জারণ ও বিজারণ একসঙ্গে ঘটে

Submitted by arpita pramanik on Sat, 02/16/2013 - 13:02

জারণ ও বিজারণ একসঙ্গে ঘটে (Oxidation and reduction take place simultaneously) :

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ প্রক্রিয়া একই সঙ্গে ঘটে । অর্থাৎ, জারণ ও বিজারণ ক্রিয়া পরস্পরের পরিপূরক । কোনো বিক্রিয়ায় জারণ-ক্রিয়া ঘটলেই বিজারণ ক্রিয়াও ঘটবে । এই রকম রাসায়নিক বিক্রিয়াকে রেডক্স বিক্রিয়া (Redox reaction) বলা হয় ।

(i) যেমন, কালো রং -এর লেড সালফাইডের (PbS) সঙ্গে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের (H2O2) বিক্রিয়া ঘটলে সাদা রং -এর লেডসালফেট (PbSO4) এবং জল উৎপন্ন হয় । এখানে H2O2 নিজে O2 ছেড়ে দিয়ে বিজারিত হয়ে H2O -তে পরিণত হয়েছে এবং PbS সঙ্গে সঙ্গে ওই ছেড়ে দেওয়া O2 গ্রহণ করে জারিত হয়ে সাদা PbSO4 হয়েছে । সুতরাং দেখা গেল যে, বিক্রিয়াটিতে জারণ এবং বিজারণ একসঙ্গে ঘটে ।

ইলেকট্রনীয় মতবাদ অনুযায়ী জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া অবশ্যই এক সঙ্গে ঘটবে । কারণ কোনো বস্তুকে বিজারিত হতে গেলে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করতে হবে এবং এই ইলেকট্রন আসবে অপর কোনো বস্তু থেকে । যে বস্তু থেকে ইলেকট্রন আসবে সেটি হবে জারিত, আবার যে বস্তুটি ইলেকট্রন গ্রহণ করবে তা হবে বিজারিত এবং প্রতি ক্ষেত্রে বর্জিত ইলেকট্রন সংখ্যা = গৃহিত ইলেকট্রন সংখ্যা । কারণ যে-কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া তড়িৎ-প্রশম ।

যেমন— ফেরিক আয়ন (Fe3+) এবং স্ট্যানাস আয়ন (Sn2+) -এর বিক্রিয়ায় একটি স্ট্যানাস আয়ন 2টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে স্ট্যানিক আয়নে (Sn4+) পরিবর্তিত হয় এবং দুটি ফেরিক আয়ন (Fe3+) ওই দুটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ফেরাস  আয়নে (Fe2+) পরিবর্তিত হয় । এখানে স্ট্যানাস আয়ন জারিত হয়েছে কিন্তু ফেরিক আয়ন একই সঙ্গে ওই ইলেকট্রন গ্রহণ করে বিজারিত হয়েছে ।

রাসায়নিক বিক্রিয়াটি হল : 2FeCl3 + SnCl2 = 2FeCl2 + SnCl4

*****

Related Items

জীবনক্রিয়ায় জৈব যৌগের ভুমিকা

প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহের বেশির ভাগ অংশ জৈব যৌগ দিয়ে গঠিত । তাই জীব জগতে জৈব যৌগের দান অতুলনীয় । জীবন ক্রিয়ার সঙ্গে জৈব যৌগ গভীর ভাবে জড়িত । জীবদেহের জীবনক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য জৈব যৌগের ভূমিকা অপরিসীম । জীবজগতে প্রত্যেক জৈবিক ক্রিয়ার কারণ ...

জৈব যৌগ ও জৈব রসায়ন

কার্বনের যে সমস্ত যৌগ প্রধানত জীবজগতে উত্পন্ন হয় এবং যে সমস্ত যৌগে কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত এবং বৃত্তাকার শৃঙ্খলে যুক্ত থেকে বিভিন্ন সমধর্মী যৌগের শ্রেণি গঠন করতে পারে, সেই সমস্ত যৌগকে সামগ্রিকভাবে জৈব যৌগ বলে ...

কয়েকটি বিশিষ্ট ধাতু-সংকর ও তার ব্যবহার

পিতল, কাঁসা, ব্রোঞ্জ, অ্যালুমিনিয়াম-ব্রোঞ্জ, জার্মান সিলভার, ডুরালুমিন, ম্যাগনেলিয়াম, স্টেইনলেস স্টিল, বাসনপত্র, নল, টেলিস্কোপ, মূর্তি, ব্যারোমিটার, বিভিন্ন যন্ত্রের অংশ, তুলাদন্ড, বিমানের কাঠামো, জলের কল প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ব্যবহার হয় । ...

ধাতু সংকর (Alloy)

দুই বা ততোধিক ধাতু পরস্পর মিশে যে সমসত্ত্ব বা অসমসত্ত্ব মিশ্রণ উত্পন্ন করে, সেই কঠিন ধাতব পদার্থকে ধাতু সংকর বা সংকর ধাতু বলে । যেমন - তামা ও টিনের মিশ্রণে উত্পন্ন কাঁসা হল একটি সংকর ধাতু । অনেক ক্ষেত্রে ধাতু-সংকরে অধাতু থাকতে পারে । ...

তামা বা কপার (Copper)

অতি প্রাচীন কাল থেকে তামা বা কপারের ব্যবহার চলে আসছে । কানাডার লেক সুপিরিয়রের কাছে এবং সাইবেরিয়ার পর্বতে মুক্ত অবস্থায় তামা বা কপার পাওয়া যায় । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কপারকে বিভিন্ন যৌগরূপে প্রকৃতিতে পাওয়া যায় । কপারের প্রধান আকরিকগুলি হল ...