আধুনিক দীর্ঘ পর্যায়-সারণি

Submitted by arpita pramanik on Wed, 02/13/2013 - 21:33

আধুনিক দীর্ঘ পর্যায়-সারণি (Modern long form of periodic table)

বিশুদ্ধ ও ফলিত রসায়নের আন্তর্জাতিক সংস্থা (International Union of Pure and Applied Chemistry সংক্ষেপে IUPAC) -এর সুপারিশ অনুযায়ী উপশ্রেণি A এবং উপশ্রেণি B -এর অবস্থান নিয়ে পূর্বে যে মতবাদ ছিল তা দূর করে দীর্ঘ পর্যায়-সারণির আধুনিক রূপটি প্রকাশ করা হয়েছে ।

আধুনিক দীর্ঘ পর্যায়-সারণিতে ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক সংখ্যা এবং ইলেকট্রন বিন্যাস অনুসারে মৌলগুলিকে মোট 7টি অনুভূমিক পর্যায়ে (Period) এবং 18টি উলম্ব শ্রেণি (Group) -তে সাজানো হয়েছে । এতে ইলেকট্রন-বিন্যাসের পর্যায়বৃত্তি (Periodicity) এবং রাসায়নিক ধর্মের পর্যায়বৃত্তি উভয়েই পুনরাবৃত্ত হয় । সারণিতে প্রথম পর্যায়ে দুটি মৌল হাইড্রোজেন (H) এবং হিলিয়াম (He); দ্বিতীয়পর্যায়ে ( Li থেকে Ne ) মোট 8টি মৌল; তৃতীয় পর্যায়ে (Na থেকে Ar) মোট 8টি মৌল; চতুর্থ পর্যায়ে (K থেকে Kr) মোট 18টি মৌল; পঞ্চম পর্যায়ে (Rb থেকে Xe) মোট 18টি মৌল এবং ষষ্ঠ পর্যায়ে (Cs থেকে Rn) মোট 32টি মৌল থাকে । সপ্তম পর্যায়টি অসম্পূর্ণ । ইউরেনিয়ামের পর আবিষ্কৃত কৃত্রিম মৌলগুলিকে সারণিতে ইউরেনিয়ামোত্তর মৌলরূপে পরপর স্থান দেওয়া হয়েছে

পর্যায়-সারণির উপযোগিতা (Utility of Periodic table)

(i) পর্যায়-সারণিতে মৌলগুলির ইলেকট্রন-বিন্যাস এবং ধর্মের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ করায় রসায়ন শাস্ত্রের অনেক সহজ এবং সুশৃঙ্খল হয়েছে ।

(ii) পর্যায়-সারণির সাহায্যে কয়েকটি মৌলের পারমাণবিক ভর সংশোধন করা সম্ভব হয়েছে । যেমন— বেরিলিয়াম (Be) ।

(iii) পর্যায়-সারণির নতুন মৌলের অস্তিত্ব সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে, যার ফলে পরবর্তীকালে কয়েকটি নতুন মৌল আবিষ্কৃত হয়েছে ।  

(iv) পর্যায়-সারণি থেকে জানা যায়— প্রাকৃতিক মৌলের সঠিক সংখ্যা 92 এবং বাকি মৌলগুলি কৃত্রিম মৌল ।

(v) নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলির যোজ্যতা কক্ষ ইলেকট্রন দ্বারা সম্পূর্ণ ভর্তি থাকায় এদের প্রত্যেক পর্যায়ের শেষে বসানো যুক্তিযুক্ত হয়েছে ।

(vi) একটি শ্রেণির অন্তর্গত উপশ্রেণির মৌলগুলিকে পৃথকভাবে বসানোর ফলে ধর্মের ভিত্তিতে অসদৃশ মৌলগুলি একই সঙ্গে বসতে পারে না ।

(vii) পর্যায়-সারণিতে কোনো মৌলের সঠিক অবস্থান জানা থাকলে মৌলটির বিভিন্ন ধর্ম, যেমন— গলনাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ক, রাসায়নিক সক্রিয়তা, তড়িৎ পরিবাহিতা, যোজ্যতা, ধাতব বা অধাতব ধর্ম, জারণ-বিজারণ ক্ষমতা ইত্যাদি জানা যায় ।

*****

Related Items

অ্যাম্মিটার এবং ভোল্টমিটারের ব্যবহার

কোনো বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ হচ্ছে কিনা, কিংবা হলে তার মান নির্ণয় করতে যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেই যন্ত্রকে গ্যালভানোমিটার বলে । ইটালির বিজ্ঞানী লুইগি গ্যালভানির নামে এই যন্ত্রের নামকরণ হয়েছে । তড়িৎপ্রবাহের ওপর চুম্বকের ক্রিয়া এই মূল নীতির ওপর ...

তড়িৎ চুম্বকত্ব (Electromagnetism)

কোনো চৌম্বক পদার্থের গায়ের ওপর অন্তরিত পরিবাহী তার জড়িয়ে তার ভিতর দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের সাহায্যে চৌম্বক পদার্থকে অস্থায়ী চুম্বকে পরিণত করা হলে, সেই চুম্বককে তড়িৎচুম্বক বলে । তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ করলে চৌম্বক পদার্থের চুম্বকত্ব লোপ পায় । বেশি শক্তিশালী তড়িৎচুম্বক ...

বৈদ্যুতিক মোটর (Electric Motor)

বিদ্যুৎ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রুপান্তরিত করার যন্ত্রের মধ্যে একটি হল মোটর । বৈদ্যুতিক মোটর দু'রকম - পরবর্তী প্রবাহের জন্য মোটর (A.C. Motor) এবং সমপ্রবাহের জন্য মোটর (D.C. Motor) । এখানে সমপ্রবাহের মোটর বা D.C. Motor বিষয়ে আলোচনা করা হল ।

তড়িৎপ্রবাহের ওপর চুম্বকের ক্রিয়া

তড়িৎপ্রবাহ যেমন চুম্বকের ওপর ক্রিয়া করে চুম্বক-মেরুকে বিক্ষিপ্ত করার সময় ওর ওপর একটি বল প্রয়োগ করে, সেই রকম চুম্বক- মেরুও তড়িৎপ্রবাহের ওপর ক্রিয়া করে । এর ফলে চুম্বক-মেরু তড়িদ্বাহী পরিবাহীর ওপর একটি বল প্রয়োগ করে, ফলে পরিবাহী ...

চুম্বকের ওপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া

কোনো পরিবাহী তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে তার চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয় । ওই তারের কাছে একটি চুম্বক শলাকা থাকলে শলাকাটি বিক্ষিপ্ত হয় । একে চুম্বকের ওপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া বলে । 1820 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ওরস্টেড সর্বপ্রথম চুম্বকের ...