ভারতের স্বাধীনতা আইন ও ক্ষমতা হস্তান্তর (Indian Independence Act, 1947)

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 04/24/2012 - 14:39

ভারতের স্বাধীনতা আইন ও ক্ষমতা হস্তান্তর (Indian Independence Act of 1947 and The Transfer of Power) :

লর্ড মাউন্টব্যাটেন তাঁর প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় পাঠালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি প্রস্তাবটি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পেশ করেন । পরের দিন ৪ঠা জুলাই ভারতের স্বাধীনতা বিলটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদনের পর রাজকীয় সম্মতির জন্য পাঠানো হয় । ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই জুলাই ভারতের স্বাধীনতা বিলটি রাজকীয় সম্মতি লাভের পর 'ভারতীয় স্বাধীনতা আইন -১৯৪৭ (Indian Independence Act of 1947) -এ পরিণত হয় । এই আইন অনুযায়ী ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই আগস্ট প্রথমে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, বেলুচিস্তান, সিন্ধু, পশ্চিম পাঞ্জাব ও আসামের শ্রীহট্ট সহ সমগ্র পূর্ব বঙ্গ নিয়ে পকিস্তান ডোমিনিয়ান গঠিত হয় । ওই দিন মধ্য রাত্রে ভারত ডোমিনিয়ানের জন্ম হয় । ব্রিটিশ সরকার সমস্ত ক্ষমতা ভারতীয়দের হাতে হস্তান্তর করে দীর্ঘ দুশো বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়েছিলেন । ১৫ই আগস্ট থেকে পাকিস্তানভারত দুটি পৃথক স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠিত হয় । দুটি দেশের জন্য দুজন গভর্নর জেনারেল এবং দুটি আইনসভা থাকবে । দুটি রাষ্ট্রের জন্য দুটি গণপরিষদ সংবিধান রচনা করবে । এই ব্যবস্থা অনুযায়ী ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী জওহারলাল নেহরুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন । ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ গণপরিষদের সভাপতি এবং মাউন্টব্যাটেন গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন । জওহারলাল নেহরু স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন । মহম্মদ আলি জিন্নাহ হন পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল ।  দুটি রাষ্ট্রই ব্রিটিশ কমনওয়েলথ -এর সদস্য হিসাবে স্বীকৃতি পাবে বলা হয় । পূর্ণ স্বাধীন দেশের মর্যাদা প্রাপ্তির পরমুহুর্তেই জওহারলাল নেহরু ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই আগস্ট মধ্যরাত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের এক জরুরি বৈঠক ডেকে চরম উচ্ছ্বাসে বলেন, "মধ্যরাত্রে সমগ্র পৃথিবী যখন নিদ্রামগ্ন ভারত তখন জীবন ও স্বাধীনতার আনন্দে জেগে উঠবে ।" (At the stroke of the midnight hour when the world sleeps India will awake to life and freedom.) ।

*****

Related Items

অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি (Anti-Circular Society)

অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি (Anti-Circular Society):-

বাঙালিদের ব্রিটিশ বিরোধিতাকে দুর্বল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসক লর্ড কার্জন প্রশাসনিক অজুহাত দেখিয়ে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২০শে জুলাই সরকারিভাবে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা ঘোষণা কর

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে ছাত্র আন্দোলন

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে ছাত্র আন্দোলন (Participation of Students in the anti-Partition Movement of Bengal):-

বাংলার মানুষদের ব্রিটিশ বিরোধিতাকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসক লর্ড কার্জন প্রশাসনিক অজুহাত দেখিয়ে ১৯০৫ খ্র

বিশ শতকের ভারতে ছাত্র আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

বিশ শতকের ভারতে ছাত্র আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (Students' Movements in Twentieth Century):-

বিশ শতকের ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনগুলির মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চারটি জাতীয় আন্দোলন হল—(i) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশি আন্দ

আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী

আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী (Women's Wing of the Ajad Hind Fauj):-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে রাসবিহারী বসু জাপানে গিয়ে সেখানে তিনি বিপ্লবীদের সংগঠিত করার চেষ্টায় ছিলেন । ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের

কল্পনা দত্ত (Kalpana Datta)

কল্পনা দত্ত (Kalpana Datta):-

বিশ শতকে ব্রিটিশ-বিরোধী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠে । সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজ প্রথমদিকে পরোক্ষভাবে অংশ নিতে শুরু করলেও ব