হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার

Submitted by arpita pramanik on Mon, 02/25/2013 - 09:18

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার (Uses of Hydrochloric Acid)

[i]  রসায়নাগারে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) খুবই প্রয়োজনীয় বিকারক ।

[ii] ক্লোরিনের শিল্পোৎপাদনে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের (HCl) ব্যবহার হয় ।

[iii] অ্যাকুয়া রিজিয়া (Aqua regia) (অম্লরাজ) প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয়, যা সোনা গলাতে দরকার হয় ।

[iv] রঞ্জন শিল্পে, চর্ম শিল্পে, লোহার ওপর দস্তা বা টিনের প্রলেপ দিতে এবং ওষুধ প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) ব্যবহৃত হয় ।

[v] স্টার্চ থেকে গ্লুকোজ প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) দরকার হয় ।

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (Hydrogen Chloride) গ্যাসকে শুষ্ক করতে P2O5 অথবা CaO ব্যবহার করা হয় না— কারণ:-

(i) P2O5, হাইড্রোজেন ক্লোরাইডের (HCl) সঙ্গে বিক্রিয়ায় ফসফরাস অক্সিক্লোরাইড (POCl3) এবং মেটাফসফরিক অ্যাসিড (HPO3) উৎপন্ন করে । তাই হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসকে (HCl) শুষ্ক করতে P2O5 ব্যবহার করা হয় না ।

    2P2O5 + 3HCl = POCl3 + 3HPO3

(ii) তীব্র ক্ষারক CaO এবং তীব্র অম্লধর্মী গ্যাস হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) পরস্পর বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম ক্লোরাইড (CaCl2) ও জল সৃষ্টি করে । তাই এক্ষেত্রে শুষ্ক করার কাজে CaO ব্যবহার করা হয় না ।

    CaO + 2HCl = CaCl2 + H2O

পরীক্ষাগারে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) প্রস্তুত করতে গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4) -এর পরিবর্তে গাঢ় HNO3 ব্যবহার করা হয় না— কারণ :-

(i) সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) এবং গাঢ় নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3) -এর বিক্রিয়ায় সৃষ্ট হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস (HCl) গাঢ় ও উত্তপ্ত HNO3 দ্বারা ক্লোরিনে জারিত হয় ।

    NaCl + HNO3 = NaNO3 + HCl ↑ 

    HNO3 + 3HCl = NOCl (নাইট্রোসিল ক্লোরাইড) + 2[Cl] + 2H2O

(ii) গাঢ় নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3) -এর স্ফুটনাঙ্ক 86°C হওয়ায় উত্তপ্ত হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসের (HCl) সঙ্গে HNO3 -বাষ্পও গ্রাহক পাত্রে জমা হয় এবং সেখানে HNO3 -বাষ্প  হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসকে (HCl) ক্লোরিনে জারিত করে । এই সমস্ত কারণ গুলির জন্য NaCl থেকে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস (HCl) প্রস্তুত করতে গাঢ় HNO3 ব্যবহার করা যায় না । 

*****

Related Items

কয়েকটি জারক ও বিজারক পদার্থ

কয়েকটি জারক পদার্থ - ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড, নাইট্রিক অ্যাসিড, অক্সিজেন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড, ওজোন, পটাশিয়াম ডাই-ক্রোমেট, হাইড্রোজেন পারক্সাইড, ফ্লুওরিন, রেড লেড, তরল ব্রোমিন, ক্লোরিন, কয়েকটি বিজারকের বিজারণ ক্ষমতার উদাহরণ ...

জারণ বিজারণের ইলেক্ট্রনীয় মতবাদ

জারণ ও বিজারণ রসায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া । সাধারণত কোনো মৌলে বা যৌগে অক্সিজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে হাইড্রোজেনের বিযুক্তিকে জারণ এবং কোনো মৌলে বা যৌগে হাইড্রোজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে অক্সিজেনের বিযুক্তিকে বিজারণ বলা হয় । ...

সমযোজী যৌগগুলির বৈশিষ্ট্য

সাধারণ তাপমাত্রায় বেশির ভাগ সমযোজী যৌগ সাধারণত তরল কিংবা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে কিন্তু বেশি আণবিক গুরুত্ববিশিষ্ট সমযোজী মৌল বা যৌগগুলি কঠিন বা তরল হয় । সমযোজী যৌগে সমযোজী বন্ধন দৃঢ় প্রকৃতির, তার ফলে অণুগুলি স্থায়ী হয় । ...

ইলেক্ট্রনীয় যোজ্যতা বা তড়িৎ-যোজ্যতা

সাধারণ অবস্থায় পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন এবং প্রোটন সংখ্যা সমান হওয়ার জন্য পরমাণু নিস্তড়িৎ হয় । সাধারণ নিয়মে পরমাণুর সংযোগ হওয়ার সময় ধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন এবং অধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ করে । ফলে কোনো পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয় ...

সমযোজ্যতা (Covalent)

সমযোজ্যতা: অনেকক্ষেত্রে দুটি পরমাণু সংযোগের সময় প্রত্যেক পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষ থেকে একটি করে ইলেকট্রন এসে ইলেকট্রন জোড় সৃষ্টি করে । এই রকম এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় উভয় পরমাণুর মধ্যে সাধারণভাবে থেকে যৌগ গঠন করে । এই ধরনের যৌগ তৈরি হওয়ার ...