তপ্ত ক্যাথোড-রশ্মি নল

Submitted by arpita pramanik on Fri, 02/01/2013 - 12:59

তপ্ত ক্যাথোড-রশ্মি নল (Hot cathode ray tube) :

এটি প্রধানত একটি বায়ুশূন্য কাচের নল । নলটির ভিতরের দেওয়ালে পরিবাহী পদার্থের আস্তরণ লাগানো থাকে । ক্যাথোড C হল ইলেকট্রনের উৎস । যখন তড়িৎপ্রবাহ পাঠিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একে উত্তপ্ত করা হয় তখন এ থেকে ইলেকট্রন নির্গত হয় । G হল গ্রিড, এটি নিকেলের তৈরি একটি চোঙ । এই গ্রিড ক্যাথোডকে সম্পূর্ণ ভাবে ঘিরে থাকে । ক্যাথোডের সাপেক্ষে গ্রিডকে ঋণাত্মক বিভবে রাখা হয় যাতে ক্যাথোড থেকে নির্গত ইলেকট্রনের স্রোত গ্রিডের বিকর্ষী ক্রিয়ায় একটি সরু রশ্মিতে পরিণত হয় । কেন্দ্রে ছিদ্রযুক্ত দুটি অ্যানোড চাকতি A1 ও A3 এবং চোঙাকৃতি একটি অ্যানোড A2 চিত্রের মতো থাকে । অ্যানোডগুলি ধনাত্মক বিভবে থাকে । A1 থেকে A2 উচ্চতর বিভবে এবং A2 থেকে A3 উচ্চতর বিভবে থাকে ।  A1, A2 ও A3 -এর ভিতর দিয়ে যাওয়ার ফলে ইলেকট্রন রশ্মি (ক্যাথোড রশ্মি) খুব সরু হয় এবং ইলেকট্রনগুলি উচ্চ বেগপ্রাপ্ত হয় । S হল একটি পর্দা যার ভিতরের পৃষ্ঠে প্রতিপ্রভ পদার্থের প্রলেপ লাগানো থাকে । ইলেকট্রন-রশ্মি আপতিত হলে পর্দায় একটি উজ্জ্বল আলোক বিন্দু গঠিত হয় । A3 এবং পর্দা S একই বিভবে যুক্ত থাকে । একজোড়া বিক্ষেপী প্লেট MM তে বিভব প্রভেদ প্রয়োগ করলে ইলেকট্রন-রশ্মির উলম্ব তলে বিক্ষেপ ঘটে এবং অপর একজোড়া প্লেট NN তে বিভব প্রভেদ প্রয়োগ করলে রশ্মি অনুভূমিক তলে বিক্ষিপ্ত হয় । NN এবং MM প্লেটে প্রযুক্ত বিভবের পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে পর্দার ওপর আলোক বিন্দু ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন করে, যার ফলে পর্দায় একটি আলোকিত চিত্র দেখা যায় । রেডিয়ো ইঞ্জিনিয়ারিং -এ, রাডারের ক্ষেত্রে, টেলিভিশন ইত্যাদিতে তপ্ত ক্যাথোড রশ্মি নল ব্যবহার করা হয় ।

 

*****

Comments

Related Items

পরমাণুর ইলেক্ট্রনের বন্টন

ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের চারিদিকে শূন্যস্থানে সমকেন্দ্রিক কিন্তু বিভিন্ন তলে অবস্থিত ক্রমবর্ধমান ব্যাসার্ধের বৃত্তাকার এবং উপবৃত্তাকার কক্ষপথে তীব্রবেগে আবর্তন করে । উপবৃত্তের যে-কোনো একটি ফোকাসে পরমাণুর কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস অবস্থান করে ...

সৌর জগৎ ও পরমাণুর গঠন

লর্ড রাদারফোর্ডের কল্পনা অনুযায়ী পরমাণুর গঠন অনেকটা সৌরজগতের মতো। সৌরজগতের সঙ্গে পরমাণুর গঠনের সাদৃশ্য- সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি ইত্যাদি গ্রহ বিভিন্ন কক্ষ পথে আবর্তন করে । পরমাণুতে নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ...

মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস

হাইড্রোজেন, হিলিয়াম (নিষ্ক্রিয়), লিথিয়াম, বেরিলিন, বোরন, কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফ্লুওরিন, নিয়ন (নিষ্ক্রিয়), সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, ফসফরাস, সালফার, ক্লোরিন, আর্গন (নিষ্ক্রিয়), পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম ...

নিউক্লিয়াসের গঠন ও নিউক্লীয় বল

নিউক্লিয়াসের প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যা বিভিন্ন মৌলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন । তবে হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াসে কেবলমাত্র একটি প্রোটন আছে, কোনো নিউট্রন নেই । নিউক্লিয়াসের মূল কণাগুলিকে (প্রোটন ও নিউট্রন) সাধারণভাবে নিউক্লিয়ন [nucleon] বলা হয় । ...

পরমাণুর ধারণা ও পরমাণুর গঠন

1808 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার জন ডালটন পদার্থের গঠন সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রকাশ করেন । এই তত্ত্বটি ডালটনের পরমাণুবাদ (Dalton's Atomic Theory) নামে খ্যাত । পরমাণুবাদের মূল কথাগুলি হল : ...