আণবিক ভর ও গ্রাম-পারমাণবিক ভর

Submitted by arpita pramanik on Sat, 01/12/2013 - 10:39

আণবিক ভর ও গ্রাম-পারমাণবিক ভর :

আণবিক ভর (Molecular mass) :

কোনো মৌল বা যৌগের একটি অণু একটি কার্বন -12 (C12) পরমাণুর ভরের 1/12 অংশের তুলনায় যতগুণ ভারী, সেই তুলনামূলক সংখ্যাটিকে ওই মৌল বা যৌগের আণবিক ভর বলে

অর্থাৎ, আণবিক ভর = মৌল বা যৌগের 1টি অণুর ভর / 1টি কার্বন -12 (C12) পরমাণুর ভরের 1/12 অংশ ।

আণবিক ভর একটি সংখ্যা মাত্র, এর কোনো একক নাই

এই হিসাব অনুযায়ী, অক্সিজেনের আণবিক ভর = 32 বলতে এই বোঝায় যে, 1টি অক্সিজেন অণুর ভর 1টি কার্বন -12 (C12) পরমাণুর ভরের 1/12 অংশের চেয়ে 32 গুণ ভারী ।

গ্রাম-পারমাণবিক ভর বা এক গ্রাম-পরমাণু (Gram-atomic mass or one gram-atom) :

কোনো মৌলিক পদার্থের পারমাণবিক ভরকে গ্রামে প্রকাশ করলে যত গ্রাম হয়, গ্রামে প্রকাশিত সেই ভরকে ওই মৌলিক পদার্থের গ্রাম-পারমাণবিক ভর বা এক গ্রাম-পরমাণু বলে । যেমন— অক্সিজেনের পারমাণবিক ভর 16, অতএব 16 গ্রাম অক্সিজেনকে এক গ্রাম-পরমাণু অক্সিজেন বলে ।  

 

গ্রাম-আণবিক ভর বা গ্রাম-অণু বা গ্রাম-মোল (Gram-molecular mass or gram-molecule or gram mole) :

কোনো মৌলক বা যৌগিক পদার্থের আণবিক ভরকে গ্রামে প্রকাশ করলে যত গ্রাম হয়, গ্রামে প্রকাশিত সেই ভরকে ওই মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের গ্রাম-আণবিক ভর বা এক গ্রাম-অণু বা এক গ্রাম-মোল বলে । গ্রাম-মোলকে সংক্ষেপে মোল (Mole) বলে । যেমন— অক্সিজেনের আণবিক ভর = 32, অতএব অক্সিজেনের গ্রাম-আণবিক ভর = 32 গ্রাম । এই 32 গ্রাম ভরের অক্সিজেনকে এক গ্রাম-অণু বা এক গ্রাম-মোল অক্সিজেন বলে । 

বাষ্প-ঘনত্ব বা আপেক্ষিক ঘনত্ব (Vapour density or relative density)

একই চাপ ও উষ্ণতায় কোনো গ্যাসের ভর ওর সম আয়তন হাইড্রোজেন গ্যাসের ভরের চেয়ে যতগুণ ভারী, সেই সংখ্যাকে ওই গ্যাসের বাষ্প ঘনত্ব বা আপেক্ষিক ঘনত্ব বলে ।

অর্থাৎ, গ্যাসের বাষ্প ঘনত্ব (D) =  V আয়তন গ্যাসের ভর / V আয়তন  হাইড্রোজেন গ্যাসের ভর ।

গ্রাম-আণবিক আয়তন বা মোলার আয়তন (Molar Volume) :

নির্দিষ্ট চাপ ও উষ্ণতায় যে কোনো মৌলিক বা যৌগিক গ্যাসের এক গ্রাম-অণু যে পরিমাণ আয়তন অধিকার করে, সেই আয়তনকে ওই গ্যাসের গ্রাম-আণবিক আয়তন বা মোলার আয়তন বলে । মোলার আয়তন কেবলমাত্র চাপ ও উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে, পদার্থের প্রকৃতি বা ধর্মের ওপর নির্ভর করে না । প্রমাণ চাপ ও উষ্ণতায় যে-কোনো গ্যাসের মোলার আয়তন 22.4 লিটার । যেমন— N.T.P. -তে এক গ্রাম-অণু O2 বা 32 গ্রাম O2 -এর মোলার আয়তন = 22.4 লিটার । এভাবে N.T.P. -তে 2 গ্রাম অণু যে-কোনো গ্যাসের আয়তন = 2 x 22.4 = 44.8 লিটার ।

*****

Related Items

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার

রসায়নাগারে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড খুবই প্রয়োজনীয় বিকারক । ক্লোরিনের শিল্পোত্পাদনে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয় । অ্যাকুয়া রিজিয়া (অম্লরাজ) প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয়, যা সোনা গলাতে দরকার হয় । রঞ্জন শিল্পে, চর্ম শিল্পে, লোহার ওপর দস্তা ...

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের শনাক্তকরণ

সিলভার নাইট্রেট দ্রবণের সঙ্গে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় অদ্রাব্য সিলভার ক্লোরাইডের থকথকে সাদা অধঃক্ষেপ পাওয়া যায় । এই অধঃক্ষেপ নাইট্রিক অ্যাসিড -তে অদ্রাব্য কিন্তু অতিরিক্ত অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সিড -এ দ্রাব্য । হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মধ্যে ক্লোরিন এবং হাইড্রোজেন ...

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসের ধর্ম

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বর্ণহীন, শ্বাসরোধী, ঝাঁঝালো গন্ধযুক্ত, অম্লস্বাদ বিশিষ্ট গ্যাস । হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস বাতাসের চেয়ে প্রায় 1.3 গুণ ভারী, এর বাষ্পীয় ঘনত্ব 18.25। এই গ্যাস জলে অত্যন্ত দ্রাব্য, 0°C উষ্ণতায় এবং প্রমাণ চাপে 1 সিসি জলে 450 সিসি হাইড্রোজেন ক্লোরাইড ...

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি

HCl -এর জলীয় দ্রবণ অর্থাৎ, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি: গ্যাসীয় অবস্থায় HCl -কে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বলে । এই গ্যাসের জলীয় দ্রবণকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বলে । উত্পন্ন হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসকে জলে দ্রবীভূত করলে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড পাওয়া যায় । ...

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড এবং হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড

1648 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী গ্লোবার রক সল্ট ও গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়া ঘটিয়ে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস তৈরি করেন । বিজ্ঞানী প্রিস্টলী 1772 খ্রিস্টাব্দে সমুদ্রের লবণ থেকে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড প্রস্তুত করেন । তিনিএই অ্যাসিডের নাম দেন সামুদ্রিক অ্যাসিড ...