আলোর বিচ্ছুরণ (Dispersion of light)

Submitted by arpita pramanik on Tue, 01/15/2013 - 23:37

আলোর বিচ্ছুরণ (Dispersion of light) :

সংজ্ঞা : সাদা কিংবা কোনো বহুবর্ণী রশ্মিগুচ্ছের বিভিন্ন বর্ণে বিভাজিত হওয়ার ঘটনাকে আলোর বিচ্ছুরণ বলে । স্যার আইজ্যাক নিউটন আলোর বিচ্ছুরণ আবিষ্কার করেন । তিনি দেখতে পান যে, সূর্য রশ্মি (সাদা আলো) কাচের প্রিজমের ভিতর দিয়ে গেলে সাতটি বিভিন্ন বর্ণের রশ্মিতে বিভক্ত হয়ে পড়ে ।

[i] প্রিজম : তিনটি আয়তাকার এবং দুটি ত্রিভুজাকার তল দ্বারা সীমাবদ্ধ সমসত্ব ও স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে প্রিজম বলে ।

[ii] প্রতিসারক তল : আলোক রশ্মি প্রিজমের যে তলে আপতিত হয় এবং তল থেকে নির্গত হয় তাদের প্রতিসারক তল বলে ।

[iii] প্রান্তরেখা : পাশাপাশি দুটি প্রতিসারক তল পরস্পর যে রেখায় মিলিত হয়, তাকে প্রান্তরেখা বলে ।

[iv] প্রধান ছেদ : প্রিজমের প্রতিসারক তলকে লম্বভাবে ছেদ করলে যে তল পাওয়া যায়, তাকে প্রিজমের প্রধান ছেদ বলে ।

[v] প্রতিসারক কোণ : দুটি প্রতিসারক তল পরস্পর যে কোণে মিলিত হয়, ওই কোণকে প্রতিসারক কোণ বলে ।

[vi] ভূমি : প্রতিসারক কোণের বিপরীত তলকে প্রিজমের ভূমি বলে ।

সাদা আলোর বিচ্ছুরণ (Dispersion of white light) :

পরীক্ষা : একটি অস্বচ্ছ পর্দার একটি সুক্ষ্ম ছিদ্র দিয়ে সাদা আলোক রশ্মি একটি প্রিজমের প্রতিসারক তল এর ওপর আপতিত হল । প্রিজমের অপর প্রতিসারক তল থেকে নির্গত হয়ে আলোক রশ্মি যখন একটি পর্দা -র উপর পড়বে তখন পর্দায় সাতটি বিভিন্ন বর্ণবিশিষ্ট একটি পটি দেখতে পাওয়া যাবে । এই পটির একেবারে ওপরে লাল (Red), তারপর যথাক্রমে কমলা (Orange), হলুদ (Yellow), সবুজ (Green), আকাশি নীল (Blue), গাঢ় নীল (Indigo) এবং সবচেয়ে নীচে বেগুনি (Violet) থাকে । এই বহুবর্ণবিশিষ্ট পটিকে বর্ণালী বলে । প্রিজম আলোর বর্ণ সৃষ্টি করে না— সাদা বা বহুবর্ণী আলোর মধ্যে উপস্থিত বিভিন্ন বর্ণের আলোক রশ্মিগুলিকে পৃথক করে মাত্র

শূন্য মাধ্যমে আলোর বিচ্ছুরণ হয় না কেন

শূন্য মাধ্যমে সব বর্ণের আলো সমান বেগে চলার ফলে আলোকরশ্মির কোনো প্রকার চ্যুতি ঘটে না । তাই শূন্য মাধ্যমে আলোর বিচ্ছুরণ হয় না ।

রামধনু (Rainbow) : রামধনু হল আলোক বিচ্ছুরণের একটি প্রাকৃতিক উদাহরণ । যদি বায়ুমণ্ডল সদ্য বৃষ্টিস্নাত হয়, তবে কখনো কখনো সূর্যের বিপরীত দিকের আকাশে ধনুকের মতো বাঁকা বিভিন্ন রং -এর পটি দেখা যায়— একেই রামধনু বলে । বৃষ্টির কণা দ্বারা সুর্যরশ্মির বিচ্ছুরণের ফলে এই ঘটনা ঘটে ।

*****

Related Items

এক্স-রশ্মির ধর্ম ও এর ব্যবহার

এক্স-রশ্মি এক প্রকার তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ হওয়ায় তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্রের দ্বারা এই রশ্মির গতিপথের কোনো বিচ্যুতি ঘটে না । এক্স-রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক কম। এই রশ্মি মানুষের চোখে অনুভূতি জন্মায় না । কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মিকে কঠিন এক্স-রশ্মি ...

এক্স-রশ্মি উৎপাদনের নীতি

তীব্র গতিবেগ সম্পন্ন ইলেকট্রনের গতি উচ্চ গলনাঙ্ক বিশিষ্ট কোনো কঠিন বস্তু দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হটাৎ কমে গেলে বা থেমে গেলে, এর গতিশক্তির কিছু অংশ তাপশক্তিতে রুপান্তরিত হয় । এই শক্তিশালী অদৃশ্য তরঙ্গকে এক্স-রশ্মি বলা হয় । 1895 খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী রন্টজেন ...

দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ

দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ বা ডায়োড ভালভ : বিভিন্ন ধরনের তাপীয় আয়ন ভালভ তৈরির কাজে তাপীয় আয়ন নিঃসরণকে ব্যবহার করা হয় । 1904 খ্রিস্টাব্দে স্যার ফ্লেমিং সর্বপ্রথম দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ উদ্ভাবন করেন । প্রথমে এই ভালভকে ‘ফ্লেমিং ভালভ’ ...

তপ্ত ক্যাথোড-রশ্মি নল

এটি প্রধানত একটি বায়ুশূন্য কাচের নল । নলটির ভিতরের দেওয়ালে পরিবাহী পদার্থের আস্তরণ লাগানো থাকে । ক্যাথোড C হল ইলেকট্রনের উত্স । যখন তড়িৎপ্রবাহ পাঠিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একে উত্তপ্ত করা হয় তখন এ থেকে ইলেকট্রন নির্গত হয় । G হল গ্রিড, এটি নিকেলের ...

তাপীয় আয়ন নিঃসরণ

তাপীয় আয়ন নিঃসরণ: বিজ্ঞানী ড্রুড -এর মুক্ত ইলেকট্রন তত্ত্ব অনুযায়ী ধাতুর মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রনগুলি স্বাধীনভাবে এলোমেলো ঘুরে বেড়ায় । সাধারণভাবে এই ইলেকট্রনগুলি ধাতবপৃষ্ঠ ত্যাগ করে যেতে পারে না । কারণ ধাতবপৃষ্ঠ ওই ইলেকট্রনগুলির উপর একটি আকর্ষণ বল ...