ইন্দোনেশিয়া (Indonesia) :
সুমাত্রা, জাভা, বোর্ণিও, সিলিবিস, মলাক্কা, বলিদ্বীপ প্রভৃতি প্রায় একশোটি দ্বীপ নিয়ে ইন্দোনেশিয়া গঠিত । ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা । ব্রিটিশ ও পোর্তুগিজদের বিতাড়িত করে ডাচরা এখানে উপনিবেশ গড়ে তুলেছিল । ওলন্দাজদের ঔপনিবেশিক অত্যাচার, শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে ডঃ আহমেদ সুকর্ণ ও তাঁর ভাই সুহার্ত 'ইন্দোনেশিয়ান ন্যাশনাল পার্টি' গঠন করেন ও ডঃ আহমেদ সুকর্ণ -এর নেতৃত্বে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয়তাবাদী দল মুক্তি আন্দোলন পরিচালনা করেন । ডাচরা আহমেদ সুকর্ণ -কে গ্রেপ্তার করে এবং ডঃ মহম্মদ হাত্তা ও জাহোরির কে দেশ থেকে বিতাড়িত করেন । এর আগে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে ইন্দোনেশিয়ার কমিউনিস্টদের কাছ থেকেও প্রতিরোধ এসেছিল । কিন্তু ওলন্দাজ সরকার শক্ত হাতে সে সব আন্দোলন দমন করেন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে ওলন্দাজরা জার্মানদের কাছে পরাজিত হলে ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে জাপানের সামরিক সহযোগিতায় ডঃ আহমেদ সুকর্ণ আন্দোলন শুরু করেন ও এই ভূখন্ড জাপান দখল করে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের পর ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই আগস্ট সুকর্ণ -র নেতৃত্বে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয়তাবাদী দল স্বাধীনতা ঘোষণা করেন ও ডঃ আহমেদ সুকর্ণ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন । এর মধ্যে ডাচরা পুনরায় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করলে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে । শেষ পর্যন্ত ওলন্দাজরা আন্তর্জাতিক চাপের কাছে পরাজিত হয় এবং ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ইন্দোনেশিয়াকে স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে ঘোষণা করে ইন্দোনেশিয়ার সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় । ডঃ সুকর্ণ ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি ও মহম্মদ হাত্তা প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ।
মালয়েশিয়া (Malaysia) :
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়, সিঙ্গাপুর, পেনাং, সারাওয়াক প্রভৃতি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত মালয় ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশদের পরাজিত করে জাপান এই অঞ্চলগুলির দখল নেয় । কিন্তু ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে জাপানের পরাজয়ের পর ব্রিটিশরা আবার মালয় অধিকার করে । মালয় ছিল ছোটো ছোটো কয়েকটি অঞ্চলের সমন্বয়ে গড়া, সেজন্য দীর্ঘদিন এখানে স্বাধীনতার আন্দোলন তেমনভাবে গড়ে উঠে নি । শেষ পর্যন্ত এই সব অঞ্চলের নেতারা একযোগে কাজ করতে স্বীকৃত হলে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে এগারোটি ছোটো ছোটো রাজ্য নিয়ে মালয় যুক্তরাজ্য বা মালয়েশিয়া গঠিত হয় । তখন থেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান পায় । টুঙ্কু আবদুর রহমান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন । সিঙ্গাপুরকে মালয়েশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি । ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে সিঙ্গাপুর দ্বীপটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে ।
*****
- 1235 views