বায়ুর আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ (Humidity and Precipitation):
জলচক্র (Hydrological cycle) : পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলে জল কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় প্রধানত (১) সাগর ও মহাসাগর, (২) বরফের আচ্ছাদন, (৩) নদনদী ও (৪) ভৌমজল —এই চারটি আধারে অবস্থান করে । বাষ্পীভবন, ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণের মাধ্যমে জলের এক আধার থেকে অন্য আধারে অবিরাম প্রবাহের প্রক্রিয়াকে জলচক্র বলে ।
(i) বাষ্পীভবন, (ii) ঘনীভবন ও (iii) অধঃক্ষেপণ এই তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে জলচক্রে জলের আবর্তন হয় ।
(i) বাষ্পীভবন (Evaporation) : জল থেকে বাষ্পে রূপান্তরীকরণের প্রক্রিয়াকে বাষ্পীভবন বলে । সৌরশক্তির দ্বারা ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয় । এই তাপশক্তি পরিবাহিত হয়ে সমুদ্র, নদী, খাল, বিল, জলাশয় প্রভৃতির জলকে বাষ্পীভূত করে জলীয় বাষ্পে পরিণত করে । আবার মাটি এবং গাছপালা থেকেও জল বাষ্পীভূত হয় । বাষ্পীভবনের পরিমাণ নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে ক্রমশ কমতে থাকে ।
(ii) ঘনীভবন (Condensation) : সাগর, মহাসাগর, নদনদী ও অন্যান্য তরল আধারের জল বাষ্পীভবনের মাধ্যমে ওপরে উঠে বায়ুমণ্ডলে মেশে । জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলের ধুলিকণাকে আশ্রয় করে ঘনীভূত হয় ও প্রথমে মেঘ তৈরি করে এবং পরে ওই বায়ুতে ভাসমান জলীয় বাষ্প ঘনীভবনের দ্বারা জলকণা বা বরফকণায় রূপান্তরিত হয় ।
(iii) অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : ঘনীভবনের দ্বারা রূপান্তরিত জলকণা ও বরফকণাসমূহ আবার বৃষ্টিপাতসহ বিভিন্নরূপে অধঃক্ষেপণের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয় । এভাবে জলের বিভিন্ন অবস্থায় আবর্তনের ফলে জলচক্রের সৃষ্টি হয় ।
*****