পর্যায়, শ্রেণি ও উপশ্রেণি

Submitted by arpita pramanik on Wed, 02/13/2013 - 10:01

পর্যায়, শ্রেণি ও উপশ্রেণি (Periods, Groups and Sub-Groups)

পর্যায় (Periods) : আধুনিক পর্যায়-সারণিতে মেন্ডেলিফ, ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক সংখ্যা অনুযায়ী মৌলগুলিকে পর পর কতকগুলি অনুভূমিক সারিতে (Horizontal row) রাখেন । এর ফলে একই ধর্মের মৌলগুলি এক একটি উলম্ব স্তম্ভের (Vertical column) মধ্যে পড়ে যায় । আবার মৌলগুলিকে এইভাবে সাজাবার ফলে যে অনুভূমিক সারিগুলি পাওয়া যায় তাদের পর্যায় বা Period বলে । মেন্ডেলিফের পর্যায়-সারণিতে সাতটি পর্যায় ছিল । আধুনিক পর্যায়-সারণিতে এইরকম সাতটি পর্যায় আছে । একই পর্যায়ে অবস্থিত বিভিন্ন মৌলগুলির ধর্ম বিভিন্ন হয় । পর্যায়গুলিকে 1, 2, 3, 4, 5, 6, এবং 7 সংখ্যা দ্বারা পরপর চিহ্নিত করা হয় ।

শ্রেণি (Groups) : পর্যায়-সূত্র অনুসারে মৌলগুলিকে ওদের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক সংখ্যা অনুযায়ী পর পর কয়েকটি অনুভূমিক সারিতে সাজানোর ফলে দেখা গেল যে একই ধর্মবিশিষ্ট মৌলগুলি এক একটি উলম্ব স্থম্ভের মধ্যে পড়ে । পর্যায়-সারণির এই উলম্ব স্থম্ভগুলিকে শ্রেণি বা গ্রুপ বলে । নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি তখনও আবিষ্কৃত হয়নি বলে মেন্ডেলিফের পর্যায়-সারণিতে মোট আটটি শ্রেণি ছিল— শূন্য শ্রেণি বলতে কিছু ছিল না । নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি আবিষ্কারের পর বর্তমানে পর্যায়-সারণিতে শ্রেণির সংখ্যা মোট নয়টি । প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণিকে I থেকে VIII পর্যন্ত রোমান হরফের সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা হয় । অষ্টম শ্রেণির পরের শ্রেণি, অর্থাৎ নবন শ্রেণিকে '0' দ্বারা প্রকাশ করা হয় ।

(i) প্রথম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণিকে স্বাভাবিক শ্রেণি বলে ।

(ii) অষ্টম শ্রেণিকে সন্ধিগত মৌল শ্রেণি বলে । 4 থেকে 7 পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ের অষ্টম শ্রেণিতে তিনটি করে মৌল আছে ।  

(iii) শূন্য শ্রেণি অর্থাৎ নবম শ্রেণিকে সম্ভ্রান্ত (noble) বা নিষ্ক্রিয় (inert) গ্যাসের শ্রেণি বলে । 

উপশ্রেণি (Sub-Groups) : প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির প্রতিটি শ্রেণিকে আবার দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছে । এই শ্রেণিগুলিকে উপশ্রেণি বলে । দীর্ঘ পর্যায়ে (4 থেকে 7 পর্যায়) কোনো শ্রেণির বামদিকে যে মৌলগুলি স্থান পায়, সেইগুলিকে উপশ্রেণি A -এর অন্তর্ভুক্ত এবং ডানদিকে যে মৌলগুলি স্থান পায়, সেগুলোকে উপশ্রেণি B -এর অন্তর্ভুক্ত বলে ধরা হয় । IA উপশ্রেণিতে H,  Li,  Na,  K,  Rb,  Cs,এবং Fr স্থান পেয়েছে । আবার IB উপশ্রেণিতে Cu,  Ag এবং Au স্থান পেয়েছে । তেমনি VIIA উপশ্রেণিতে Mn,  Tc,  Re, এবং VIIB উপশ্রেণিতে F,  Cl,  Br, I এবং At (অ্যাসটাটাইন) স্থান পেয়েছে । মৌলগুলিকে এইভাবে সাজানোর ফলে দেখা গেছে যে, কোনো শ্রেণির একই উপশ্রেণিতে অবস্থিত মৌলগুলির ধর্মের মধ্যে মোটামুটি মিল আছে । কিন্তু A উপশ্রেণির মৌলগুলির সঙ্গে B উপশ্রেণির মৌলগুলি সমধর্মী নয় ।

*****

Related Items

জীবনক্রিয়ায় জৈব যৌগের ভুমিকা

প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহের বেশির ভাগ অংশ জৈব যৌগ দিয়ে গঠিত । তাই জীব জগতে জৈব যৌগের দান অতুলনীয় । জীবন ক্রিয়ার সঙ্গে জৈব যৌগ গভীর ভাবে জড়িত । জীবদেহের জীবনক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য জৈব যৌগের ভূমিকা অপরিসীম । জীবজগতে প্রত্যেক জৈবিক ক্রিয়ার কারণ ...

জৈব যৌগ ও জৈব রসায়ন

কার্বনের যে সমস্ত যৌগ প্রধানত জীবজগতে উত্পন্ন হয় এবং যে সমস্ত যৌগে কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত এবং বৃত্তাকার শৃঙ্খলে যুক্ত থেকে বিভিন্ন সমধর্মী যৌগের শ্রেণি গঠন করতে পারে, সেই সমস্ত যৌগকে সামগ্রিকভাবে জৈব যৌগ বলে ...

কয়েকটি বিশিষ্ট ধাতু-সংকর ও তার ব্যবহার

পিতল, কাঁসা, ব্রোঞ্জ, অ্যালুমিনিয়াম-ব্রোঞ্জ, জার্মান সিলভার, ডুরালুমিন, ম্যাগনেলিয়াম, স্টেইনলেস স্টিল, বাসনপত্র, নল, টেলিস্কোপ, মূর্তি, ব্যারোমিটার, বিভিন্ন যন্ত্রের অংশ, তুলাদন্ড, বিমানের কাঠামো, জলের কল প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ব্যবহার হয় । ...

ধাতু সংকর (Alloy)

দুই বা ততোধিক ধাতু পরস্পর মিশে যে সমসত্ত্ব বা অসমসত্ত্ব মিশ্রণ উত্পন্ন করে, সেই কঠিন ধাতব পদার্থকে ধাতু সংকর বা সংকর ধাতু বলে । যেমন - তামা ও টিনের মিশ্রণে উত্পন্ন কাঁসা হল একটি সংকর ধাতু । অনেক ক্ষেত্রে ধাতু-সংকরে অধাতু থাকতে পারে । ...

তামা বা কপার (Copper)

অতি প্রাচীন কাল থেকে তামা বা কপারের ব্যবহার চলে আসছে । কানাডার লেক সুপিরিয়রের কাছে এবং সাইবেরিয়ার পর্বতে মুক্ত অবস্থায় তামা বা কপার পাওয়া যায় । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কপারকে বিভিন্ন যৌগরূপে প্রকৃতিতে পাওয়া যায় । কপারের প্রধান আকরিকগুলি হল ...