ওহমের সূত্র (Ohm’s Law)

Submitted by arpita pramanik on Thu, 01/17/2013 - 20:35

ওহমের সূত্র (Ohm’s Law) :

1826 খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী জর্জ সাইমন ওহম প্রবাহমাত্রা ও বিভব-প্রভেদের মধ্যে সম্পর্ক একটি সূত্রের আকারে প্রকাশ  করেন । সূত্রটি ওহমের সুত্র নামে পরিচিত । সূত্রটি হল— উষ্ণতা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে, কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা ওই পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব-প্রভেদের সমানুপাতিক হয় । ভৌত অবস্থা বলতে পরিবাহীর উপাদান, ঘনত্ব, দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদ ইত্যাদি বোঝায় ।

মনে করা যাক XY একটি পরিবাহী । এর X এবং Y প্রান্তের বিভব যথাক্রমে VX এবং VY । এখন VX > VY হলে, পরিবাহীতে X থেকে Y -এর দিকে তড়িৎপ্রবাহ হবে । এখন তড়িৎপ্রবাহমাত্রা = i হলে; ওহমের সূত্রানুসারে, উষ্ণতা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে [tex]i \propto (V_X - V_Y)[/tex]

বা, [tex] \frac {V_X - V_Y}{i}=R[/tex], যেখানে R একটি ধ্রুবক ।

[tex]V_X - V_Y = V[/tex] ধরলে, ওহমের সূত্রের গাণিতিক রূপ দাঁড়ায়,

[tex]\frac {V}{i} = R[/tex] বা [tex]V = Ri[/tex], এই ধ্রুবক R -কে পরিবাহীর রোধ বলে ।

অর্থাৎ, বিভব প্রভেদ = রোধ x তড়িৎপ্রবাহমাত্রা ।

রোধের সংজ্ঞা (Definition of Resistance) : পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য পরিবাহীর মধ্যে তড়িৎপ্রবাহ বাধা পায়, তাকে পরিবাহীর রোধ বলে । ওহমের সূত্র থেকে পাই,

[tex]R = \frac {V}{i}[/tex] অর্থাৎ রোধ = পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব-প্রভেদ / পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা

সুতরাং, ওহমের সূত্র থেকে রোধের সংজ্ঞা পাই, কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব-প্রভেদ এবং ওই পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রার অনুপাতকে ওই পরিবাহীর রোধ বলে

আবার [tex]i = \frac {V}{R}[/tex] = ( বিভব-প্রভেদ / রোধ ) থেকে বলা যায়, বিভব-প্রভেদ (V) অপরিবর্তিত রেখে পরিবাহীর রোধ (R) বাড়ালে প্রবাহমাত্রা (i) কমে এবং রোধ কমালে প্রবাহমাত্রা বাড়ে । রোধের মান পরিবাহীর দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদ এবং উপাদানের ওপর নির্ভর করে ।

ওহমীয় পরিবাহী (Ohmic conductor) : যেসব পরিবাহী ওহম-সূত্র মেনে চলে তাদের ওহমীয় পরিবাহী বলে । যেমন— তামা, অ্যালুমিনিয়াম, লোহা প্রভৃতি বেশির ভাগ ধাতব পরিবাহী ।

অ-ওহমীয় পরিবাহী (Non-Ohmic conductor) : যেসব পরিবাহী ওহম-সূত্র মেনে চলে না তাদের অ-ওহমীয় পরিবাহী বলে । যেমন— ডায়োড, ট্রায়োড প্রভৃতি ভ্যাকুয়াম ভালভ; জার্মেনিয়াম, সিলিকন প্রভৃতি অর্ধপরিবাহী, কিন্তু তড়িৎ-বিশ্লেষ্য ।

রোধের মাত্রা = [বিভব-প্রভেদের মাত্রা] / [তড়িৎ-প্রবাহের মাত্রা] = [tex]\frac{{[M{L^2}{T^{ - 3}}{A^{ - 1}}]}}{{[A]}} = [M{L^2}{T^{ - 3}}{A^{ - 2}}] [/tex]

*****

Related Items

নিউক্লীয় বিভাজন (Nuclear fission)

যে নিউক্লীয় বিক্রিয়ায় কোনো ভারী পরমাণু নিউক্লিয়াসকে উপযুক্ত শক্তিসম্পন্ন নিউট্রন কণা দ্বারা আঘাত করলে, ভারী পরমাণুর নিউক্লিয়াসটি বিভাজিত হয়ে দুটি প্রায় সমভর বিশিষ্ট টুকরায় পরিণত হয় এবং সেই সঙ্গে কয়েকটি নিউট্রন এবং প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়, সেই ঘটনাকে নিউক্লীয় ...

তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার, দুষণ ও সতর্কীকরণ

তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণরূপে একটি নিউক্লীয় ঘটনা । প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াসের ভাঙ্গনের ফলে যে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সৃষ্টি হয় তাকে চিকিত্সাবিজ্ঞান, কৃষিকার্য, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । রোগ নির্ণয় এবং রোগ ...

তেজস্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্য

বিভিন্ন গবেষণার পর তেজস্ক্রিয়তা সম্বন্ধে নীচের বিষয়গুলি জানা যায় । তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণরূপে একটি নিউক্লীয় ঘটনা [nuclear phenomenon] । এর সঙ্গে নিউক্লিয়াস বহির্ভূত ইলেকট্রনের কোনো সম্পর্ক নেই । যে সকল মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা 83 -এর বেশি হয়, কেবলমাত্র তারাই ...

প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা ও তেজস্ক্রিয় রশ্মিসমূহের ধর্মাবলী

মৌলগুলি থেকে নিঃসৃত এই জাতীয় শক্তিশালী রশ্মিকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি বলা হয় । বিভিন্ন মৌল দ্বারা তেজস্ক্রিয় রশ্মি নিঃসরণের এই ঘটনাকে প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা বলা হয় । যেসব পদার্থ থেকে এই রশ্মি বিকিরিত হয় সেই পদার্থগুলিকে প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয় পদার্থ ...

এক্স-রশ্মি ও সাধারণ আলোক-রশ্মির তুলনা

এক্স-রশ্মি এবং আলোক-রশ্মি উভয়েই তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ । শূন্য মাধ্যমে আলোক-রশ্মি এবং এক্স-রশ্মি উভয়ের বেগ (3 x 108 মিটার / সেকেন্ড) । উভয় রশ্মিই সরলরেখায় যায় । বিশেষ ব্যবস্থায় আলোক-রশ্মির মতো এক্স-রশ্মির প্রতিফলন এবং প্রতিসরণ হয় । উভয় রশ্মিই ফটোগ্রাফিক ...