বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (Waste Management)

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 11/05/2021 - 09:56

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (Waste Management) : যে কার্যকরী পরিচালন পদ্ধতির মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থের সংগ্রহ, অপসারণ, পরিবহণ, শোধন, ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস ও পুনরায় বর্জ্য পদার্থকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়, তাকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায়, বর্জ্যের উৎপাদন নিয়ন্ত্রন এবং অবশিষ্টাংশের বিলিব্যবস্থা করার প্রক্রিয়াকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলে । বর্জ্য পদার্থগুলিকে শুধু অপসারণ বা স্থানান্তরণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ না করে প্রয়োজন মতো বর্জ্যগুলির পরিমান হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বর্জ্যপদার্থ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় । আর এটাই হল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা । বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি হল তিনটি R (3R) — (১) Reduce বা পরিমাণ হ্রাস, (২) Reuse বা বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার এবং (৩) Recycle বা বর্জের পুনর্নবীকরণ ।   

(১) বর্জ্যের পরিমাণগত  হ্রাস (Reduction of waste) : পরিবেশের ওপর বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করতে হলে এর প্রাথমিক কাজ হল গৃহস্থালি বর্জ্যের পরিমাণ কমানো । জীবনযাত্রার প্রয়োজনে ব্যবহৃত দ্রব্যের পুনর্ব্যবহার ও পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে বর্জ্যের পরিমাণ অনেকাংশে হ্রাস করা যায় । জীবনযাত্রার পদ্ধতিগত পরিবর্তন ঘটিয়ে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করা যায় । 

(২) বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার (Reuse of waste) : কোনো দ্রব্যকে একবার ব্যবহারের পর যখন প্রায় সমান বা অন্য ফলের লক্ষ্যে দ্রব্যটিকে পুনরায় ব্যবহার করা হয়, তাকে পুনর্ব্যবহার বলে । ব্যবহৃত দ্রব্যকে বর্জ্য হিসাবে ফেলে না দিয়ে তাকে পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করা যেতে পারে । দুধের বোতল, প্লাস্টিক বাক্স, জাহাজের কন্টেনার, ঢেউখেলানো ফাইবার বোর্ড প্রভৃতি দ্রব্যকে গতানুগতিকভাবে পুনর্ব্যবহার করা যেতে পারে ।

(৩) বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ (Recycling of waste) : বর্জ্যপদার্থকে নতুন প্রকার প্রয়োজনীয় দ্রব্যে পরিণত করার প্রক্রিয়াই হল পুনর্নবীকরণ । বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়ায় কাগজের বর্জ্য, প্লাস্টিক বর্জ্য, কাঁচের বোতলের বর্জ্য, ফলের রসের ক্যান ইত্যাদি দ্রব্যের পুনর্নবীকরণ করে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস ও নিবারন করা যেতে পারে । যেমন — জৈব আবর্জনাকে জৈব সারে পরিণত করে বাড়ির বাগানে ব্যবহার করা যায় । পুরানো খবরের কাগজ থেকে কাগজের মণ্ড তৈরি করা বা কাগজের ঠোঙা তৈরি করা যায় ইত্যাদি ।   

*****

Comments

Related Items

ভারতের ভূপ্রকৃতি (Physical Emvironment of India)

ভারতের ভূপ্রকৃতি (Physical Environment of India) : ভারত একটি সুবিশাল দেশ ও এর ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় । উত্তর ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত পামীর গ্রন্থি থেকে বের হওয়া হিন্দুকুশ, সুলেমান, খিরথর কারাকোরাম, হিমালয় প্রভৃতি কয়েক

ভারতের বর্তমান রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সমূহ

ভারতের বর্তমান রাজ্য সমূহ (২০২১ সাল পর্যন্ত ) :

১. অন্ধ্রপ্রদেশ : এই রাজ্যের আয়তন হল ১,৬০,২০৫ বর্গ কিমি. ও রাজধানী হল অমরাবতী ।

২. অরুণাচল প্রদেশ : এই রাজ্যের আয়তন হল ৮৩,৭৪৩ বর্গ কিমি. ও রাজধানী হল ইটানগর ।

স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির বিন্যাস

স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির বিন্যাস : প্রায় ১০০ বছর প্রত্যক্ষভাবে ইংরেজ শাসনাধীন থাকার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুসারে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে এব

ভারতের ভৌগলিক অবস্থান

অবস্থান (Location) : ভারত পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত একটি দেশ । নিরক্ষরেখার উত্তরে অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে এবং মূলমধ্যরেখার পূর্বে অর্থাৎ পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত অর্থাৎ ভারত উত্তর-পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত । ভারতের মূল ভূখণ্ড দক্ষি

ভারত (India)

ভারত :- প্রাচীন পারসিক লিপিতে 'সপ্ত সিন্ধু' কে বলা হয়েছে হপ্ত হিন্দু । সিন্ধু তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষকে বিদেশীরা হিন্দু বলত এবং তার থেকেই হিন্দুস্থান কথাটি এসেছে । প্রাচীন পারসি শব্দ হিন্দুস (Hindus) থেকে উৎপন্ন ইণ্ডাস (Indus) থেকে ইণ্ডিয়া (INDIA) নামট