কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি — মুকুন্দ চক্রবর্তী
**********************************
মেঘে কৈল অন্ধকার মেঘে কৈল অন্ধকার ।
দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার ।।
ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর ।
উত্তর পবনে মেঘ ডাকে দুর দুর ।।
নিমেষেকে জোড়ে মেঘ গগন-মন্ডল ।
চারি মেঘে বরিষে মুষলধারে জল ।।
কলিঙ্গে উড়িয়া মেঘ ডাকে উচ্চনাদ ।
প্রলয় গণিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ ।।
হুড় হুড় দুড় দুড় বহে ঘন ঝড় ।
বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড় ।।
ধুলে আচ্ছাদিত হইল যে ছিল হরিত ।
উলটিয়া পড়ে শস্য প্রজা চমকিত ।।
চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ ।
সঘনে চিকুর পড়ে বেঙ্গ-তড়কা বাজ ।।
করি-কর সমান বরিষে জলধারা ।
জলে মহী একাকার পথ হইল হারা ।।
ঘন ঘন শুনি চারি মেঘের গর্জন ।
কারো কথা শুনিতে না পায় কোনো জন ।।
পরিচ্ছিন্ন নাহি সন্ধ্যা দিবস রজনী ।
কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি ।
হুড় হুড় দুড় দুড় শুনি ঝন ঝন ।
না পায় দেখিতে কেহ রবির কিরণ ।।
গর্ত ছাড়ি ভুজঙ্গ ভাসিয়া বুলে জলে ।
নাহি জানি জলস্থল কলিঙ্গ-মন্ডলে ।।
নিরবধি সাত দিন বৃষ্টি নিরন্তর ।
আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর ।।
মেঝ্যাতে পড়য়ে শিল বিদারিয়া চাল ।
ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল ।।
চণ্ডীর আদেশ পান বীর হনুমান ।
মঠ অট্টালিকা ভাঙ্গি করে খান খান ।।
চারিদিকে বহে ঢেউ পর্বত-বিশাল ।
উঠে পড়ে ঘরগুলা করে দলমল ।।
চণ্ডীর আদেশে ধায় নদনদীগণ ।
অম্বিকামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কন ।।
******