হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতার সঙ্গে বৈদিক সভ্যতার সম্পর্ক

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 04/17/2012 - 10:36

হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতার সঙ্গে বৈদিক সভ্যতার সম্পর্ক (Relation between the Harappan Civilisation with the Aryan Civilisation) :

সিন্ধু সভ্যতার সঙ্গে বৈদিক যুগের কী সম্পর্ক ছিল, তা বলা কঠিন । অনেকেই মনে করেন আর্যরা সিন্ধু সভ্যতার নির্মাণকর্তা । বিষয়টি বিতর্কিত । কিন্তু উভয় সভ্যতার মধ্যে তফাৎ এত বেশি যে, দুটি সভ্যতা একই জাতি সৃষ্টি করেছিল বলে মনে হয় না । স্যার জন মার্শাল মনে করেন দুটি সভ্যতা পৃথক । অধিকাংশ পণ্ডিতই তাঁর মতের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন । বস্তুত, উভয় সভ্যতার মধ্যে মিলের চেয়ে অমিল বেশি ।

(ক) সিন্ধু সভ্যতা ছিল নগরকেন্দ্রিক । কিন্তু আর্য সভ্যতা গড়ে উঠেছিল গ্রামকে কেন্দ্র করে । সিন্ধুবাসীরা পোড়া ইটের বাড়ি তৈরি করলেও, আর্যরা থাকত বাঁশ ও খড়ের তৈরি কুটিরে ।

(খ) সিন্ধু জনগণ কৃষিকাজ জানলেও আর্যরা প্রথমে তা জানত না । তারা যাযাবর জীবন যাপন করত ।

(গ) আর্যরা লোহার ব্যবহার জানলেও সিন্ধুবাসীরা তা জানত না ।

(ঘ) সিন্ধুবাসীরা শিব ও মাতৃকা দেবীর আরাধনা করলেও আর্যদের প্রধান দেবতা ছিল পুরুষ (ইন্দ্র) । আর্যরা যাগযজ্ঞ করলেও সিন্ধুবাসীরা তা করত বলে মনে হয় না ।

(ঙ) আর্যরা ঘোড়ার ব্যবহার জানলেও সিন্ধু জনগণ ঘোড়ার ব্যাপক ব্যবহার করত না । তারা বলদকে প্রধান জন্তু বলে মনে করত ।

(চ) আর্যরা লিখতে জানত না । বেদের অপর নাম ছিল শ্রুতি । কিন্তু সিন্ধুবাসীরা লিখতে জানত, যদিও সিন্ধুলিপির পাঠোদ্ধার আজও হয়নি ।

(ছ) আর্যরা মৃতদেহ দাহ করত । সিন্ধুবাসীরা কবর দিত ।

(জ) সিন্ধুদের মাটির তৈরি বাসনকোসন ছিল চিত্রিত ও ধূসরবর্ণ । আর্যদের তা ছিল কালচে লাল এবং তাতে কোনো ছবি আঁকা থাকত না ।

এইসব পার্থক্যের জন্যই উভয় সভ্যতার মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিল বলে মনে হয় না ।

*****

Related Items

সুলতানা রাজিয়া (Razia)

ইলতুৎমিসের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা রাজিয়া দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন । রাজিয়া ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২৪০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন । ইলতুৎমিসের পুত্ররা অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ইলতুৎমিস নিজেই কন্যা রিজিয়াকে দিল্লির সুলতান পদে মনোনীত করেন । তাঁর সিংহাসন লাভ ...

ইলতুৎমিস (Iltutmish)

দিল্লি সুলতানির প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ইলতুৎমিস । তিনি ১২১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন । কুতুবউদ্দিন তাঁকে ক্রীতদাস হিসাবে ক্রয় করেন । পরে তাঁর প্রতিভায় আকৃষ্ট হয়ে তাঁকে বদাউনের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন ও নিজ কন্যার সঙ্গে বিবাহ দেন । ...

কুতুবউদ্দিন আইবক (Qutb-ud-din Aibak)

১১৯১ খ্রিস্টাব্দে তরাইনের প্রথম যুদ্ধে পৃথ্বীরাজ ভারতের অন্যান্য রাজপুত রাজাদের সাহায্য নিয়ে মহম্মদ ঘুরিকে পরাস্ত করেন । পরের বছর অর্থাৎ ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ঘুরি বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে এসে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পৃথ্বীরাজকে পরাজিত নিহত করে দিল্লী ও আজমীর দখল করেন ...

সুলতানি আমল (Delhi Sultanate)

সুলতানি আমলে পর পর পাঁচটি রাজবংশ দিল্লির সিংহাসনে ক্ষমতাসীন ছিল । সেই পাঁচটি রাজবংশ হল - ইলবেরি তুর্কি বংশ বা দাসবংশ, খলজি বংশ, তুঘলক বংশ, সৈয়দ বংশ, লোদী বংশ। সুলতানি আমলে বলপূর্বক ও হত্যা করে সিংহাসন দখল করা ছিল অতি স্বাভাবিক ঘটনা ...

মহম্মদ ঘুরি (Muhammad Ghori)

আফগানিস্তানের গজনী ও হিরাটের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল ঘোর রাজ্য । সেই সময় উত্তর ভারতের হিন্দু রাজাদের মধ্যে কোনো ঐক্য ছিল না । এই সব হিন্দু রাজাদের মধ্যে আজমীর ও দিল্লির অধিপতি পৃথ্বীরাজ চৌহান ও কনৌজ-রাজ জয়্চাঁদ ছিলেন সবচেয়ে শক্তিশালী ...