পরমাণুর ধারণা ও পরমাণুর গঠন

Submitted by arpita pramanik on Sun, 01/06/2013 - 16:05

পরমাণুর ধারণা ও পরমাণুর গঠন

পরমাণুর ধারণা এবং ডালটনের পরমাণুবাদ (Concept of Atom and Dalton's Atomic Theory)

1808 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার জন ডালটন পদার্থের গঠন সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রকাশ করেন । এই তত্ত্বটি ডালটনের পরমাণুবাদ (Dalton's Atomic Theory) নামে খ্যাত । পরমাণুবাদের মূল কথাগুলি হল :

(১) সব পদার্থই অসংখ্য অতি ক্ষুদ্র অবিভাজ্য নিরেট কণা দ্বারা গঠিত । পদার্থের এই ক্ষুদ্রতম কণার নাম পরমাণু (atom) ।

(২) পরমাণুগুলিকে রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা ভাঙ্গা যায় না, সৃষ্টি করা যায় না বা ধ্বংস করা যায় না । পরমাণু অবিনশ্বর ও অবিভাজ্য ।

(৩) একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি ওজনে ও ধর্মে অভিন্ন ।

(৪) বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি ওজনে ও ধর্মে ভিন্ন ।

(৫) বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি পূর্ণসংখ্যার সরল অনুপাতে পরস্পর যুক্ত হয়ে যৌগিক পদার্থ উৎপন্ন করে । যেমন — 1 : 1,  1 : 2,  2 :  3 ইত্যাদি ।

(৬) একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি এক বা একের অধিক অনুপাতে যুক্ত হয়ে একাধিক যৌগিক পদার্থ উৎপন্ন করে । যেমন — NO,  NO2,  H2O,  H2O2 ..... ইত্যাদি ।

পরমাণুর গঠন (Structure of Atom)

পদার্থের পরমাণু সাধারণত ইলেকট্রন, প্রোটননিউট্রন এই তিনটি মূল কণা নিয়ে গঠিত । কেবলমাত্র সাধারণ হাইড্রোজেনের পরমাণুতে নিউট্রন নেই । প্রত্যেক পরমাণু দুটি অংশে বিভক্ত । যথা —

(i) ধনাত্মক তড়িৎযুক্ত পরমাণু-কেন্দ্রক বা পরমাণুর নিউক্লিয়াস (nucleus)

(ii) নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন-মহল (extra nuclear electrons) । 

 

(i) ধনাত্মক তড়িৎযুক্ত পরমাণু-কেন্দ্রক বা পরমাণুর নিউক্লিয়াস : বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড সোনার পাতে আলফা কণার (α -কণা) বিক্ষেপ পরীক্ষা করে প্রথম নিউক্লিয়াসের ধারণা করেন । পরীক্ষা লব্ধ ফল বিশ্লেষণ করে রাদারফোর্ড সিদ্ধান্ত করেন যে— পরমাণুর কেন্দ্রে একটি ক্ষুদ্র স্থানে পরমাণুর প্রায় সমগ্র ভর এবং ধনাত্মক আধান সঞ্চিত থাকে । পরমাণুর কেন্দ্রে ধনাত্মক আধানযুক্ত, ভারী ও অতি ক্ষুদ্র অংশটির নাম পরমাণু-কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস

(ii) নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন মহল : তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণুতে প্রোটন ও ইলেকট্রন সমান সংখ্যায় থাকে । ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের বাইরে পরমাণুর বাকি অংশে বিভিন্ন কক্ষে বিন্যস্ত থাকে । ইলেকট্রনের এই বিন্যাসকে ইলেকট্রন-মহল বলে ।

*****

Related Items

গ্যাসের সূত্রাবলি (Gas laws)

চাপ ও উষ্ণতার পরিবর্তনের সঙ্গে গ্যাসের আয়তনের পরিবর্তনের সূত্রগুলিকে গ্যাসের সুত্র বলে । বয়েলের সূত্র :- উষ্ণতা স্থির থাকলে, নির্দিষ্ট ভরের যে কোনো গ্যাসের আয়তন ওই গ্যাসের চাপের সঙ্গে ব্যাস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয় ।

গ্যাসের ধর্ম ও গ্যাসের চাপ

গ্যাসীয় পদার্থের কোনো নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন নেই । যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের সমগ্র আয়তন জুড়ে থাকে । গ্যাস অণুর ধর্মই হল চারিদিকে ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়া । অণুগুলির গতির জন্যই গ্যাসের প্রবাহী ধর্ম দেখা যায় । স্থির উষ্ণতায় গ্যাসের ওপর চাপ প্রয়োগ করলে কিংবা ...

আয়ন ও ক্যাটায়ন

সাধারণ অবস্থায় যে-কোনো পরমাণু নিস্তড়িৎ । অর্থাৎ পরমাণুর মধ্যে প্রোটন সংখ্যা = ইলেকট্রন সংখ্যা । যখন কোনো পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষ থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গৃহিত হয়, তখন ওই পরমাণুটি তড়িৎগ্রস্থ কণায় পরিণত হয় । ...

নিউক্লাইড (Nuclide)

শুধুমাত্র পারমাণবিক সংখ্যা (বা প্রোটন সংখ্যা) জানা থাকলে মৌলটিকে শনাক্ত করা যায়, কিন্তু ওই মৌলের সমস্থানিক থাকলে তার নিউক্লিয়াসকে শনাক্ত করা যায় না । কারণ একই মৌলের সমস্থানিক পরমাণুগুলির নিউক্লিয়াসগুলিতে প্রোটন সংখ্যা একই থাকলেও ...

আইসোটোপ বা সমস্থানিক (Isotope)

একটি মৌলের বিভিন্ন পরমাণু যাদের পারমাণবিক সংখ্যা অর্থাৎ, প্রোটন সংখ্যা একই কিন্তু নিউক্লিয়াসে বিভিন্ন সংখ্যক নিউট্রন থাকার জন্য পারমাণবিক ভর অর্থাৎ ভর-সংখ্যা বিভিন্ন হয়, তাদের আইসোটোপ বা সমস্থানিক বলে । সমস্থানিক পরমাণুগুলির মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য ...