থেকে মোমবাতি, প্যারাফিন (মোমবাতি তৈরি ও পালিস করার কাজে ব্যবহৃত হয়), অ্যাসফল্ট (রাস্তাঘাট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়), ন্যাপথা (এটি পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের একটি মুল উপজাত উপাদান) এবং ইথিলিন, বেঞ্জিন, প্রপলিন, বুটাডিন প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক যৌগ, বিটুমেন, কীটনাশক, ওষুধ, কৃত্রিম রবার, প্লাস্টিক, পলিমার, পি.ভি.সি., ফোম, রাসায়নিক আঠা, রাসায়নিক সার, টেরিলিন-পলিয়েস্টার প্রভৃতি কৃত্রিম সুতো, বৈদ্যুতিক দ্রব্য, টায়ার, পাইপ ডিটারজেন্ট, সাবান, রং, বার্নিশ, নান রকম সুগন্ধি দ্রব্য, মলম, ভেসলিন, ক্রিম, মাথার তেল, প্রভৃতি নানা রকম জিনিস তৈরি হয় ।

ভারতে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের অবস্থান : ১৯৬৬ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন কার্বাইড মহারাষ্ট্রের ট্রম্বেতে ভারতের প্রথম পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প স্থাপন করে । এর পর সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গুজরাটের বরোদা, দাহেজ, হাজিরা, গান্ধার, জামনগর (ভারতের বৃহত্তম পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকেন্দ্র) ও অসমের বঙ্গাইগাঁও, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের আউরিয়া (সরকারি প্রতিষ্ঠান: গ্যাস অথরিটি অব ইণ্ডিয়া) এবং যৌথ উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় (হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস) একটি বিশাল পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স গঠন করা হয়েছে । বর্তমানে মহারাষ্ট্রের অন্তত তিনটি অঞ্চলে নতুন পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প গড়ে উঠেছে, এগুলি হল— (১) রায়গড় জেলার নাগোথানে অঞ্চল (ইণ্ডিয়া পেট্রোকেমিক্যাল কর্পোরেশন);  (২) থানে জেলা (N.O.C.I.L.) এবং মুম্বাই -এর নিকটবর্তী চেম্বুর অঞ্চল (অসওয়াল অ্যাগ্রো) ।

*****

Related Items

ভারতের লৌহ-ইস্পাত শিল্প

ভারতের লৌহ-ইস্পাত শিল্প (Iron and Steel Industry of India) : লৌহ-ইস্পাত শিল্পের উল্লেখযোগ্য কাঁচামাল হল— (i) আকরিক লোহা, (ii) কয়লা, (iii) ম্যাঙ্গানিজ, (iv) চুনাপাথর, (v) ডলোমাইট, (vi) ক্রোমিয়াম, (vii) টাংস্টেন, (viii) নিকেল, (ix) প্রচুর বিদ্যুৎ, (x) অপর

ভারতের খাদ্যশস্য — গম

গম (Wheat) : খাদ্যশস্য হিসাবে ভারতে ধানের পরেই গমের স্থান । বর্তমানে পৃথিবীর মোট গম উৎপাদনের প্রায় শতকরা ১২ ভাগ গম ভারতে উৎপন্ন হয় । গম উৎপাদনে ভারত পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে । চিন পৃথিবীতে প্রথম স্থান অধিকার করে ।

ভারতের খাদ্যশস্য — ধান

ভারতের খাদ্যশস্য — ধান (Paddy) : ভারতের প্রধান খদ্যশস্য হল ধান । পৃথিবীর মোট ধান উৎপাদনের প্রায় শতকরা ২৩ ভাগ ধান ভারতে উৎপন্ন হয় । ধান উৎপাদনে ভারত বর্তমানে পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ও চিন প্রথম স্থান অধিকার করে ।

ভারতের জলসেচের বিভিন্ন পদ্ধতি

ভারতের জলসেচের বিভিন্ন পদ্ধতি (Irrigation System of India) : ভারতে সাধারণত তিনটি পদ্ধতির সাহায্যে জলসেচ করা হয়, যথা— (১) কুপ ও নলকূপ, (২) পুকুর ও জলাশয় এবং (৩) সেচখাল ।

ভারতবর্ষের কৃষিতে জলসেচ ব্যবস্থার গুরুত্ব

 ভারতবর্ষের কৃষিতে জলসেচ ব্যবস্থার গুরুত্ব (Importance of Irrigation System in India) : পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল অঞ্চল মঁওসিরাম (চেরাপুঞ্জি) ভারতে অবস্থিত হলেও ভারতের কৃষিকাজে জলসেচ ব্যবস্থার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।  নিম্নলিখিত ক