তেজস্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্য

Submitted by arpita pramanik on Tue, 02/12/2013 - 18:55

তেজস্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Radioactivity) :

বিভিন্ন গবেষণার পর তেজস্ক্রিয়তা সম্বন্ধে নীচের বিষয়গুলি জানা যায় ।

[i] তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণরূপে একটি নিউক্লীয় ঘটনা (nuclear phenomenon) । এর সঙ্গে নিউক্লিয়াস বহির্ভূত ইলেকট্রনের কোনো সম্পর্ক নেই ।

[ii] যে সকল মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা 83 -এর বেশি হয়, কেবলমাত্র তারাই তেজস্ক্রিয়তা দেখায় । হালকা মৌলের ভিতর তেজস্ক্রিয়তা দেখা যায় না ।

[iii] তেজস্ক্রিয় বিকিরণে তিন রকম রশ্মি আছে । এদের বলা হয় α -রশ্মি, ß -রশ্মি এবং [tex]\gamma [/tex] -রশ্মি

[iv] তেজস্ক্রিয়তা হল নিউক্লিয়াসের ভাঙ্গন বা বিঘটন । এই বিঘটনের ফলে একটি মৌল সম্পূর্ণ ভিন্ন রাসায়নিক ও ভৌত ধর্মাবলী বিশিষ্ট নতুন মৌলে রূপান্তরিত হয় । তেজস্ক্রিয় বিঘটন সম্পর্কে রাদারফোর্ড ও সডি -র উপস্থাপিত সূত্রগুলি হল :

(a) তেজস্ক্রিয় বিঘটনে নিউক্লিয়াস থেকে আলফা এবং বিটা কণা কখনও একসঙ্গে নির্গত হয় না । কিংবা একটির বেশি আলফা কণা বা একটির বেশি বিটা কণা একসাথে নির্গত হয় না ।

(b) একটি α -কণা নির্গত হলে মৌলটির পরমাণু একটি সম্পূর্ণ নতুন মৌলের পরমাণুতে রূপান্তরিত হয় । এই পরমাণুর ভরসংখ্যা (A) এবং পারমাণবিক সংখ্যা (Z) পূর্বের পরমাণু অপেক্ষা যথাক্রমে 4 একক এবং 2 একক কম । যেমন— [tex]{}_{88}R{a^{226}}\buildrel \alpha \over \longrightarrow {}_{86}R{n^{222}}[/tex]

এক্ষেত্রে [tex]R{a^{226}}[/tex] -জনক পরমাণু (parent atom) এবং [tex]R{n^{222}}[/tex] -কে দুহিতা পরমাণু (Daughter atom) বলে  । 

(c) একটি ß -কণা নির্গত হলে একটি নিউট্রন একটি প্রোটনে রূপান্তরিত হয়, ফলে যে নতুন মৌলের পরমাণু গঠিত হয়, তার ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা 1 একক বৃদ্ধি পায় ।  [tex]{}_{82}Ra{B^{214}} \buildrel \beta \over \longrightarrow {}_{83}Ra{C^{214}}[/tex]

(d) তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফুর্ত প্রাকৃতিক ঘটনা । বাইরের কোনো প্রক্রিয়া অর্থাৎ উত্তপ্তকরণ, শীতলীকরণ, চাপ প্রয়োগ, তড়িৎ বা চৌম্বকক্ষেত্রের প্রয়োগ, রাসায়নিক বিক্রিয়া ইত্যাদি কোনো রকম বাহ্য প্রক্রিয়াই একে প্রভাবিত করতে পারে না ।

(e) গামা রশ্মির নিঃসরণ : তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াস থেকে একটি α -কণা কিংবা একটি ß -কণা নিঃসৃত হওয়ার ফলে পরমাণুর নিউক্লিয়াসটি উদ্দীপিত অবস্থায় থাকে । ওই উদ্দীপিত নিউক্লিয়াস মুহুর্তের মধ্যে স্বাভাবিক নিম্ন শক্তি স্তরে ফিরে আসে এবং ওই দুই অবস্থার শক্তির পার্থক্য [tex] \gamma [/tex] -রশ্মি ফোটনের আকারে নির্গত হয় । [tex] \gamma [/tex] -রশ্মি নির্গমনের ফলে নিউক্লিয়াসের ভর-সংখ্যা অথবা পারমাণবিক সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না— কেবল শক্তির পরিবর্তন ঘটে ।

*****

Related Items

বর্ণালি (Spectrum)

সাদা আলো প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের ফলে বিশ্লিষ্ট হয়ে সাতটি বিভিন্ন বর্ণের আলোকগুচ্ছে পরিণত হয় । প্রিজম থেকে নির্গত এই আলোকগুচ্ছকে পর্দায় ফেললে, পর্দায় ওই সাতটি বিভিন্ন বর্ণের আলোক দ্বারা তৈরি চওড়া যে পটি পাওয়া যায়, তাকে বর্ণালি বলে । ...

আলোর বিচ্ছুরণ (Dispersion of light)

সাদা কিংবা কোনো বহুবর্ণী রশ্মিগুচ্ছের বিভিন্ন বর্ণে বিভাজিত হওয়ার ঘটনাকে আলোর বিচ্ছুরণ বলে । স্যার আইজ্যাক নিউটন আলোর বিচ্ছুরণ আবিষ্কার করেন । তিনি দেখতে পান যে, সূর্য রশ্মি (সাদা আলো) কাচের প্রিজমের ভিতর দিয়ে গেলে সাতটি বিভিন্ন বর্ণের রশ্মিতে ...

উত্তল লেন্স দ্বারা সৃষ্ট সদ্ ও অসদ প্রতিবিম্ব

উত্তল লেন্সের সাহায্যে বস্তুর যে প্রতিবিম্ব গঠিত হয়, তা লেন্সের চারটি ধর্মের ওপর নির্ভর করে । যে আলোক-রশ্মি লেন্সের আলোক কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে যায়, প্রতিসরণের পর তার অভিমুখের কোনো পরিবর্তন হয় না । সদ্ ও অসদ বিম্বের মধ্যে পার্থক্য, লেন্স দ্বারা লক্ষবস্তুর যে প্রতিবিম্ব গঠিত ...

লেন্স সংক্রান্ত কয়েকটি সংজ্ঞা

লেন্সের উভয় তলই যদি গোলীয় হয় তবে এরা প্রত্যেকে একটি নির্দিষ্ট গোলকের অংশ হবে ।ওই গোলকের কেন্দ্রকে ওই তলের বক্রতা কেন্দ্র বলে । লেন্সের কোনো তল যে গোলকের অংশ হবে ওই গোলকের ব্যাসার্ধকে ওই তলের বক্রতা ব্যাসার্ধ বলে । যদি লেন্সের দুই তল গোলীয় হয় ...

আলোর প্রতিসরণ এবং ফোকাসিং ক্রিয়া

একটি উত্তল কিংবা অবতল লেন্সকে কয়েকটি ছোটো ছোটো খন্ডিত প্রিজমের সমষ্টি বলে মনে করা যেতে পারে । উত্তল লেন্সের ক্ষেত্রে এই প্রিজমগুলির ভূমি লেন্সের কেন্দ্রের দিকে অভিমুখী এবং লেন্সের কেন্দ্র থেকে যে প্রিজমটি যত দূরবর্তী তার প্রতিসারক কোণ তত বেশি । ...