কোশ ও কোশের প্রকারভেদ

Submitted by arpita pramanik on Sun, 12/09/2012 - 22:21

কোশ ও কোশের প্রকারভেদ (Cell and Types of Cells)

এককোশী জীব থেকে শুরু করে সমস্ত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহ এক বা একাধিক কোশ দিয়ে গঠিত, তাই কোশকে জীবদেহের গঠনমূলক একক বলা হয় । একটি মাত্র কোশ থেকেই প্রত্যেক জীবের জীবনযাত্রা শুরু হয় । এছাড়া জীবদেহের সমত জৈবিক ক্রিয়াগুলি কোশের মধ্যেই সম্পন্ন হয় । জীব দেহের যে সব জৈবিক [biological] কাজ (যেমন: পরিপাক, পুষ্টি, শ্বসন, রেচন, বৃদ্ধি, জনন ইত্যাদি) সম্পন্ন হয়, সেগুলি সবই কোশে এককভাবে সম্পন্ন হতে পারে । এই জন্য কোশকে এক কথায় জীবনের কার্যগতগঠনগত একক বলা হয় ।

কোশের সংজ্ঞা [Definition of Cell] :- অর্ধভেদ্য বা প্রভেদক ভেদ্য আবরণী বেষ্টিত, প্রোটোপ্লাজম নির্মিত, স্ব-প্রজননশীল জীবদেহের গঠনমূলক এবং জীবজ ক্রিয়ামূলক একককে কোশ বলা হয় ।

যে পর্দার মাধ্যমে দ্রবণের দ্রাবক চলাচল করে কিন্তু দ্রাব্য চলাচল করতে পারে না, তাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে । কোশ পর্দার মাধ্যমে দ্রাবক ছাড়াও কিছু কিছু নির্বাচিত দ্রাব্যের অণু চলাচল করতে পারে বলে কোশ পর্দাকে প্রভেদক ভেদ্য পর্দা বা পছন্দমাফিক ভেদ্য পর্দা বলা হয় ।

কোশের প্রকারভেদ [Types of Cells]:-  কোশের গঠন বৈচিত্র্য, বিশেষ করে নিউক্লিয়াসের গঠন প্রকৃতি অনুসারে সমস্ত রকম উদ্ভিদ ও প্রাণীকোশকে প্রধানত দু'টি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা : [১] প্রোক্যারিওটিক কোশ বা আদি কোশ এবং  [২] ইউক্যারিওটিক কোশ বা আদর্শ কোশ

[1] প্রোক্যারিওটিক কোশ বা আদি কোশ (Prokaryotic Cell):- যে কোশে সংগঠিত নিউক্লিয়াস এবং পর্দাঘেরা কোশঅঙ্গাণু থাকে না সেই রকম কোশকে প্রোক্যারিওটিক কোশ বা আদি কোশ বলে । যেমন: ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ-সবুজ শৈবাল (অ্যানাবিনা, নস্টক, অসিলেটোরিয়া, গ্লিওক্যাপসা প্রভৃতি) ।

[2] ইউক্যারিওটিক কোশ বা আদর্শ কোশ (Eukaryotic Cell):- যে কোশে সুগঠিত বা সংগঠিত নিউক্লিয়াস এবং পর্দাঘেরা কোশ-অঙ্গাণু থাকে, সেই রকম কোশকে ইউক্যারিওটিক কোশ বা আদর্শ কোশ বলে । যেমন : উদ্ভিদ ও প্রাণীকোশ ।

*****

Related Items

জননের সংজ্ঞা ও জননের প্রকারভেদ

জনন অর্থাৎ বংশবিস্তার হল জীবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য । পরিণত জীব অপত্য জীব সৃষ্টি করার মাধ্যমে নিজের প্রজাতির অস্তিত্ব বজায় রাখে । যে জীব থেকে অপত্য জীব সৃষ্টি হয় তাকে জনিতৃ জীব এবং জনিতৃ জীব থেকে সৃষ্টি হওয়া জীবকে অপত্য জীব বলে । জনিতৃ জীব থেকে অপত্য জীব ...

মাইটোসিসের দশা (Stages of Mitosis)

মাইটোসিস বিভাজন দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়, যথা:- নিউক্লিয়াসের বিভাজন বা ক্যারিওকাইনেসিস এবং সাইটোপ্লাজমের বিভাজন বা সাইটোকাইনেসিস । মাইটোসিসের নিউক্লিয়াসের বিভাজন বা ক্যারিওকাইনেসিস, চারটি দশায় সম্পন্ন হয় । মাইটোসিসের এই দশাগুলি হল ...

কোশ চক্র ও কোশ চক্রের পর্যায়

এক কথায় কোশের বৃদ্ধি ও জননের বিভিন্ন দশার চক্র বা চাকার মতো আবর্তনকে কোশ চক্র বলে । প্রতিটি জীবের মতো প্রতিটি কোশেরও একটি জীবন-চক্র আছে। কোশের এই জীবন-চক্র বিভাজন ও অবিভাজন এই দু'টি ঘটনার মধ্যে আবর্তিত হ'তে থাকে। জনিতৃ কোশের বিভাজনের ...

কোশ বিভাজনের প্রকারভেদ

জীবদেহে তিন রকমের কোশ বিভাজন দেখা যায়, যথা - অ্যামাইটোসিস, মাইটোসিস এবং মিয়োসিস । অ্যামাইটোসিস হল এক ধরনের প্রত্যক্ষ বা সরাসরি নিউক্লিয়াস বিভাজন । এই প্রক্রিয়ায় মাতৃ নিউক্লিয়াসটির মাঝ বরাবর খাঁজ সৃষ্টির মাধ্যমে অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি হয়। আবার এই অপত্য ...

কোশ বিভাজন ও কোশ বিভাজনের তাৎপর্য

আজ থেকে প্রায় ২৬০ কোটি বছর আগের ঘটনা । পৃথিবীতে জন্ম নিল প্রথম জীব । পৃথিবীর বুকে জাগল প্রাণের স্পন্দন । প্রথম সৃষ্টি হওয়া সেই জীব না ছিল উদ্ভিদ না কোন প্রাণী । জেলির মতো থকথকে খানিকটা প্রোটোপ্লাজম নিয়ে নির্দিষ্ট আকার ও আকৃতিবিহীন সেই জীবের দেহ গড়ে ...