রায়তওয়ারী বন্দোবস্ত (Ryotwari Settlement)
উনিশ শতকের প্রথম দিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে ইংরেজদের আধিপত্য সুদৃঢ় হওয়ার পর প্রধানত মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে প্রবর্তিত রায়ত বা প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি খাজনা আদায়ের সরকারি ব্যবস্থা চালু হয় । এটি ‘রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত’ নামে পরিচিত । আলেকজান্ডার রীড ও স্যার টমাস মনরো -র উদ্যোগে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে প্রথমে মাদ্রাজ ও পরে বোম্বাই -এ এই ব্যবস্থা প্রবর্তিত ও সম্প্রসারিত হয় । ত্রিশ বছর মেয়াদি এই ব্যবস্থা মূলত সরকার ও রায়তের মধ্যে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে । এখানে সরকার নিজেই জমিদারের ভূমিকা পালন করেছিল । এই ব্যবস্থার উচ্চরাজস্ব মেটাতে রায়তরা সাউকার মহাজনদের শোষণের শিকার হয় । মাদ্রাজের সালেম, চিঙ্গেলপাট, চিট্টুর, উত্তর সরকার, দন্দিগুল ও রামানন্দে পলিগার বা জমিদারদের প্রাধান্যের জন্য ওই স্থানগুলিতে টমাস মনরো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেছিলেন ।
রায়তওয়ারি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য:-
(১) এই ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থায় সরকার ও রায়তের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় ।
(২) রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত অনুসারে কৃষকরা জমির স্বত্ব লাভ করে এবং নির্দিষ্ট রাজস্বের বিনিময়ে প্রত্যেক কৃষকের সঙ্গে সাধারণত ৩০ বছরের মেয়াদে জমি বন্দোবস্ত করা হয় ।
(৩) রায়তওয়ারি বন্দোবস্তে বহু জমিদারের পরিবর্তে এক বিরাট জমিদার অর্থাৎ সরকারের নিয়ন্ত্রণে কৃষকদের রাখা হয় ।
(৪) সাধারণ জমিদারদের তুলনায় সরকারি জমিদারিতে খাজনার পরিমাণ বেশি ধার্য করা হয় যা অনেক সময় কৃষকদের ক্ষমতার অতিরিক্ত ছিল ।
*****
- 26837 views