Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 06/21/2021 - 10:52

গিরিখাত (Gorge) : পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চগতি বা পার্বত্যপ্রবাহে নদীর ক্ষয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, গিরিখাত হল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । আর্দ্র ও আর্দ্রপ্রায় অঞ্চলে নদীর উচ্চ বা পার্বত্য প্রবাহে ভূমির ঢাল বেশি থাকায় নদীর স্রোতের বেগ প্রচন্ড হয় । নদীস্রোত বড় বড় শিলাখন্ড, নুড়ি, পাথর প্রভৃতি বহন করে নামতে থাকে । শিলাখন্ডের আঘাতে নদী প্রবল নিম্নক্ষয় করে । এরূপ নিম্নক্ষয়ের কারণে নদী উপত্যকা খুব গভীর ও সংকীর্ণ হয়ে ওঠে । আবহবিকার, পুঞ্জিতক্ষয় ইত্যাদির প্রভাবে কিছু পরিমাণ পার্শ্বক্ষয় হয় । ফলে নদী উপত্যকা চওড়া হয়ে ইংরেজি 'V' অক্ষরের মতো আকৃতি ধারণ করে । অতি গভীর ও সংকীর্ণ এরূপ নদী উপত্যকাকে গিরিখাত বলে । গিরিখাত যতটা গভীর ততটা চওড়া নয় । কখনো কখনো এই সমস্ত গিরিখাতের তলদেশের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পর্বতের চূড়ার মধ্যে উচ্চতার পার্থক্য প্রায় কয়েক হাজার মিটার হয়।

শতদ্রু, সিন্ধু, তিস্তা প্রভৃতি নদীর হিমালয়ের পার্বত্য গতিপথে গভীর নদী উপত্যকা বা গিরিখাত দেখতে পাওয়া যায় । সিন্ধুনদের অরুণ গিরিখাত বিশেষ উল্লেখযোগ্য । দক্ষিণ পেরুর কল্কা নদীর গিরিখাতটি বিশ্বের গভীরতম গিরিখাতগুলির অন্যতম । এর গভীরতা প্রায় ৪,৩৭৫ মিটার । নেপালের কালিগণ্ডক নদীর গিরিখাতটি পৃথিবীর গভীরতম গিরিখাত এবং এর গভীরতা ৫,৫৭১ মিটার ।

****

Comments

Related Items

হিমবাহের কাজ (Works of Glaciers)

হিমবাহের কাজ (Works of Glaciers) : পৃথিবীর দুই মেরু অঞ্চলে ও উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে অত্যধিক ঠান্ডা । এইসব অঞ্চলে তুষারক্ষেত্র ও হিমবাহ দেখা যায় । অত্যধিক শীতের জন্য পর্বতের উঁচু চুড়ায় ও মেরু অঞ্চলের বায়ুমন্ডলের জলীয়বাষ্প সারা বছর তুষারে জমে থাকে । পার্বত্

হিমবাহ পৃষ্ঠের প্রকৃতি

হিমবাহ পৃষ্ঠের প্রকৃতি : ভূবিজ্ঞানী মঙ্কহাউস -এর মতে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহের উপরে নানা ধরনের ফাটল দেখা যায় । এই ফাটলগুলি প্রধানত তিন প্রকারের হয় যথা—

হিমরেখা [Snow Line]

হিমরেখা [Snow Line] : মেরুপ্রদেশ ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের তীব্র শৈত্যে, যে কাল্পনিক সীমারেখার উপরে অত্যধিক শীতলতার জন্য সারা বছর তুষার জমে থাকে এবং যে সীমারেখার নীচে উত্তাপে তুষার গলে জলে পরিণত হয় সেই সীমারেখাকে হিমরেখা । ভূবিজ্ঞানী মঙ্ক

হিমশৈল (Iceberg)

হিমশৈল (Iceberg) :  মহাদেশীয় হিমবাহের হিমরেখা সমুদ্রপৃষ্ঠ হওয়ায় কখনো কখনো হিমাবাহের বিশালাকার বরফের অংশ ভেঙে সমুদ্রের জলে এসে পড়ে ও জলে ভাসতে থাকে । এইরূপ সমুদ্রের জলে ভাসমান ও গতিশীল বিশালাকার বরফের স্তুপকে হিমশৈল বলে । হিমশৈল মিষ্

হিমবাহের প্রকারভেদ (Classification of Glacier)

হিমবাহের প্রকারভেদ (Classification of Glacier) : বিজ্ঞানী অলম্যান অবস্থানের ভিত্তিতে হিমবাহকে তিনটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করেন । যথা— (ক) মহাদেশীয় হিমবাহ (Continental Glacier), (খ) পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ (Mountain or Valley glacier)