তড়িতাধানের প্রবাহ - তড়িৎপ্রবাহ

Submitted by arpita pramanik on Wed, 01/16/2013 - 20:39

তড়িতাধানের প্রবাহ - তড়িৎপ্রবাহ (Current - Charges in motion) :

কোনো পরিবাহী দিয়ে তড়িতাধানের প্রবাহ হলে তাকে তড়িৎপ্রবাহ বলা হয় । কিন্তু আধান ধনাত্মক ও ঋণাত্মক উভয় প্রকার হতে পারে । সুতরাং, কোন প্রকার আধানের প্রবাহ হলে তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টি হয় তা বোঝা দরকার । প্রচলিত নিয়ম হল, পরিবাহী দিয়ে ধনাত্মক আধানের প্রবাহ হলে তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টি হয় ।

ধরা যাক, X এবং Y দুটি বিন্দু । মনে করা যাক, X এবং Y বিন্দুর তড়িৎ-অবস্থা এমন যে ওই বিন্দু দুটিকে কোনো পরিবাহীর তার দিয়ে যুক্ত করলে X থেকে Y বিন্দুতে ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হয় । X এবং Y বিন্দুর এই তড়িৎ-অবস্থাকে বলা হয় তাদের তড়িৎ-বিভব এবং এক্ষেত্রে X বিন্দুর বিভব উচ্চতর এবং Y বিন্দুর বিভব নিম্নতর । সুতরাং X বিন্দু থেকে Y বিন্দুতে ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হবে— এটাই তড়িৎ-প্রবাহের দিক নির্দেশের প্রচলিত নিয়ম ।

আধুনিক ইলেকট্রনীয় মতবাদ অনুযায়ী তড়িৎ প্রবাহের দিক নির্দেশের নিয়ম অন্য রকম । এই মতবাদ অনুসারে যে-কোনো ধাতব পরিবাহীতে প্রচুর পরিমাণে ঋণাত্মক তড়িৎযুক্ত স্বাধীন ইলেকট্রন (free electron) থাকে— যারা ওই পরিবাহীর কোনো বিশেষ অণুর সঙ্গে যুক্ত নয় । ধাতব পরিবাহীর ভিতরে এই ইলেকট্রনগুলি এলোমেলোভাবে ঘুরে বেড়ায় । যখন পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব অসম হয়, তখন নিম্নবিভব প্রান্ত থেকে উচ্চবিভব প্রান্তের দিকে ওই ইলেকট্রনগুলির প্রবাহ ঘটে । এই প্রবাহের ফলেই তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টি হয় । সুতরাং, ধাতু বা সুপরিবাহী পদার্থে তড়িৎপ্রবাহের প্রচলিত অভিমুখ এবং ইলেকট্রনের প্রবাহের অভিমুখ পরস্পর বিপরীত ।

যদি কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে t সেকেন্ড সময়ে q পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয়, তাহলে তড়িৎপ্রবাহ মাত্রা (current strength) । আধানের SI একক কুলম্ব (C) ।

তড়িৎপ্রবাহ মাত্রার একক = (কুলম্ব / সেকেন্ড) = অ্যাম্পিয়ার (A) । এছাড়া ক্ষুদ্রতর একক মিলি-অ্যাম্পিয়ার (1mA = 10-3A) এবং মাইক্রো-অ্যাম্পিয়ার (1µA = 10-6A) -এদেরও ব্যবহার আছে । তড়িৎপ্রবাহের মাত্রা = (A); তড়িতাধানের মাত্রা = (AT)

তড়িৎপ্রবাহ যদি সব সময় একই দিকে প্রবাহিত হয়, তাহলে সেই তড়িৎপ্রবাহকে সমপ্রবাহ (direct current বা D.C.) বলে । কিন্তু যদি তড়িৎপ্রবাহের দিক সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়, তাহলে তাকে পরিবর্তী প্রবাহ (alternating current বা  A.C.) বলে ।

তড়িৎপ্রবাহ ভেক্টর রাশি নয়, এটি একটি স্কেলার রাশি । কারণ তড়িৎপ্রবাহ ভেক্টর যোগের সূত্র মেনে চলে না ।

*****

Related Items

লোহা বা আয়রন (Iron)

আয়রনকে প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না । পৃথিবীতে বিভিন্ন স্থানে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের আকরিক পাওয়া যায়। ভারতের বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, কর্ণাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে লোহার আকরিক পাওয়া যায় । ভূ-ত্বকে আয়রনের পরিমাণ 4.12 শতাংশ। ...

দস্তা বা জিঙ্ক (Zinc)

জিঙ্ক ধাতুকে প্রকৃতির মধ্যে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না । জিঙ্কের প্রধান আকরিকগুলি জিঙ্কাইট ক্যালামাইন , জিঙ্কব্লেন্ড। জিঙ্কব্লেন্ড জিঙ্কের প্রধান আকরিক । ভারতের রাজস্থান, বিহার, পাঞ্জাব ও তামিলনাড়ুতে জিঙ্কব্লেন্ড পাওয়া যায় । ...

ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium)

ম্যাগনেসিয়ামকে প্রকৃতির মধ্যে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না । এর নানা রকম যৌগ প্রচুর পরিমাণে প্রকৃতিতে পাওয়া যায় । ম্যাগনেসিয়ামের সংকেত-Mg পারমাণবিক সংখ্যা- 12 পারমাণবিক ভর- 24.3 যোজ্যতা- 2 । এর প্রধান আকরিকগুলি হল ..

অ্যালুমিনিয়াম (Aluminium)

অ্যালুমিনিয়াম ধাতুকে মুক্ত অবস্থায় প্রকৃতির মধ্যে পাওয়া যায় না । যৌগরূপে এই ধাতুকে প্রকৃতির মধ্যে প্রচুর পাওয়া যায় । ভু-পৃষ্ঠের সব ধাতুর মধ্যে অ্যালুমিনিয়ামের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। বিমান ও মোটর গাড়ির কাঠামো প্রস্তুতিতে, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক তার তৈরিতে অ্যালুমিনিয়াম ...

খনিজ ও আকরিক

যেসব খনিজ থেকে সহজে ও সুলভে প্রয়োজনীয় ধাতু নিষ্কাশন করা যায়, তাদের ওই ধাতুর আকরিক বলে । কোনো ধাতুর সব খনিজই খরচ ও সহজ লভ্যতার প্রেক্ষিতে ধাতু নিষ্কাশনের উপযুক্ত নাও হতে পারে । যে কারণে বলা হয়— কোনো ধাতুর আকরিকগুলি এর খনিজ, কিন্তু যেকোনো খনিজই ...