প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 12/20/2020 - 20:06

প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (Resistance and Rebellion) : ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জুন নবাব সিরাজদ্দৌলাকে পলাশির যুদ্ধে পরাজিত করার পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে তাদের ক্ষমতা বিস্তার করতে শুরু করে । এদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অপশাসনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা শ্রেণির মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলে ও বিদ্রোহ ঘোষণা করতে থাকে । প্রাথমিকভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনে কৃষকসমাজ ও উপজাতি গোষ্ঠী সবথেকে বেশি শোষিত ও অত্যাচারিত হয় । ফলে সবার আগে কৃষকসমাজ ও উপজাতি গোষ্ঠী ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে । এ ছাড়া ঔপনিবেশিক শাসনকালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অরণ্য আইন পাশ করিয়ে অরণ্যসম্পদ সংরক্ষণ করলে তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অরণ্যচারী আদিবাসী গোষ্ঠীও বিদ্রোহী হয়ে ওঠে । ব্রিটিশ কোম্পানির কুশাসনের পাশাপাশি কৃষকসমাজ ও উপজাতি গোষ্ঠী জমিদার, মহাজন ও ব্যবসায়ীদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হয় । কোম্পানির নতুন ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর থেকে কৃষক ও উপজাতি গোষ্ঠীর বিদ্রোহের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে । নতুন ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ কোম্পানির সমর্থনে জমিদার, মহাজন ও ব্যবসায়ীদের অত্যাচারের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে কৃষক ও উপজাতি গোষ্ঠীর ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যায় এবং তারা বিদ্রোহের পথে যেতে বাধ্য হয় । এই সমস্ত কৃষক ও উপজাতি বিদ্রোহগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল— চুয়াড় বিদ্রোহ, কোল বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ, মুন্ডা বিদ্রোহ, রংপুর বিদ্রোহ, ভিল বিদ্রোহ, সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ, ওয়াহাবি-ফরাজি বিদ্রোহ, পাগলপন্থী বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ ও পাবনার কৃষকবিদ্রোহ ।

******

Comments

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।