মরু অঞ্চল প্রসারণের কারণ (Causes of desertification)

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 07/29/2021 - 20:10

মরু অঞ্চল প্রসারণের কারণ (Causes of desertification) : সাধারণত মরুভূমিসংলগ্ন অঞ্চলে ধুলোবালির ঝড়, তীব্র গতির বায়ুপ্রবাহ, অতিরিক্ত বাষ্পীভবন, কৃষিভূমি ও তৃণভূমিতে বালিয়াড়ি গড়ে ওঠা, খরা, ভূমিক্ষয় প্রভৃতির মাধ্যমে মরুকরণ ঘটে । মরুকরণের ফলে মরুভূমি অঞ্চলের আয়তন বৃদ্ধি হয়— এর প্রধান কারণগুলি হল—

(১) পৃথিবীর অক্ষের পরিবর্তন : বিজ্ঞানীদের মতে আজ থেকে প্রায় ১২ হাজার বছর আগে পৃথিবীর অক্ষের সামান্য পরিবর্তন ঘটে । এর ফলে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি জলবায়ু অধিক উষ্ণ হয়ে ওঠে । আফ্রিকার সেনেগাল উপকূলে মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে দক্ষিণে স্থানান্তরিত হয় । ফলে সাহারা, থর, আরব মরুভূমি অঞ্চল জুড়ে মরুকরণ প্রক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি পায় । তার প্রভাবে আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির সাহেল অঞ্চলে দ্রুত মরুভূমির প্রসারণ ঘটে চলেছে ।

(২) বৃষ্টিহীনতা : পৃথিবীর শুষ্কপ্রায় অঞ্চলগুলিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব কম ও অত্যন্ত পরিবর্তনশীল । একটানা কয়েক বছর স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টিপাত হলে শুষ্ক অঞ্চলগুলি মরুঅঞ্চলে প্রসারিত হতে থাকে ।

(৩) অতিরিক্ত কৃষিকাজ : ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মরুভূমি লাগোয়া প্রায় শুষ্ক অঞ্চলে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রয়োগে কৃষিকার্যের ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে । ফলে মরু প্রসারণ ঘটছে ।

(৪) ভূমির অপব্যবহার : অবৈজ্ঞানিক প্রথায় পশুচারণ, জমির অতি ব্যবহার এবং নির্বিচারে উদ্ভিদ ধ্বংসের ফলে ভূমি পরিত্যক্ত হয় । তখন পার্শ্ববর্তী মরুভূমির বালি পরিত্যক্ত ভূমিকে গ্রাস করতে থাকে এবং ক্রমশ ওই পরিত্যক্ত ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হতে থাকে । 

******

Comments

Related Items

অধঃক্ষেপণ (Precipitation)

অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হাল্কা হওয়ার দরুন ঊর্ধগামী হয় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ

ঘনীভবন (Condensation)

ঘনীভবন (Condensation) : যে প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প জলকণায় পরিণত হয়, তাকে ঘনীভবন বলে । আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে গেলে বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয় । এই জলকণাসমূহ বিভিন্ন

বায়ুর আর্দ্রতা (Humidity)

বায়ুর আর্দ্রতা (Humidity) : বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিকে বা জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাসকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে । বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকলে তাকে আর্দ্র বায়ু এবং কম থাকলে তাকে শুষ্ক বায়ু বলে । বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা প্রধানত বায়ুর উষ

বায়ুর আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ (Humidity and Precipitation)

বায়ুর আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ (Humidity and Precipitation):

বায়ুপ্রবাহের পরিমাপ

বায়ুপ্রবাহের পরিমাপ : বায়ু কোনদিক থেকে প্রবাহিত হচ্ছে, তা বাতপতাকার (Windvane)-এর সাহায্যে সহজেই নির্ণয় করা যায় । অ্যানিমোমিটার (Anemometer) নামক যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ পরিমাপ করা হয় । বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ মাপার একক হল নট (১ নট = ১.৮ ক