সালফিউরিক অ্যাসিডের ব্যবহার

Submitted by arpita pramanik on Fri, 03/15/2013 - 21:20

সালফিউরিক অ্যাসিডের ব্যবহার :

[i] রসায়নাগারে সালফিউরিক অ্যাসিডকে জারক এবং বিশোষক পদার্থ হিসাবে ব্যবহার হয়, কারণ সালফিউরিক অ্যাসিডের জল শোষণ ক্ষমতা আছে ।

[ii] বিভিন্ন রাসায়নিক সার যেমন- অ্যামোনিয়াম সালফেট, সুপার ফসফেট অফ লাইম প্রস্তুতিতে সালফিউরিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয় ।

[iii] পেট্রোলিয়াম পরিশোধনে বিভিন্ন অজৈব অ্যাসিড যেমন HCl, HNO3, অ্যালাম তৈরি করতে সালফিউরিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয় ।

[iv] স্টোরেজ ব্যাটারিতে সালফিউরিক অ্যাসিডকে ব্যবহার করা হয় ।

[v] বিস্ফোরক দ্রব্য (ট্রাইনাইট্রো গ্লিসারিন -T.N.G,  ট্রাইনাট্রোটলুইন -T.N.T), গ্লুকোজ, ইথার, অ্যালকোহল, কৃত্রিম রেশম প্রস্তুতিতে, ধাতু নিষ্কাশনে সালফিউরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয়ে থাকে ।

[vi] সিন্থেটিক পেন্টস, রঞ্জক পদার্থ ও ওষুধ প্রস্তুতিতে এবং চামড়া ট্যান করা শিল্প ইত্যাদিতে H2SO4 ব্যবহৃত হয় । 

সালফিউরিক অ্যাসিডের মধ্যে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং সালফার আছে— প্রমাণ কর ।

[i] একটি ফ্লাস্কের মধ্যে ঝামা পাথর রেখে লোহিত-তপ্ত করা হল এবং ফ্লাস্কের সঙ্গে যুক্ত একটি বিন্দুপাতী ফানেল থেকে ফোঁটা ফোঁটা গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড তপ্ত ঝামা পাথরের ওপর ফেলা হল । এর ফলে সালফিউরিক অ্যাসিড বিয়োজিত হয়ে যেসব গ্যাস উৎপন্ন করে সেগুলিকে প্রথমে বরফে রাখা U -টিউবের মধ্য দিয়ে, পরে হিম মিশ্রে রাখা অন্য একটি U -টিউবের মধ্যে চালনা করা হল । এর ফলে শেষ U -টিউবটির নির্গম-নল থেকে একটি বর্ণহীন গ্যাস নির্গত হতে দেখা যায় । গ্যাসটির মধ্যে একটি শিখাহীন জ্বলন্ত পাটকাঠি ধরলে তীব্র ভাবে জ্বলে ওঠে এবং নির্গত গ্যাসটি ক্ষারীয় পাইরোগ্যালেট দ্রবণে শোষিত হয় । এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নির্গত গ্যাসটি অক্সিজেন । এই অক্সিজেন সালফিউরিক অ্যাসিড থেকে আসে । 

[ii] বরফে রাখা U -টিউবটির মধ্যে বর্ণহীন তরল জমা হয় যা অনার্দ্র সাদা CuSO4 -কে নীল করে । সুতরাং প্রমাণিত হয় যে, বর্ণহীন তরলটি জল । জলে H2 আছে— এই হাইড্রোজেন আসে সালফিউরিক অ্যাসিড থেকে । 

[iii] হিমমিশ্রে রাখা U -টিউবটির মধ্যে যে হলুদ বর্ণের তরল জমা হয় তাকে একটি বদ্ধ কাঁচের বালবের মধ্যে নিয়ে 150°C উষ্ণতায় উত্তপ্ত করলে হলুদ অধঃক্ষেপ পাওয়া যায়— যাকে পোড়ালে পোড়া বারুদের গন্ধ পাওয়া যায় এবং যা CS2 -তে দ্রবীভূত হয় । সুতরাং প্রমাণিত হল, হলুদ অধঃক্ষেপটি সালফারের । এই সালফার আসে সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4) থেকে ।

বিক্রিয়া : [tex] 2{H_2}S{O_4} = 2{H_2}O + 2S{O_2} + {O_2} [/tex],    [tex] 3S{O_2} + 2{H_2}O = S + 2{H_2}S{O_4} [/tex]

*****

Related Items

জীবনক্রিয়ায় জৈব যৌগের ভুমিকা

প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহের বেশির ভাগ অংশ জৈব যৌগ দিয়ে গঠিত । তাই জীব জগতে জৈব যৌগের দান অতুলনীয় । জীবন ক্রিয়ার সঙ্গে জৈব যৌগ গভীর ভাবে জড়িত । জীবদেহের জীবনক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য জৈব যৌগের ভূমিকা অপরিসীম । জীবজগতে প্রত্যেক জৈবিক ক্রিয়ার কারণ ...

জৈব যৌগ ও জৈব রসায়ন

কার্বনের যে সমস্ত যৌগ প্রধানত জীবজগতে উত্পন্ন হয় এবং যে সমস্ত যৌগে কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত এবং বৃত্তাকার শৃঙ্খলে যুক্ত থেকে বিভিন্ন সমধর্মী যৌগের শ্রেণি গঠন করতে পারে, সেই সমস্ত যৌগকে সামগ্রিকভাবে জৈব যৌগ বলে ...

কয়েকটি বিশিষ্ট ধাতু-সংকর ও তার ব্যবহার

পিতল, কাঁসা, ব্রোঞ্জ, অ্যালুমিনিয়াম-ব্রোঞ্জ, জার্মান সিলভার, ডুরালুমিন, ম্যাগনেলিয়াম, স্টেইনলেস স্টিল, বাসনপত্র, নল, টেলিস্কোপ, মূর্তি, ব্যারোমিটার, বিভিন্ন যন্ত্রের অংশ, তুলাদন্ড, বিমানের কাঠামো, জলের কল প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ব্যবহার হয় । ...

ধাতু সংকর (Alloy)

দুই বা ততোধিক ধাতু পরস্পর মিশে যে সমসত্ত্ব বা অসমসত্ত্ব মিশ্রণ উত্পন্ন করে, সেই কঠিন ধাতব পদার্থকে ধাতু সংকর বা সংকর ধাতু বলে । যেমন - তামা ও টিনের মিশ্রণে উত্পন্ন কাঁসা হল একটি সংকর ধাতু । অনেক ক্ষেত্রে ধাতু-সংকরে অধাতু থাকতে পারে । ...

তামা বা কপার (Copper)

অতি প্রাচীন কাল থেকে তামা বা কপারের ব্যবহার চলে আসছে । কানাডার লেক সুপিরিয়রের কাছে এবং সাইবেরিয়ার পর্বতে মুক্ত অবস্থায় তামা বা কপার পাওয়া যায় । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কপারকে বিভিন্ন যৌগরূপে প্রকৃতিতে পাওয়া যায় । কপারের প্রধান আকরিকগুলি হল ...