উত্তল লেন্স দ্বারা সৃষ্ট সদ্ ও অসদ প্রতিবিম্ব

Submitted by arpita pramanik on Tue, 01/15/2013 - 21:30

 উত্তল লেন্স দ্বারা সৃষ্ট সদ্ ও অসদ প্রতিবিম্ব গঠন (Formation of real and virtual images by a convex lens) :

উত্তল লেন্সের সাহায্যে বস্তুর যে প্রতিবিম্ব গঠিত হয়, তা লেন্সের চারটি ধর্মের ওপর নির্ভর করে ।

(১) যে আলোক-রশ্মি লেন্সের আলোক কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে যায়, প্রতিসরণের পর তার অভিমুখের কোনো পরিবর্তন হয় না ।

(২) বস্তু থেকে নির্গত আলোক-রশ্মি, প্রধান অক্ষের সমান্তরাল হয়ে উত্তল লেন্সে আপতিত হলে প্রতিসরণের পর মুখ্য ফোকাসের মধ্য দিয়ে যাবে ।

(৩) উত্তল লেন্সের মুখ্য ফোকাসের মধ্য দিয়ে আগত কোনো আলোক-রশ্মি লেন্সে প্রতিসৃত হলে প্রধান অক্ষের সমান্তরাল হয়ে নির্গত হবে ।

(৪) কোনো বস্তু লেন্সের প্রধান অক্ষের সঙ্গে লম্বভাবে অবস্থান করলে ওর প্রতিবিম্বটিও প্রধান অক্ষের সঙ্গে লম্বভাবে গঠিত হবে ।

(i) বস্তুর চেয়ে খুব ক্ষুদ্র সদবিম্ব :

(ii) বস্তুর চেয়ে বড়ো সদবিম্ব :

(iii) বস্তুর চেয়ে বড়ো অসদবিম্ব :  

সদ্ ও অসদ বিম্বের মধ্যে পার্থক্য (Distinction between Real and Virtual images) ;

  সদবিম্ব   অসদবিম্ব
১. কোনো বিন্দু থেকে নির্গত অপসারী রশ্মিগুলি প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি কোনো দ্বিতীয় বিন্দুতে মিলিত হয়, তাহলে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর সদবিম্ব বলা হয় । ১. কোনো বিন্দু থেকে নির্গত অপসারী রশ্মিগুলি প্রতিফলন বা প্রতিসরণের পর যদি কোনো দ্বিতীয় বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর অসদবিম্ব বলে ।
২. সদবিম্বের বাস্তব অবস্থিতি আছে । তাই একে পর্দায় ধরা যায়; চোখে দেখাও যায় । ২. অসদবিম্বের কোনো বাস্তব অবস্থিতি নেই । তাই একে পর্দায় ওপর ফেলা যায় না; কেবলমাত্র চোখে দেখা যায় ।
৩. একটি লেন্স বা আয়না দ্বারা সৃষ্ট সদবিম্ব সাধারণত বস্তুর সাপেক্ষে উল্টো (অবশীর্ষ) হয় ।  ৩.

একটি লেন্স বা আয়না দ্বারা সৃষ্ট অসদবিম্ব সাধারণত বস্তুর সাপেক্ষে সোজা (সমশীর্ষ) হয় ।

 

 

রৈখিক বিবর্ধন (Linear magnification) : লেন্স দ্বারা লক্ষবস্তুর যে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় তা লক্ষবস্তুর অবস্থানের ওপর নির্ভর করে বস্তু অপেক্ষা বড়ো বা ছোটো বা সমান হতে পারে অর্থাৎ লেন্সের বিবর্তন ক্ষমতা (magnifying power) আছে । রৈখিক বিবর্ধন বলতে প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য ও লক্ষবস্তুর দৈর্ঘ্যের অনুপাত বুঝায় ।

রৈখিক বিবর্ধন (m) =  প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য / লক্ষবস্তুর দৈর্ঘ্য

প্রমাণ করা যায় যে লেন্সের আলোককেন্দ্র থেকে বস্তু দূরত্ব = u এবং প্রতিবিম্ব দূরত্ব = v হলে, যে-কোনো লেন্সের ক্ষেত্রে রৈখিক বিবর্ধন m = প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য / লক্ষবস্তুর দৈর্ঘ্য = [tex]\frac {v}{u}[/tex] ।

বিবর্ধক কাচরূপে উত্তল লেন্স (Convex lens as a magnifying glass) :

লক্ষবস্তু যদি উত্তল লেন্সের ফোকাস দূরত্বের মধ্যে থাকে, তাহলে লেন্স দ্বারা গঠিত প্রতিবিম্ব অসদ, এবং বস্তুর চেয়ে আকারে বড়ো এবং সোজা হয় । উত্তল লেন্সকে বিবর্ধক কাচ হিসাবে ব্যবহার করা হয় । কোনো বই -এর পাতার খুব কাছে উত্তল লেন্স ধরে ওপর থেকে দেখলে অক্ষরগুলিকে বড়ো বড়ো দেখায় । লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য যত কম হয়, প্রতিবিম্বের বিবর্ধনও তত বেশি হয় । তাই খুব কম ফোকাস দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট উত্তল লেন্সকে বিবর্ধক কাচ হিসাবে ব্যবহার করা হয় ।

লেন্স চিনবার সহজ উপায় : লেন্সের খুব কাছে একটি আঙ্গুল রেখে অপর পাশ থেকে দেখলে যদি আঙ্গুলটির প্রতিবিম্ব আকারে বড়ো এবং সোজা হয় তবে লেন্সটি হবে উত্তল, আর যদি প্রতিবিম্ব আকারে ছোটো এবং সোজা হয় তবে লেন্সটি হবে অবতল ।

*****

Related Items

লোহা বা আয়রন (Iron)

আয়রনকে প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না । পৃথিবীতে বিভিন্ন স্থানে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের আকরিক পাওয়া যায়। ভারতের বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, কর্ণাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে লোহার আকরিক পাওয়া যায় । ভূ-ত্বকে আয়রনের পরিমাণ 4.12 শতাংশ। ...

দস্তা বা জিঙ্ক (Zinc)

জিঙ্ক ধাতুকে প্রকৃতির মধ্যে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না । জিঙ্কের প্রধান আকরিকগুলি জিঙ্কাইট ক্যালামাইন , জিঙ্কব্লেন্ড। জিঙ্কব্লেন্ড জিঙ্কের প্রধান আকরিক । ভারতের রাজস্থান, বিহার, পাঞ্জাব ও তামিলনাড়ুতে জিঙ্কব্লেন্ড পাওয়া যায় । ...

ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium)

ম্যাগনেসিয়ামকে প্রকৃতির মধ্যে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না । এর নানা রকম যৌগ প্রচুর পরিমাণে প্রকৃতিতে পাওয়া যায় । ম্যাগনেসিয়ামের সংকেত-Mg পারমাণবিক সংখ্যা- 12 পারমাণবিক ভর- 24.3 যোজ্যতা- 2 । এর প্রধান আকরিকগুলি হল ..

অ্যালুমিনিয়াম (Aluminium)

অ্যালুমিনিয়াম ধাতুকে মুক্ত অবস্থায় প্রকৃতির মধ্যে পাওয়া যায় না । যৌগরূপে এই ধাতুকে প্রকৃতির মধ্যে প্রচুর পাওয়া যায় । ভু-পৃষ্ঠের সব ধাতুর মধ্যে অ্যালুমিনিয়ামের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। বিমান ও মোটর গাড়ির কাঠামো প্রস্তুতিতে, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক তার তৈরিতে অ্যালুমিনিয়াম ...

খনিজ ও আকরিক

যেসব খনিজ থেকে সহজে ও সুলভে প্রয়োজনীয় ধাতু নিষ্কাশন করা যায়, তাদের ওই ধাতুর আকরিক বলে । কোনো ধাতুর সব খনিজই খরচ ও সহজ লভ্যতার প্রেক্ষিতে ধাতু নিষ্কাশনের উপযুক্ত নাও হতে পারে । যে কারণে বলা হয়— কোনো ধাতুর আকরিকগুলি এর খনিজ, কিন্তু যেকোনো খনিজই ...