প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদের ত্রুটি

Submitted by arpita pramanik on Sat, 12/22/2012 - 09:09

প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদের ত্রুটি (Drawbacks of Natural Selection Theory)

[i] ডারউইন ছোটো এবং অস্থায়ী প্রকারণের ওপর খুব বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন, কিন্তু দেখা গেছে যে, ওইগুলির বংশানুসরণ না ঘটায় অভিব্যক্তিতে ওদের কোনো ভুমিকা নেই ।

[ii] কোশের এবং জনন কোশের প্রকারণগুলির মধ্যে ডারউইন প্রভেদ করতে পারেননি ।

[iii]  বহু প্রকারণই জিনের কার্যগত ফল, কিন্তু তার কোনো অভিযোজনগত মূল্য না থাকায় জীব বিবর্তনে সাহায্য করে না ।

[iv] ডারউইন প্রকারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করলেও প্রকারণের উত্পত্তি সম্বন্ধে কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দেন নি ।

[v] ডারউইন উপযুক্তের বেঁচে থাকার কথা বললেও উপযুক্তের আবির্ভাব সম্বন্ধে কিছু বলেন নি ।

[vi] কোনও অঙ্গ তার উত্পত্তির শুরুতেই কীভাবে প্রয়োজনীয় হতে পারে ডারউইন তার ব্যাখ্যা করেন নি ।

[vii] কোনও অঙ্গের অতি স্বতন্ত্রীকরণের ফলেও প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে ।  ডারউইনবাদে এর কোনও উল্লেখ নেই ।

[viii] জলজপ্রাণী থেকে কীভাবে স্থলজ প্রাণীর বিকাশ ঘটেছে,  ডারউইনবাদে তার কোনও উল্লেখ নেই ।

[ix] ডারউইন যে মিশ্র বংশগতির কথা বলেছেন মেন্ডেলের সূত্র অনুযায়ী তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে ।

[x] ডারউইন মিউটেশনকে 'প্রকৃতির খেলা' বলে উপেক্ষা করেছেন । 

 

ল্যামার্কবাদ ও ডারউইনবাদের পার্থক্য

ল্যামার্কবাদ ডারউইনবাদ
১. এই মতবাদ অনুসারে জীবমাত্রই প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে বেঁচে থাকে এবং পরিবেশের তারতম্য অনুযায়ী জীবদেহের অভিযোজন জনিত তারতম্য ঘটে । ১. এই মতবাদ অনুসারে যে সমস্ত জীব জীবন সংগ্রামে জয়ী তারাই প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারে । জীবকে সারাক্ষণই বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হয় ।
২. ব্যবহার ও অব্যবহারের জন্য কোনও অঙ্গের পরিবর্তন, বৃদ্ধি বা অবলুপ্তি ঘটে এবং ওই অর্জিত পরিবর্তনগুলি বংশানুক্রমে সঞ্চারিত হওয়ায় জৈব বিবর্তন ঘটে । ২. জীবন সংগ্রামের মাধ্যমে বেঁচে থাকার জন্য জীবদেহে নানান ধরনের ভেদ বা প্রকারণ দেখা যায়, যা অভিব্যক্তির অন্যতম প্রধান কারণ ।
৩. ল্যামার্কের মতে, দেহের নিষ্ক্রিয় অঙ্গগুলির অতীতে ব্যাবহার ছিল, কিন্তু অব্যবহারের জন্যই বর্তমানে অঙ্গগুলি লুপ্তপ্রায় হয়েছে । ৩. ডারউইনবাদে দেহের নিষ্ক্রিয় অঙ্গগুলি সম্বন্ধে কোনও উল্লেখ বা ব্যাখ্যা নেই ।
৪. ল্যামার্কবাদে জীবের 'আয়তন বৃদ্ধির কথা' বলা হয়েছে । ৪. ডারউইনবাদে জীবের 'সংখ্যা বৃদ্ধির কথা' বলা হয়েছে ।

*****

Related Items

মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ

দেহ গঠন ও লিঙ্গ নির্ধারণের বৈশিষ্ট্য অনুসারে ক্রোমোজোম দু-ধরণের হয়, - অটোজোম, সেক্স-ক্রোমোজোম । জীবের দেহজ বৈশিষ্ট্য নির্ধারক ক্রোমোজোমদের অটোজোম বলা হয় । মানুষের 46টি ক্রোমোজোমের মধ্যে 44টি অটোজোম থাকে । এই ক্রোমোজোমগুলি মানবদেহের ...

মেন্ডেলের বংশগতি সূত্র

মেন্ডেল বংশগতির দুটি সূত্র প্রবর্তন করেন । প্রথম সূত্রটি একসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত এবং দ্বিতীয় সূত্রটি দ্বিসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত । মেন্ডেলের প্রথম সূত্রটি 'পৃথকীভবনের সূত্র নামে পরিচিত । এই সূত্রানুযায়ী "কোনও জীবের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য একটি জনু থেকে আর ...

ড্রসোফিলার দ্বি-সংকর জননের পরীক্ষা

একটা হোমোজাইগাস ধূসর রং -এর লম্বা ডানাযুক্ত ড্রসোফিলার সাথে অপর একটি হোমোজাইগাস কালো রং -এর লুপ্তপ্রায় ডানাযুক্ত ড্রসোফিলার সংকরায়ণ ঘটালে F1 জনুতে প্রাপ্ত সব মাছিই ধূসর রং -এর এবং লম্বা ডানাযুক্ত হয়; অর্থাৎ ধূসর রং এবং লম্বা ডানার বৈশিষ্ট্যগুলি প্রকট । ...

ড্রসোফিলার একসংকর জননের পরীক্ষা

একটি ধূসর বর্ণের পুরুষ ড্রসোফিলার সাথে একটি কালো রং -এর স্ত্রীর সংকরায়ণের ফলে F1 -এ সব অপত্যই ধূসর রং -এর হয় এবং তাদের সংকরায়ণের ফলে F2 জনুতে ধূসর এবং কালো রঙের ড্রসোফিলা 3 : 1 অনুপাতে পাওয়া যায় । অর্থাৎ অপরপক্ষে, কালো রং - এর পুরুষের সাথে ধূসর ...

গিনিপিগের দ্বি-সংকর জননের পরীক্ষা

মেন্ডেলের দ্বি-সংকর জনন প্রক্রিয়াটি প্রাণীদেহেও ঘটানো যেতে পারে । একটি বিশুদ্ধ প্রলক্ষণযুক্ত কালো (রঙ) ও অমসৃণ (রোম) গিনিপিগের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ প্রলক্ষণযুক্ত সাদা (রঙ) ও মসৃণ (রোম) গিনিপিগের সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে সব কালো ও অমসৃণ গিনিপিগ ...