প্রাণীর রেচনে ত্বক বা চর্ম, ফুসফুস এবং যকৃতের ভূমিকা

Submitted by arpita pramanik on Sun, 11/25/2012 - 21:23

প্রাণীর রেচনে ত্বক বা চর্ম, ফুসফুস এবং যকৃতের ভূমিকা (Role of skin, Lungs, Liver in animal excretion)

প্রাণীদেহের  অন্যান্য সাহায্যকারী রেচন অঙ্গগুলি হল চর্ম, ফুসফুস, এবং যকৃৎ ।

প্রাণীদের রেচনে চর্ম বা ত্বকের ভূমিকা [Role of skin in animal excretion]:- চর্ম প্রাণীদের পেশিকে আচ্ছাদন করে রাখে, ফলে এর প্রধান কাজ রক্ষণাত্মক (protective) । তা ছাড়া চর্ম স্পর্শেন্দ্রিয়রূপেও কাজ করে । চর্মের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল রেচনে সহায়তা করা । চর্মে অবস্থিত ঘর্মগ্রন্থি বা স্বেদগ্রন্থি থেকে যে ঘাম নিঃসৃত হয়, তার সাহায্যে দেহের অতিরিক্ত জল, খনিজ লবণ, এবং কিছু পরিমাণ অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া নির্গত হয় । চর্মের মাধ্যমে সামান্য পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) গ্যাস ব্যাপন প্রক্রিয়ায় দেহের বাইরে নির্গত হয় । চর্মে অবস্থিত সিবেসিয়াস গ্রন্থির মাধ্যমে অল্প পরিমাণে কোলেস্টেরল, ফ্যাটি অ্যাসিড ও হাইড্রোকার্বন রেচন পদার্থ হিসাবে বেরিয়ে আসে । 

প্রাণীদের রেচনে ফুসফুসের ভূমিকা [Role of Lungs in animal excretion]:- ফুসফুস মুখ্যত স্বাসযন্ত্র । কিন্তু ফুসফুস, গ্লুকোজ ও ফ্যাট দহনের ফলে উত্পন্ন কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং জলীয় বাষ্প নিশ্বাসের সময় নাসারন্ধ্র দিয়ে দেহের বাইরে নিষ্কাশিত করে রেচনে সহায়তা করে । ফুসফুস ঘন্টায় প্রায় 18 লিটার CO2 এবং দিনে প্রায় —400 ml জল (বাষ্পাকারে) নিশ্বাসের মাধ্যমে নির্গত করে ।

প্রাণীদের রেচনে যকৃতের ভূমিকা [Role of Liver in animal excretion]:- যকৃত মানব দেহের সবচেয়ে বড় পৌষ্টিক গ্রন্থি । যকৃতের মধ্যে হিমোগ্লোবিন বিশ্লিষ্ট হয়ে বিলিরুবিন, বিলিভারডিন, লেসিথিন প্রভৃতি রেচন পদার্থ সৃষ্টি করে । এই সব রেচন পদার্থ পিত্তরসের মাধ্যমে অন্ত্রে আসে এবং মলের সাহায্যে দেহ থেকে নির্গত হয় ।

*****

Related Items

ছত্রাক (Fungi)

ক্লোরোফিলবিহীন পরভোজী পুষ্টিসম্পন্ন ও ইউক্যারিওটিক প্রকৃতির সমাঙ্গদেহী উদ্ভিদদের ছত্রাক বলা হয় । ছত্রাকের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম । মানবজীবনে ছত্রাকের উপকারিতা ও অপকারিতা । পেনিসিলিয়াম, ঈস্ট প্রভৃতি উপকারী ছত্রাক । পেনিসিলিয়াম এক রকমের বহুকোশী মৃতজীবী ...

জীবাণু বা মাইক্রোবস (Microbes)

যে সমস্ত অতি ক্ষুদ্র এবং এককোশী বা বহুকোশী জীবদের খালি চোখে দেখা যায় না অথচ কেবলমাত্র অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায়, তাদেরই সাধারণভাবে জীবাণু বলে । অতিক্ষুদ্র ও আণুবীক্ষণিক জীবদের এককথায় জীবাণু বা অণুজীব বা মাইক্রোবস বলা হয় ।

রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাসের রোগ সংক্রমণ প্রক্রিয়া

ভাইরাস বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে, যেমন - ইনফ্লুয়েঞ্জা, AIDS, পোলিও, জল বসন্ত, মাম্পস, হাম, এনকেফালাইটিস, জলাতঙ্ক, পা ও মুখের ঘা, জন্ডিস, ডেঙ্গু জ্বর প্রভৃতি । ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস প্রধানত মানুষের শ্বসনতন্ত্রকে আক্রমণ করে, ফলে রোগীর হাঁচি, কাশি ও নির্গত মিউকাসের মাধ্যমে ...

ব্যাকটিরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাস বা ব্যাকটিরিওফাজ

1917 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী দ্য হেরেলী ব্যাকটিরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাসদের ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাস বা ব্যাকটিরিওফাজ বা ফাজ নামে অভিহিত করেন । এখন পর্যন্ত যেসব ব্যাকটিরিওফাজের অস্তিত্ব সম্পর্কে ভালো করে জানা গিয়েছে, তাদের মধ্যে 'T' শ্রেণির অন্তর্গত ব্যাকটিরিওফাজই প্রধান । ...

ভাইরাসে জড়ের ও প্রাণের লক্ষণ

ভাইরাসের দেহে সাইটোপ্লাজম থাকে না । ভাইরাস কোনো বহিঃস্থ উদ্দীপকে সাড়া দেয় না । ভাইরাসের চলন ক্ষমতা নেই । ভাইরাসের দেহে কোনোরকম বিপাক ক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না । পোষকের দেহ-কোশে ভাইরাস বংশবিস্তারে সক্ষম । ভাইরাসের দেহে প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডের ...