শক্তি ও যান্ত্রিক শক্তি (Energy and Mechanical Energy) :
শক্তি (Energy)
কোন বস্তুর কার্য করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। বিশেষ অবস্থায় কোন বস্তু কতখানি কার্য করতে পারে তাই দিয়ে বস্তুটির শক্তি পরিমাপ করা হয় ।
শক্তির পরিমাণ = কৃতকার্য = প্রযুক্ত বল × বলের প্রয়োগ-বিন্দু সরণ ।
কোন বস্তুর উপর শক্তি প্রয়োগ করলে বস্তটি কাজ করার সামর্থ্য লাভ করে এবং কার্য করে । সেইজন্য বস্তুর শক্তি এবং কার্য একই ধরনের রাশি । তাই উভয়কে একই এককে প্রকাশ করা হয় । কার্যের মত শক্তিও একটি স্কেলার রাশি । CGS পদ্ধতিতে শক্তির পরম একক হল আর্গ (Erg) এবং SI পদ্ধতিতে শক্তির পরম একক হল হল নিউটন-মিটার বা জুল (Joule) ।
যান্ত্রিক শক্তি (Mechanical Energy)
কোন বস্তু তার গতি, স্থিতি বা আকৃতির পরিবর্তনের জন্য অথবা একত্রিত ভাবে তিনটির জন্য যে শক্তি লাভ করে তাকে বস্তুটির যান্ত্রিক শক্তি বলে । অন্যভাবে বলা যায় কোন বস্তুর যান্ত্রিক কার্য করার সামর্থ্যকে তার যান্ত্রিক শক্তি বলে । যান্ত্রিক শক্তিকে দু'ভাগে ভাগ করা যায় -
- গতিশক্তি (Kinetic Energy)
- স্থিতি শক্তি (Potential Energy)
1. গতিশক্তি (Kinetic Energy)
কোন গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে সেই শক্তিকে বস্তুটির গতিশক্তি বলে । বাইরে থেকে বলপ্রয়োগ করে কোন গতিশীল বস্তুকে থামালে বস্তুটি স্থির অবস্থায় আসার আগে পর্যন্ত ঐ বলের বিরুদ্ধে মোট যে পরিমান কার্য করে তাই দিয়ে বস্তুটির গতিশক্তি নির্ণয় করা হয় ।
যদি কোন বস্তুর ভর m এবং বেগ v হয় তাহলে --
বস্তুর গতিশক্তি = ½ × ভর × (বেগ)2
= ½ mv2
2. স্থিতি শক্তি (Potential Energy)
কোন বস্তু তার স্বাভাবিক অবস্থান বা আকৃতির পরিবর্তনের জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে তাকে ঐ বস্তুর স্থিতি শক্তি বলে । পরিবর্তিত অবস্থান বা আকৃতি থেকে তার স্বাভাবিক অবস্থান বা আকৃতিতে ফিরে আসার সময় বস্তু যে পরিমাণ কার্যকরে তাই দিয়ে বস্তুটির স্থিতি শক্তি পরিমাপ করা হয় ।
মনে করি m বিশিষ্ট কোন বস্তুকে ভূপৃষ্ঠ থেকে h উচ্চতায় তোলা হলো বস্তুটিকে পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে তুলতে যে পরিমান কার্য করতে হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি বস্তুটির মধ্যে স্থিতি শক্তি রূপে সঞ্চিত হয়
এখন বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল বল = বস্তুর ভর = mg এবং সরণ = h
∴ mg বলের বিরুদ্ধে বস্তুটিকে h উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কৃতকার্য =বল × সরণ = mg × h
সুতরাং বস্তুটির স্থিতিশক্তি = m.g.h
অর্থাৎ স্থিতিশক্তি= বস্তুর ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ × উচ্চতা ।
স্থিতিশক্তি এবং গতিশক্তির পার্থক্য
Difference between Potential and Kinetic energy
স্থিতিশক্তি | গতিশক্তি |
---|---|
কোন বস্তুকে তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে পারিপার্শ্বিকের তুলনায় একটি বিশেষ অবস্থানে আনলে বস্তুটি কার্য করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে তাকে বস্তুটি স্থিতিশক্তি বলে । | গতিশীল অবস্থায় থাকার জন্য কোন বস্তু কার্য করার যে সামর্থ্য বা শক্তি লাভ করে তাকে বস্তুটির গতিশক্তি বলে । |
একটি বিশেষ অবস্থান বা আকৃতিগত পরিবর্তনের জন্য বস্তুর মধ্যে স্থিতি শক্তি সঞ্চিত থাকে । | গতির জন্য বস্তুর মধ্যে গতি শক্তি সঞ্চারিত হয় । |
ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে তোলা হয় বস্তুটির স্থিতিশক্তি তত বেড়ে যায় । | গতিশীল বস্তুর বেগ যত বাড়ে তার গতিশক্তি তত বেড়ে যায় । |
কোন বস্তুর স্থির অবস্থায় থাকলে তার স্মৃতিশক্তি থাকে কিন্তু গতিশক্তি থাকে না । | গতিশীল অবস্থায় বস্তুটির গতিশক্তি থাকবেই কিন্তু স্থিতিশক্তি থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে । |
বস্তুর স্থিতিশক্তি = mgh, m= বস্তুর ভর, g= অভিকর্ষজ ত্বরণ, h= ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা । | বস্তুর গতিশক্তি = ½ mv2 , m= বস্তুর ভর, v= বস্তুর বেগ । |
স্থিতিশক্তি একটি স্কেলার রাশি এবং স্থিতি শক্তির একক হলো কার্যের একক । | বস্তুর গতিশক্তিও স্কেলার রাশি এবং এর একক হলো কার্যের একক । |
*****