বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming) : পৃথিবীর স্বাভাবিক উষ্ণতা অপেক্ষা উষ্ণতার ক্রমবর্ধমান ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বিজ্ঞানীরা বিশ্ব উষ্ণায়ন নামে অভিহিত করেন । সূর্যরশ্মি ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে বায়ুমণ্ডল ভেদ করে এসে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠ ও বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করে । এরপর এই সৌরশক্তি আবার বিকিরিত ও প্রতিফলিত হয়ে বৃহৎ তরঙ্গরূপে মহাশূন্যে ফিরে যায় । এইভাবে পৃথিবীতে উত্তাপের সমতা বজায় থাকে । কিন্তু মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত ক্রিয়াকলাপের ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরো কার্বন, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন, ওজোন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির পরিমান মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে বা ট্রপোস্ফিয়ারে চাঁদোয়ার মতো একটি দূষিত গ্যাসীয় স্তরের সৃষ্টি করে । সৌরশক্তি বৃহৎ তরঙ্গরূপে মহাশূন্যে ফেরার সময় এই দূষিত গ্যাসীয় স্তরে শোষিত ও বাধাপ্রাপ্ত হয়ে তার কিছু অংশ পুনরায় পৃথিবীপৃষ্ঠে ফিরে এসে নিম্ন বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করে । এর ফলে পৃথিবীর স্বাভাবিক উষ্ণতা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় ও বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটে । বিজ্ঞানীদের মতে, শিল্প বিপ্লবের পর থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত পৃথিবীর গড় উষ্ণতা প্রায় ১.৫° সে. বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ২° থেকে ৫° সে. বৃদ্ধি পাবে ।
****