সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (U.N.O) প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আলোচনা কর । জাতিপুঞ্জের প্রধান সংস্থাগুলির নাম কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 01/24/2022 - 19:19

প্রশ্ন : সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (U.N.O) প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আলোচনা কর । জাতিপুঞ্জের প্রধান সংস্থাগুলির নাম কর ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রতিষ্ঠা হয় । ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে ইংল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিগণ লন্ডন ঘোষণা পত্রের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করেন । এই বছর অর্থাৎ ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৯ই আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে প্রিন্স অফ ওয়েলস নামে একটি যুদ্ধজাহাজে পৃথিবীতে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে একটি আট দফা সুত্র সম্বলিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন । এই চুক্তিটি আটলান্টিক সনদ (Atlantic charter) নামে পরিচিত । এই সনদে যে আটটি নীতির কথা বলা হয়েছিল তার মধ্যে ভবিষ্যৎ জাতিপুঞ্জের বীজ সুপ্ত ছিল । পরবর্তী সময়ে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ওয়াশিংটন সম্মেলনে ২৬টি দেশের প্রতিনিধিবর্গ আটলান্টিক সনদের মূল নীতিগুলি মেনে নিয়ে ‘সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ঘোষণাপত্র' নামক এক দলিলে স্বাক্ষর করেন । ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে ডাম্বারটন ওকস সম্মেলনে এই ব্যবস্থাকে সমর্থন জানিয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করা হয় । অবশেষে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো শহরে বিশ্বের ৫০টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিবর্গ মিলিত হয়ে জাতিপুঞ্জের সনদে প্রথম স্বাক্ষর করেন, এই জন্যই ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে অক্টোবর সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে পালন করা হয় ।

জাতিপুঞ্জের প্রধান সংস্থাগুলি হল— (১) সাধারণ সভা,  (২) নিরাপত্তা পরিষদ,    (৩) অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ,   (৪) অছি পরিষদ,  (৫) আন্তর্জাতিক বিচারালয়, (৬) সচিবালয় ।

*****

Comments

Related Items

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women and the Anti-partition Movement):-

সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনকালে লর্ড কার্জন প্রশাসনিক অজুহাত দেখিয়ে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২০শে জুলাই সরকারিভাবে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে বাংলা তথা ভারতে এ

বিশ শতকের ভারতে নারী আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

বিশ শতকের ভারতে নারী আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (Women's Movements in the Twentieth Century):-

বিশ শতকের ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনগুলির মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চারটি জাতীয় আন্দোলন হল—(i) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্ব

মানবেন্দ্রনাথ রায় ও ভারতের বামপন্থী আন্দোলন

মানবেন্দ্রনাথ রায় ও ভারতের বামপন্থী আন্দোলন(M.N.Roy and the Left Movement in India):-

মানবেন্দ্রনাথ রায়ের আসল নাম হল নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য । বিপ্লবী কাজ করতে গিয়ে তিনি অসংখ্য ছদ্মনাম গ্রহণ করেন, যেমন— মি. মার্টিন, হরি সিং, ডা. মাহমুদ, মি.

বিশ শতকের ভারতে উপনিবেশ-বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থী রাজনীতির অংশগ্রহণ

বিশ শতকের ভারতে উপনিবেশ-বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থী রাজনীতির অংশগ্রহণ (Participation of the Left in the Anti-Colonial Movement in India):-

রুশ বিপ্লবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানবেন্দ্রনাথ রায়, অবনী মুখার্জি, মহম্মদ আলি সহ ২৪ জন প্রবাসী ভারতীয়

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন (Quit India Movement and the Working Class):-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ই আগস্ট মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেয় । এই আন্দো