টীকাকরণ এবং অনাক্রম্যতাকরণ

Submitted by arpita pramanik on Sun, 01/06/2013 - 11:08

টীকাকরণ এবং অনাক্রম্যতাকরণ (Vaccination) :

দেহে জীবাণু বা জীবাণুসৃষ্ট পদার্থ কৃত্রিমভাবে প্রবেশ করিয়ে ওই রোগের সাপেক্ষে দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়াকে টীকাকরণ [Vaccination] বলে, এবং যে পদার্থকে দেহে প্রবেশ করানো হয়, তাকে টীকা [Vaccine] বলে ।  ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে অথবা খাওয়ানোর দ্বারা (যেমন : পোলিও টীকা ) প্রতিষেধক টীকা দেহে প্রবেশ করানো হয় । এই টীকা দেহে প্রবেশ করে নির্ধারিত অ্যান্টিবডি গঠনে সাহায্য করে ।

টীকা প্রস্তুতির উপায়:- টীকা সাধারণত চার রকমভাবে তৈরি করা হয়, যথা:-

[১] মৃত জীবাণু : যথা, টাইফয়েডের TABC টীকা  ।

[২] জীবিত কিন্তু শক্তি হ্রাসপ্রাপ্ত জীবাণু : যথা, যক্ষার BCG টীকা ।

[৩] জীবিত এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিকারক জীবাণু : যথা, গোরুর পক্স ভাইরাসের দ্বারা মানুষের স্মল পক্সের টীকাকরণ ।

[৪] টক্সয়েড টীকা : যথা, ডিপথেরিয়া এবং টিটেনাসের টীকা । এগুলি হল ব্যাকটিরিয়া নিঃসৃত বিষাক্ত পদার্থের নিষ্ক্রিয় অবস্থা ।

 

ভারতের শিশুদের জন্য জাতীয় টীকাকরণ কর্মসূচী হল :

বয়স টীকাকরণ 
3 - 12 মাস TP 3 মাত্রা,  4-6 সপ্তাহ পর পর পোলিও (মুখে) 3 মাত্রা,  4-6 সপ্তাহ পর পর  BCG (ত্বকে) ।
9 - 15 মাস হামের টীকা একবার মাত্র ।
18 - 24 মাস DTP-বুস্টার মাত্রা (পোলিও মুখে ) বুস্টার মাত্রা ।
5 - 6 বছর DTP বুস্টার মাত্রা টাইফয়েড টীকা 2 মাত্রা, 1-2 মাস পর ।
10  বছর টিটেনাস টক্সয়েড বুস্টার মাত্রা, টাইফয়েড টীকা বুস্টার মাত্রা ।
16  বছর টিটেনাস টক্সয়েড বুস্টার মাত্রা, টাইফয়েড টীকা বুস্টার মাত্রা ।

*****

Related Items

জীবাণু বা মাইক্রোবস (Microbes)

যে সমস্ত অতি ক্ষুদ্র এবং এককোশী বা বহুকোশী জীবদের খালি চোখে দেখা যায় না অথচ কেবলমাত্র অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায়, তাদেরই সাধারণভাবে জীবাণু বলে । অতিক্ষুদ্র ও আণুবীক্ষণিক জীবদের এককথায় জীবাণু বা অণুজীব বা মাইক্রোবস বলা হয় ।

রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাসের রোগ সংক্রমণ প্রক্রিয়া

ভাইরাস বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে, যেমন - ইনফ্লুয়েঞ্জা, AIDS, পোলিও, জল বসন্ত, মাম্পস, হাম, এনকেফালাইটিস, জলাতঙ্ক, পা ও মুখের ঘা, জন্ডিস, ডেঙ্গু জ্বর প্রভৃতি । ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস প্রধানত মানুষের শ্বসনতন্ত্রকে আক্রমণ করে, ফলে রোগীর হাঁচি, কাশি ও নির্গত মিউকাসের মাধ্যমে ...

ব্যাকটিরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাস বা ব্যাকটিরিওফাজ

1917 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী দ্য হেরেলী ব্যাকটিরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাসদের ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাস বা ব্যাকটিরিওফাজ বা ফাজ নামে অভিহিত করেন । এখন পর্যন্ত যেসব ব্যাকটিরিওফাজের অস্তিত্ব সম্পর্কে ভালো করে জানা গিয়েছে, তাদের মধ্যে 'T' শ্রেণির অন্তর্গত ব্যাকটিরিওফাজই প্রধান । ...

ভাইরাসে জড়ের ও প্রাণের লক্ষণ

ভাইরাসের দেহে সাইটোপ্লাজম থাকে না । ভাইরাস কোনো বহিঃস্থ উদ্দীপকে সাড়া দেয় না । ভাইরাসের চলন ক্ষমতা নেই । ভাইরাসের দেহে কোনোরকম বিপাক ক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না । পোষকের দেহ-কোশে ভাইরাস বংশবিস্তারে সক্ষম । ভাইরাসের দেহে প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডের ...

ভাইরাস ও ভাইরাসের বৈশিষ্ঠ্য

ভাইরাস কথার শব্দতত্ত্বগত অর্থ বিষ। 1796 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড জেনার সর্বপ্রথম ভাইরাস আক্রান্ত বসন্ত রোগের কথা উল্লেখ করেন । 1936 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের ব্যাডেন এবং পিরী পরীক্ষা করে দেখান যে, ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন আছে এবং ভাইরাসগুলো নিউক্লিও ...