তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার, দুষণ ও সতর্কীকরণ

Submitted by arpita pramanik on Tue, 02/12/2013 - 20:21

তেজস্ক্রিয়া একটি নিউক্লীয় ঘটনা, বিপদ, নিরাপত্তা এবং সতর্কীকরণ (Radioactivity is a nuclear phenomenon, hazards,safety and precautions) :

তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার :- তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণরূপে একটি নিউক্লীয় ঘটনা । প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াসের ভাঙ্গনের ফলে যে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সৃষ্টি হয় তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞান, কৃষিকার্য, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । রোগ নির্ণয় এবং রোগ নিরাময় করার জন্য চিকিৎসকদের কাছে বিভিন্ন ধরনের তেজস্ক্রিয় সমস্থানিক আজ একটি অব্যর্থ হাতিয়ায় । 

কিন্তু প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয় পদার্থের অসতর্ক ব্যবহার ও কৃত্রিম উপায়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থের অসতর্ক উৎপাদন ও ব্যবহারের সময় তেজস্ক্রিয় রশ্মির বিকিরণ জনিত কারণে পরিবেশে যে তেজস্ক্রিয় দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে, তা সমগ্র জীব জগতের বিপদের কারণ হয়ে উঠেছে ।

তেজস্ক্রিয় দুষণের কারণ : মহাশূন্য থেকে মহাজাগতিক রশ্মির (cosmic rays) বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ, ভূত্বকে বর্তমান তেজস্ক্রিয় মৌলের বিকিরণ, বায়ুমণ্ডল ও বারিমন্ডলে তেজস্ক্রিয় দূষণ সৃষ্টি করে, যার প্রভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয় । পারমাণবিক চুল্লি থেকে যে জ্বালানি অবশেষ বা বর্জ্য পদার্থ নির্গত হয় তাতে নানা রকম মারাত্মক তেজস্ক্রিয় পদার্থ উপস্থিত থাকে । এই তেজস্ক্রিয় মৌলগুলি পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর । হাসপাতাল গবেষণাগার ও ওষুধ তৈরির কারখানা থেকে নিঃসৃত বর্জ্য জলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ উপস্থিত থাকে । ওই জল নদীর জলে মিশ্রিত হয়ে পরিবেশ দূষণকে বাড়িয়ে দেয় ।

তেজস্ক্রিয় দুষণের প্রভাব : ফুসফুস, যকৃতের ক্ষত, ক্যান্সার, রক্তাল্পতা ও রক্ত ক্যান্সার, অস্বাভাবিক, অপূর্ণাঙ্গ ও মৃত শিশুর জন্ম, জরায়ুর ক্যান্সার, স্নায়বিক বৈকল্য ও স্মৃতিশক্তির হ্রাস, দৃষ্টি হীনতা, চামড়া ও হাড়ের ক্যান্সার ইত্যাদি ।

তেজস্ক্রিয় দুষণ নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ :

[i] পানীয় জল এবং খাদ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা এবং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ সুনিশ্চিত করা ।

[ii] শিল্পজাত বর্জ্য পদার্থ উপযুক্ত প্রক্রিয়াকরণের পর নদীতে বা সমুদ্রে নিক্ষেপ করা ।

[iii] তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহারকারী শিল্পসংস্থা বা প্লান্ট স্থাপনের পূর্বে 'দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের' ছাড়পত্র নেওয়া । 

[iv] শিল্পসংস্থা, ল্যাবরেটরি ও হাসপাতাল প্রভৃতিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সুনিশ্চিত করা ।

[v] তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করার সময় তেজস্ক্রিয় প্রতিহত করার আবরণ বা বর্ম ব্যবহার করা কিংবা দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এরকম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া ।

[vi] দূর দেশে তেজস্ক্রিয় পদার্থকে পাঠাতে মোটা পাতের সীসার আচ্ছাদন ব্যবহার সুনিশ্চিত করা ।

[vii] পারমাণবিক চুল্লিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় উপযুক্ত ভেন্টিলেসন বা উঁচু চিমনি ব্যবহার সুনিশ্চিত করা ইত্যাদি ।  

*****

 

Related Items

অ্যাভোগাড্রোর সূত্রের অনুসিদ্ধান্ত

অ্যাভোগাড্রোর সূত্র থেকে নিম্নলিখিত অনুসিদ্ধান্তগুলি পাওয়া যায়— নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি ছাড়া অন্যান্য মৌলিক গ্যাসগুলি (যেমন— হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি) দ্বি-পরমাণুক । কোনো গ্যাসের আণবিক ভর [M] গ্যাসটির বাষ্প ঘনত্বের [D] দ্বিগুণ অর্থাৎ, M = 2D ।

আণবিক ভর ও গ্রাম-পারমাণবিক ভর

আণবিক ভর ও গ্রাম-পারমাণবিক ভর :

আণবিক ভর (Molecular mass) :

কোনো মৌল বা যৌগের একটি অণু একটি কার্বন -12 (C12) পরমাণুর ভরের 1/12 অংশের তুলনায় যতগুণ ভারী, সেই তুলনামূলক সংখ্যাটিকে ওই মৌল বা যৌগের আণবিক ভর বলে

অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্প

একই চাপ ও উষ্ণতায় সম-আয়তন সকল গ্যাসের মধ্যে সমান সংখ্যক অণু থাকে । বার্জিলিয়াসের প্রকল্প সংশোধন করে অ্যাভোগাড্রো এই প্রকল্পটি প্রকাশ করেন । এটি অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্প নামে খ্যাত । অ্যাভোগাড্রোর সূত্রের সাহায্যে গ্যাস-আয়তন সূত্র এবং পরমাণুবাদের মধ্যে সমন্বয় ...

অণুর ধারণা ও প্রকারভেদ

বিজ্ঞানী ডালটনের পরমাণুবাদের মূল কথা হল— প্রত্যেক মৌলিক পদার্থ বহু সংখ্যক অতি ক্ষুদ্র অবিভাজ্য কণা দিয়ে গঠিত । এই ক্ষুদ্রতম কণাগুলির নাম হল পরমাণু । রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি পূর্ণ সংখ্যার সরল অনুপাতে যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে । ...

গাণিতিক প্রশ্নোত্তর : গ্যাসের ধর্ম

গ্যাসের ধর্ম সম্পর্কিত গাণিতিক উদাহরণ । বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষায় আগত প্রশ্নপত্র এবং বিভিন্ন কম্পিটিটিভ এক্সাম এ আগত গাণিতিক প্রশ্নের সমাধান আলোচনা করা হলো । ...