প্রশ্ন : 'ধীবর-বৃত্তান্ত' নাট্যাংশে দুই রক্ষীর কথাবার্তায় সমাজের কোন ছবি ফুটে উঠেছে তা লেখ ।
উঃ- 'ধীবর-বৃত্তান্ত' নাট্যাংশটি মহাকবি কালিদাসের লেখা 'অভিজ্ঞান শকুন্তলম' নামক সংস্কৃত নাট্যকাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে । নাট্যাংশে দেখা যায় যে, ধীবরের কাছ থেকে রাজা দুষ্মন্তের নাম খোদাই করা আংটি পাওয়া গেছে । এজন্য রক্ষীরা ধীবরকে চোর ভেবে ধরে নিয়ে রাজার কাছে গেছে । এই সময় তারা ধীবরকে চোর ভেবে নানান অকথা কুকথা বলে গালিগালাজ করে । তারা ধীবরকে 'গোসাপ খাওয়া জেলে' বলেছে । এর গায়ে থেকে কাঁচা মাংসের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে । জেলেকে ছোটলোক, বদ, বাটপার চোর বলে অপবাদ দিয়েছে ।
দুই রক্ষীর কথোপকথন থেকে তৎকালীন সামাজিক অবস্থার কিছু ছবি এখানে ফুটে উঠেছে । সমাজে জাতপাতের বিভেদ, অর্থনৈতিক বিভেদের ছবি বেশ প্রকট ছিল । জেলেরা নিম্নবিত্ত শ্রেণির লোক বলে তারা এদের দ্বারা নিপীড়িত হত— সে ছবি বেশ স্পষ্টভাবে বোঝা যায় । দুই রক্ষীর কথাবার্তা থেকে বোঝা যায় যে, উচ্চবর্ণের মানুষ নিম্নবর্ণের উপর সর্বদা অবজ্ঞা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করত এবং বিনা কারণে তাদের উপর উৎপীড়ন চালাত । তবে নগররক্ষক রাজশ্যালকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি কিন্তু ধীবরের কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন এবং রাজার আদেশের জন্য অপেক্ষা করেছেন । রাজ আদেশ পাওয়া মাত্র ধীবরকে একজন বন্ধু বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ।
*****