Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 15:50

ভারতের জাতীয় পতাকা (National Flag of India)

জাতীয় পতাকা জাতীয় মর্যাদার প্রতীক । ভারতের জাতীয় পতাকার তিনটি রং । ওপরে গাঢ় গৈরিক বর্ণ ত্যাগ, বৈরাগ্য ও সাহসিকতার প্রতীক । মাঝে সাদা রং শান্তি ও সত্যের প্রতীক । নীচের সবুজ রং বিশ্বাস ও প্রাণ প্রাচুর্যের ইঙ্গিত বহন করে । সাদা রং -এর মাঝখানে ঘন নীল রঙের চব্বিশটি দণ্ডযুক্ত 'অশোকচক্র' হল ন্যায়, ধর্ম ও প্রগতির প্রতীক । ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২২শে জুলাই ভারতীয় গণপরিষদ কর্তৃক ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা অনুমোদিত হয় । পরবর্তীকালে এটি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকার মর্যাদা লাভ করে । ভারতে এই পতাকাটিকে সাধারণত "তেরঙা" বা "ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা" বলা হয় । পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া কৃত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের 'স্বরাজ' পতাকার ভিত্তিতে এই পতাকাটির নকশা প্রস্তুত করা হয়েছিল । জাতীয় পতাকা ভারতের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গর্বের প্রতীক । এই পতাকার অধিকার অর্জনের জন্য লক্ষ লক্ষ শহিদ অকাতরে স্বাধীনতার বেদিমূলে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন । তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা বশত এই পতাকাকে সর্বদা ঊর্ধে তুলে ধরা দেশবাসী মাত্রেরই প্রধান ও পবিত্র কর্তব্য ।

আইনত, কেবলমাত্র খাদিবস্ত্র দিয়েই জাতীয় পতাকা প্রস্তুত করার নিয়ম রয়েছে । ভারতীয় মানক ব্যুরো (Bureau of Indian Standards) এই পতাকা উৎপাদনের পদ্ধতি ও নির্দিষ্ট নিয়মকানুন স্থির করে দেয় । ২০০৫ সালে পতাকাবিধি পুনরায় সংশোধন করে কয়েকটি বিশেষ ধরনের বস্ত্র ব্যবহারের অতিরিক্ত ব্যবস্থা করা হয় । জাতীয় পতাকা তৈরির অধিকার খাদি উন্নয়ন ও গ্রামীণ শিল্প কমিশনের হাতে ন্যস্ত । এই কমিশন বিভিন্ন আঞ্চলিক গোষ্ঠীকে জাতীয় পতাকা তৈরির অধিকার দিয়ে থাকে । ২০০৯ সালের তথ্য অনুযায়ী জাতীয় পতাকার একমাত্র উৎপাদক হচ্ছে কর্ণাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ । পতাকার ব্যবহারবিধি 'ভারতীয় পতাকাবিধি' (Flag Code) আইন অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হয় । পুরনো বিধি অনুযায়ী, স্বাধীনতা দিবস, সাধারণতন্ত্র দিবস সহ অন্যান্য জাতীয় দিবস ছাড়া সাধারণ নাগরিকেরা পতাকা উত্তোলন করতে পারতেন না । ২০০২ সালে, এক নাগরিকের আপিলের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট সাধারণ নাগরিকদের জাতীয় পতাকা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে পতাকাবিধি সংস্কারের নির্দেশ দেন । সেই মতো ভারতের কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট পতাকাবিধি সংস্কার করে কয়েকটি সীমিত ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকার ব্যবহার অনুমোদিত করে । 

*****

Related Items

শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

প্রশ্ন : শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

উঃ- ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৩৮ বছর বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় শ্রীরামপুর মিশনের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

প্রশ্ন : বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

প্রশ্ন : ১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

উঃ- ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় থেকেই এই বিদ্রোহের চরিত্র বা প্রকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ধারার ইতিহাসচর্চার নানা ধরনের গবেষণালব্দ মতামত পাওয়া যায় ।

কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

প্রশ্ন : কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?

প্রশ্ন : এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?