হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি

Submitted by arpita pramanik on Sun, 02/24/2013 - 08:55

HCl -এর জলীয় দ্রবণ অর্থাৎ, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি :

গ্যাসীয় অবস্থায় HCl -কে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (Hydrogen Chloride) বলে । এই গ্যাসের জলীয় দ্রবণকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (Hydrochloric acid) বলে ।  উত্পন্ন হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (Hydrogen Chloride) গ্যাসকে জলে দ্রবীভূত করলে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (Hydrochloric acid) পাওয়া যায় ।

[i] একটি গোলতল ফ্লাস্কের মধ্যে কিছু পরিমাণ সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) নিয়ে ফ্লাস্কের মুখে কর্কের মধ্য দিয়ে একটি দীর্ঘনল ফানেল এবং এবং একটি নির্গম নল লাগিয়ে ফ্লাস্কটিকে দন্ডের সঙ্গে আটকে তারজালির উপর বসানো হয় ।

[ii] নির্গম নলটির অপর প্রান্তটি, একটি ফাঁকা কনিক্যাল ফ্লাস্কের মধ্যে কর্কের মধ্য দিয়ে সামান্য ভিতরে প্রবেশ করানো থাকে ।  

[iii] এই ফ্লাস্কের মুখে কর্কের মধ্য দিয়ে দুবার সমকোণে বাঁকানো আর একটি নল প্রবেশ করানো থাকে । এই নলের এক প্রান্ত কনিক্যাল ফ্লাস্কের তলদেশ পর্যন্ত পৌঁছায় এবং অন্য প্রান্তটির সঙ্গে একটি উল্টানো ফানেল লাগানো থাকে ।

[iv] ফানেলের মুখটি একটি পাত্রে জলের মধ্যে সামান্য ডোবানো থাকে ।

[v] এইবার দীর্ঘনল ফানেলের মধ্য দিয়ে গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4) ঢেলে ফ্লাস্কটিকে বার্নার দিয়ে উত্তপ্ত করা হল । এর ফলে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) গ্যাস উৎপন্ন হয় । এই গ্যাস নির্গম নল দিয়ে বেরিয়ে আসে । যেহেতু HCl গ্যাস জলে খুব দ্রাব্য, সেইজন্য জলে দ্রবীভূত হয়ে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (Hydrochloric acid) উৎপন্ন করে ।

HCl গ্যাসকে সোজাসুজি জলে মিশিয়ে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুত করা যায় না :

কারণ —  হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) গ্যাস জলে খুব দ্রাব্য, তাই ফ্লাস্কে উৎপন্ন HCl নির্গম নলের মাধ্যমে জলের সংস্পর্শে আসা মাত্র সমস্ত HCl গ্যাস জলে দ্রবীভূত হয়ে যাবে; ফলে ফ্লাস্কের মধ্যে শূন্যতার সৃষ্টি হবে, তখন ঠান্ডা জল গরম ফ্লাস্কে প্রবেশ করে গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4) -এর সংস্পর্শে এসে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে । এই জন্য ফ্লাস্কের মধ্যে উৎপন্ন HCl গ্যাসকে সরাসরি জলে দ্রবীভূত করে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুত করা হয় না । 

*****

Related Items

জীবনক্রিয়ায় জৈব যৌগের ভুমিকা

প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহের বেশির ভাগ অংশ জৈব যৌগ দিয়ে গঠিত । তাই জীব জগতে জৈব যৌগের দান অতুলনীয় । জীবন ক্রিয়ার সঙ্গে জৈব যৌগ গভীর ভাবে জড়িত । জীবদেহের জীবনক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য জৈব যৌগের ভূমিকা অপরিসীম । জীবজগতে প্রত্যেক জৈবিক ক্রিয়ার কারণ ...

জৈব যৌগ ও জৈব রসায়ন

কার্বনের যে সমস্ত যৌগ প্রধানত জীবজগতে উত্পন্ন হয় এবং যে সমস্ত যৌগে কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত এবং বৃত্তাকার শৃঙ্খলে যুক্ত থেকে বিভিন্ন সমধর্মী যৌগের শ্রেণি গঠন করতে পারে, সেই সমস্ত যৌগকে সামগ্রিকভাবে জৈব যৌগ বলে ...

কয়েকটি বিশিষ্ট ধাতু-সংকর ও তার ব্যবহার

পিতল, কাঁসা, ব্রোঞ্জ, অ্যালুমিনিয়াম-ব্রোঞ্জ, জার্মান সিলভার, ডুরালুমিন, ম্যাগনেলিয়াম, স্টেইনলেস স্টিল, বাসনপত্র, নল, টেলিস্কোপ, মূর্তি, ব্যারোমিটার, বিভিন্ন যন্ত্রের অংশ, তুলাদন্ড, বিমানের কাঠামো, জলের কল প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ব্যবহার হয় । ...

ধাতু সংকর (Alloy)

দুই বা ততোধিক ধাতু পরস্পর মিশে যে সমসত্ত্ব বা অসমসত্ত্ব মিশ্রণ উত্পন্ন করে, সেই কঠিন ধাতব পদার্থকে ধাতু সংকর বা সংকর ধাতু বলে । যেমন - তামা ও টিনের মিশ্রণে উত্পন্ন কাঁসা হল একটি সংকর ধাতু । অনেক ক্ষেত্রে ধাতু-সংকরে অধাতু থাকতে পারে । ...

তামা বা কপার (Copper)

অতি প্রাচীন কাল থেকে তামা বা কপারের ব্যবহার চলে আসছে । কানাডার লেক সুপিরিয়রের কাছে এবং সাইবেরিয়ার পর্বতে মুক্ত অবস্থায় তামা বা কপার পাওয়া যায় । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কপারকে বিভিন্ন যৌগরূপে প্রকৃতিতে পাওয়া যায় । কপারের প্রধান আকরিকগুলি হল ...